এই পোস্ট টি সিভিল রিলেটেড তবে বাস্তব কাজে ও কর্মক্ষেত্রে অনেক সময় এই বিষয়গুলি লাগে তাই শেয়ার করে রাখলাম আশা করি সকলের উপকার হবে ।
প্রশ্নঃ ইট কি?
উত্তরঃ ইট হচ্ছে একটি আয়তকার কঠিন ঘনবস্তু।যা কাঁচা অবস্থায় নমনীয় থাকে এবং পোড়ানোর পড়ে শক্ত আকার ধারন করে।
প্রশ্নঃ ইটের সাইজ কত?
উত্তরঃ ইটের সাইজ দৈঘ্য × প্রস্থ্য × উচ্চতা যথাক্রমে = ৯.৫"× ৪.৫" × ২.৭৫" বা 240mm × 112mm × 70mm
প্রশ্নঃ উৎকৃষ্ট মানের ইট প্রস্তুতিতে বিভিন্ন প্রকার উপাদান গুলো কি কি ?
উত্তরঃ উৎকৃষ্ট মানের ইট প্রস্তুতিতে বিভিন্ন প্রকার উপাদান গুলো হল ঃ
- সিলিকা (Sio2) - 55%
- অ্যালুমিনা (Alo2) - 30%
- আয়রন অক্সাইড (Feo2) - 8%
- ম্যাগনেশিয়া (Mgo) - 5%
- লাইম (Cao) - 1%
- জৈব পদার্থ - 1%
প্রশ্নঃ ইহা কত প্রকার ও কি কি?
উত্তরঃ ইট পাঁচ প্রকারঃ
- ১ম শ্রেনীর ইট
- ২য় শ্রেনীর ইট (পিকেট স্পেসাল)
- ৩য় শ্রেনীর ইট (পিকেট)
- ৪র্থ শ্রেনীর ইট (মিঠা)
- ৫ম শ্রেনীর ইট (ঝামা)
প্রশ্নঃ ভাল ইট কি ভাবে চিনবেন।
উত্তরঃ ভাল ইট চিনার উপায় গুলো হলঃ
- ১ম শ্রেনীর ইট (FIELD TEST)
- এই ইটের সাইজ দেখতে খুবই ভাল এবং গাড় লাল থাকে।
- সর্বত্র সমান ভাবে পোরানো থাকে।
- দুটো ইট পরস্পর আঘাত করলে পরিষ্কার টন টন শব্দ হবে।
- কোন চির বা ফাঁক থাকবে না।
- ধার গুলো বা কোন গুলো সমান থাকে।
- ৪(চার) ফুট উপর থেকে আরেকটি ইটের উপর ফেলে দিলে সহজে ভাঙ্গে না।
- পানি শোষণ ক্ষমতা ১৫% এর বেশী হবে না। (Lab Test)
- লোড নেওয়ার ক্ষমতা ১০৫ কেজি/সেমি ২ (Lab Test)
- ২য় শ্রেনীর ইট (পিকেট স্পেসাল)
- এই ইট ১ম শ্রেনীর ইটের মতোই রং এবং শক্ত
- সাইজ এবং সেপ কিছুটা অসমান ।
- ইটের তলা অমসৃণ থাকে।
- এই ইট কিছুটা কম পোরানো হয়ে থাকে।
- ইটের গাঁয়ে ফাটল থাকে।
- এর শব্দ টন টন করে না ঠন ঠন করে।
- পানি শোষণ ক্ষমতা ১৫% এর বেশী।
- ৩য় শ্রেনীর ইট (পিকেট)
- এই ধরনের ইট পর্যাপ্ত পোড়ানো থাকে না।
- গুনাগুন নির্ম মানের
- কিছুটা ঠন ঠন শব্দ হয়।
- এর পানি শোষণ ক্ষমতা ২৫% এর চেয়ে বেশী থাকে।
- ৪র্থ শ্রেনীর ইট (মিঠা)
- এই ধরনের ইট খুবই কম পোড়ানো থাকে।
- গুনাগুন একে বারে নিম্ম মানের।
- কিছুটা ঠন ঠন শব্দ হয়।
- সহজেই ভেঙ্গে যায়।
- এর পানি শোষণ ক্ষমতা ২৫% এর চেয়ে বেশী থাকে।
- ৫ম শ্রেনীর ইট (ঝামা)
- অতিরিক্ত চাপে পোড়ানো হয়।
- কালো ও ফাঁপা হয়ে থাকে।
- মনে হয় এর শরীরে ঘা হয়েছে এবং টিউমারের মত ফুলে উঠে।
- দেখতে বিশ্রী লাগে।
শিলা বা পাথরঃ উৎপত্তি ও গঠন অনুসারে শিলাসমূহকে তিনটি প্রধান শ্রেণীতে ভাগ করা যায়।
আগ্নেয় শিলা ( igneous rock) গলিত ম্যাগমা কিংবা লাভা ভূ-অভ্যন্তরেই কিংবা ভূ-পৃষ্ঠে এসে ঠাণ্ডা হয়ে জমাটবদ্ধ হয়ে যে শিলা গঠন করে তাকে আগ্নেয় শিলা বলে । যেমন- ব্যাসল্ট, গ্রানাইট ,সিয়েনাইট ইত্যাদি
আগ্নেয় শিলা দুই প্রকার- ১) বহিঃজ শিলা ( plutonic rock) , ২) অন্তঃজ শিলা (volcanic rock ) ।
পাললিক শিলা (Sedimentary rock ): আগ্নেয়,রূপান্তরিত, কিংবা পাললিক শিলা বিভিন্ন ভাবে ক্ষয়ীপ্রাপ্ত হয়ে নিম্নভূমিতে পলিরূপে সঞ্চিত ও জমাটবদ্ধ হয়ে যে শিলা তৈরী করে তাকে পাললিক শিলা বলে । যেমনঃ বেলে পাথর ( sandstone), শেল ( shale)
রূপান্তরিত শিলা ( Metamorphic rock) : আগ্নেয়, পাললিক শিলা অত্যধিক তাপ এবং চাপে পরিবর্তিত হয়ে যে নতুন শিলার গঠন করে তাকে রুপান্তরিতশিলা বলে। যেমনঃ মার্বেল
আগ্নেয় শিলাঃ আগ্নেয় নামটি লাতিন শব্দ "ইগ্নিয়াস" থেকে এসেছে যার অর্থ হচ্ছে আগুন। আগ্নেয় শিলা উৎপন্ন হয় লাভা শীতল ও শক্ত হওয়ার কারণে। এই লাভা উৎপন্ন হয় পৃথিবীর গহ্বর কিংবা ক্রাস্টের আংশিক গলিত বিদ্যমান পাথরের কারণে। সাধারণত তাপমাত্রা বৃদ্ধি, চাপ হ্রাস ও গাঠনিক পরিবর্তন, এই তিনটি কারণের একটি অথবা তিনটির কারণেই পাথর গলন শুরু হয়।
আগ্নেয় শিলা দুইটি প্রধান শ্রেণিতে বিভক্ত।
১. অনুপ্রবেশিত শিলাঃ এটি তখন উৎপন্ন হয় যখন লাভা শিলাটির ভেতরে অনুপ্রবেশ করে এবং এর ফলে পৃথিবী ক্রাস্টে লাভা (ম্যাগমা) শীতল ও কেলাসিত হয়। অনুপ্রবেশিত বা প্লুটোনিক শিলার একটি উদাহরণ হলো গ্রানাইট।
২. অগ্নুৎপাত বা বাহ্যিক শিলাঃ আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ফলে লাভা বা ফ্র্যাগমেন্টাল ইজেক্টা যখন পৃথিবীর মাটি স্পর্শ করে তখন সেখান থেকে শিলা উৎপন্ন হয়। এটি বাহ্যিক শিলা নামের পরিচিত যার উদাহরণ হলো পিউমিস ও ব্যাসাল্ট শিলা।
রাসায়নিক পদার্থের পরিমান ও লাভার শীতল হওয়ার হার একটি ক্রম তৈরি করে যা বোয়েনের বিক্রিয়া সিরিজ নামে পরিচিত। অধিকাংশ আগ্নেয় শিলার কেলাসিত হওয়ার ক্রম উক্ত সিরিজটিকে অনুসরণ করে।
পৃথিবীর ক্রাস্টের আয়তনের প্রায় ৬৫% আগ্নেয় শিলা দিয়ে তৈরি, যার ফলে সর্বোচ্চ প্রাচুর্যতাপূর্ণ শ্রেণি হিসেবে বিবেচিত। এদের মধ্যে ৬৬% ব্যাসাল্ট ও গ্যাব্রো, ১৬% গ্রানাইট, ১৭% গ্র্যানোডিউরাইট এবং ডিউরাইট। শুধু ০.৬% হচ্ছে সায়নাইট ও ০.৩% হলো আল্ট্রামাফিক। সামুদ্রিক ক্রাস্টের ৯৯%ই ব্যাসাল্ট যা মূলত মাফিক (ম্যাগ্নেসিয়াম ও আয়রন সমৃদ্ধ শিলা) সমৃদ্ধ আগ্নেয় শিলা। কন্টিনেটাল ক্রাস্টের বেশিরভাগ অঞ্চল জুড়ে থাকে গ্রানাইট ও গ্রানাইট জাতীয় শিলা বা গ্রানিটোইডস দ্বারা।
পাললিক শিলাঃ পাললিক শিলা পৃথিবী পৃষ্ঠে তৈরি হয় পাথর, খনিজ ও মৃত জীব না উদ্ভিদদেহের টুকরার সিমেন্টেশন ও জমাট প্রক্রিয়ার দরুন কিংবা পানিতে রাসায়নিক পদার্থ ও জৈব দ্রব্য পতিত এবং বৃদ্ধি হওয়ার ফলে যাকে সেডিমেন্টেশন বলা হয়। এই প্রক্রিয়ার ফলে পাথরের টুকরা তৈরি হয় কিংবা জৈব কণাগুলো একত্র হয়ে জমাট বাঁধে এবং এই প্রক্রিয়ার ফলে খনিজ দ্রব্য দ্রবণ থেকে বাষ্পীভূত হয়ে যায়। এরপরে কণাগুলো স্বাভাবিক তাপমাত্রা ও চাপে সিমেন্টেশন প্রক্রিয়া অতিক্রম করে।
পলি/পললসমূহ (সেডিমেন্ট) জমা হওয়ার পূর্বে, পলিসমূহ পাথরের ওয়েদারিং ও ভাঙ্গনের ফলে গঠিত হয় এবং পানি, বায়ু, বরফ, ও যথেষ্ট ঘনত্ববিশিষ্ট বরফ গ্ল্যাসিয়ার এর চলাচলের কারণে জমাট বাঁধার স্থানে গমন করে। আয়তনের দিক থেকে, ক্রাস্টের ৭.৯% তৈরি হয় পাললিক শিলা দ্বারা, ৮২% শতাংশ থাকে শ্লেটজাতীয় নরম শিলা এবং বাকি অংশ চুনাপাথর, বেলেপাথর ও এক প্রকার পাললিক শিলা আর্কোজ দ্বারা পূর্ণ থাকে। কিছু কিছু পাললিক শিলার ভেতরে ফসিল পাওয়া যায়। পাললিক শিলা গঠন হয় অভিকর্ষের প্রভাবে ও সাধারণত স্ট্রাটাম এর অনুভূমিক স্তরের কাছে জমাট বাঁধে। এদেরকে হয়ত এজন্যই কখনো কখনো স্ট্র্যাটিফাইড রক বলা হয়।
রূপান্তরিত শিলাঃ রূপান্তরিত শিলা অন্যান্য যে কোনো শিলা যেমনঃ আগ্নেয় শিলা, পাললিক শিলা হতে ভিন্ন তাপমাত্রা ও চাপের প্রভাবে তৈরি হয়। এই ভৌত অবস্থা শুরুতে যে পাথর তৈরি হয় তার থেকে আলাদা হয়। এই প্রক্রিয়াটিকে রূপান্তর বলা হয়,যার অর্থ হলো অবস্থার পরিবর্তন। এর ফলে গভীরভাবে শিলাটির বাহ্যিক ও রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে। প্রথম বা আসল যে শিলাটি থাকে তাকে প্রোটোলিথ বলা হয়, প্রোটোলিথ থেকেই রূপান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয় যা অবশেষে রূপান্তরিত শিলায় পরিণত হয়। এই প্রোটোলিথ পুনরায় কেলাসিত হওয়ার ফলে অন্য ধরণের খনিজে পরিবর্তন হয় কিংবা একই খনিজের অন্য অবস্থা লাভ করে। এই প্রক্রিয়ার জন্য যে তাপমাত্রা ও চাপ দরকার যা পৃথিবীর পৃষ্ঠতলের চেয়েও বেশিঃ তাপমাত্রা হতে হয় ১৫০ থেকে ২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও চাপ হতে হয় ১৫০০ বার।আয়তনের হিসাবে, ক্রাস্টের ২৭.৪% গঠন করে রূপান্তরিত শিলা।
রূপান্তরিত শিলার প্রধান তিনটি শ্রেণি তাদের গঠন প্রক্রিয়ার উপর নির্ভরশীল। লাভার কাছে থাকা শিলা যখন লাভার উচ্চ তাপমাত্রার সংস্পর্শে আসে তখন "সংস্পর্শ রূপান্তর" এর প্রক্রিয়া শুরু হয়- যা একটি তাপমাত্রা প্রধান রূপান্তর প্রক্রিয়া। চাপীয় রূপান্তর প্রক্রিয়া তখন শুরু হয় পলিসমূহ মাটির গভীর নিচে চাপা পড়ে থাকে; চাপ বেশি প্রভাব ফেলে এবং তাপমাত্রা খুবই কম ভূমিকা রাখে। একে গোর রূপান্তর (ইংরেজিঃ Burial metamorphism) বলা হয়। জেড এর মত শিলায় এ ধরণের রূপান্তর দেখা যায়। তবে যে ক্ষেত্রে তাপ এবং চাপ উভয়ই ভূমিকা রাখে সে ক্ষেত্রে একে রিজিওনাল রূপান্তর বলে। পাহাড়-পর্বত বিশিষ্ট অঞ্চলে সাধারণত এরূপ দেখা যায়।
গঠনের উপর ভিত্তি করে রূপান্তরিত শিলাকে দুইটি সাধারণ শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। যাদের বাহ্যিক গঠন স্তরবিশিষ্ট তাদেরকে ফলিয়েটেড (ভাঁজযুক্ত) রূপান্তরিত শিলা ও এছাড়া বাকিদেরকে নন-ফলিয়েটেড রূপান্তরিত শিলা বলা হয়। তখন শিলার নামকরণ হয় শিলাতে খনিজ পদার্থের উপস্থিতি বিবেচনা করে। শিস্ট এক ধরণের ভাঁজযুক্ত রূপান্তরিত শিলা যারা মিকা এর মতো ফলকবিশিষ্ট খনিজ দ্বারা তৈরি। নেইজ জাতীয় শিলার দেহে বিভিন্ন আলোর দৃশ্যমান ব্যান্ড বিদ্যমান, শিলাটির একটি সাধারণ উদাহরণ হচ্ছে গ্রানাইট নেইজ। এছাড়াও অন্যান্য ধরণের ভাঁজযুক্ত রূপান্তরিত শিলার মধ্যে রয়েছে স্লেট, ফাইলাইটস ও মায়লোনাইট। কিছু ভাঁজহীন রূপান্তরিত শিলার উদাহরণ হলো মার্বেল, সাবানপাথর বা সাজিমাটি ও সার্পেনটাইন]]। এই শ্রেণির একটি শিলা হলো কোয়ার্টজাইট যা বেলেপাথর ও হর্নফেলের একটি রূপান্তরিত রূপ।
১. পাথর কি?
উওরঃ পাথর হচ্ছে খুবই শক্ত,মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী প্রকৌশল সামগ্রী। শিলার বাণিজ্যিক উৎপাদনই পাথর
২.কোন সামগ্রীকে নির্মাণ সামগ্রীর রাজা বলা হয়?
উওরঃ পাথর
৩.পাথর কে কোথায় হতে সংগ্রহ করতে হয়?
উওরঃ শিলা থেকে
৪.শিলা বা খনি থেকে সংগ্রহীত পাথর কিসের সাহায্য ভাঙ্গা হয়?
উওরঃ Jaw Crusher Machine
৫. পাথরকে কেন নির্মাণ সামগ্রীর রাজা বলা হয় কেন?
উওরঃনির্মাণ কাজে ব্যবহিত সামগ্রীর মধ্যে পাথরের ন্যায় শক্তিশালী ও স্হায়িত্বশীল সামগ্রী আর একটি নাই বলে।
৬.রাসায়নিক উপাদানের উপর ভিওি করে পাথরকে কয় শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে?
উওরঃ ৩ শ্রেণি( বালিজাত,কাদাজাত,চুনজাত)
৭.চুনজাত পাথরের মূল উপাদান কি?
উওরঃ CaCO3
৮.অলংকার ও কারুকার্যে কোন ধরণের পাথর ব্যবহার করা হয়?
উওরঃ মার্বেল ও গ্রানাইট পাথর
৯. পাথর উওোলনের জন্য কয়টি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়?
উওরঃ ৪ পদ্ধতি(খনন,তাপ,ওয়েজিং,বিস্ফোরণ)
১০.গ্রানাইট পথের ক্রাশিং স্ট্রেংথ কত?
উওরঃ ১১০০০ টনি/ বর্গ.মি
১১. পাথরের ক্ষয়রোধিতা পরীক্ষা করার জন্য কি কোন যন্ত্র ব্যবহার করা হয়?
উওরঃ লস অ্যাঙ্গেল অ্যাব্রেশন
১২.বেলেপাথর ও মার্বেল পাথরের কত % পানি শোষণ করে?
উওরঃ ২০% ও ১%
১৩.লস অ্যাঙ্গেল অ্যাব্রেশন মেশিং কয়টি কাস্ট আয়রন বল আছে?
উওরঃ ১২ টি
১৪.টেরাজো ফ্লোরিং কোন ধরণের পাথরের টুকরা ব্যবহার করা হয়?
উওরঃ মার্বেল পাথর
আপনাদের জন্য কুইজ
১. প্লাস্টারকৃত দেওয়ালের সারফেস ও ফ্লোরের সারফেসকে সমান করার জন্য কোন পাথর ব্যবহার করা হয়?
২.পাথরের কয়েকটি ফিল্ড ও ল্যাব টেস্টগুলোর নাম কি কি?
৩.পাথরের ৩/৪" ডাউন গ্রেড ও ওয়েল গ্রেড বলতে কি বুঝায়?
৪.পাইলিং এর জন্য কোন পাথর ব্যবহার করা উওম?
৫. রেল সড়কের ব্যালাস্ট হিসাবে কোন পাথর ব্যবহার করা হয়?
৫. ধরুন আপনার নিমার্ণ সাইটে ১ ট্রাক পাথর আসছে তাহলে আপনি কি ভাবে বের করবেন ট্রাকে কত Cft/m3 পাথর আছে?
বালুঃ নির্মাণ কাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে বালি, যা সিলিকা থেকে তৈরি হয়। বেশির ভাগ সময় সমুদ্র বা নদীর উপক’লে, সমুদ্রের তলায়, নদীয় তলায় বালি পাওয়া যায়।
বালিকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা যায়
- পিট বালি
- নদীর বালি
- সমুদ্রের বালি
পিট বালি
মাটিতে গর্ত করে এই প্রকার বালি পাওয়া যায়। যা মসৃণ, কোণাকার এবং ক্ষতিকারক লবণ থেকে মুক্ত থাকে। এই প্রকার বালি সাধারণত মর্টারের কাজে ব্যবহৃত হয়।
নদীর বালি
এই প্রকার বালি নদীর উপকূলে পাওয়া যায়। যা চিকন ও গোলাকার হয়ে থাকে। এটা পিট বালি অপেক্ষা সূক্ষ্ম তাই প্লাষ্টারিং এর কাজ এই বালি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
সমুদ্র বালি
এই প্রকার বালি সমুদ্রের উপকূলে পাওয়া যায়। যা নদীর বালির মত চিকন ও গোলাকার হয়ে থাকে। তবে এই প্রকার বালিতে ক্ষতিকারক লবণ থাকে।
মোটা দানার বালি
এই প্রকার বালির দানা তুলনামূলক একটু বড় আকৃতির হয় তাই নির্মাণ কাজে ঢালাইয়ের সময় খুবই উপযোগী। কংক্রিট তৈরিতে সিলেট বালি সমান থাকে।
বালি ব্যবহারে সতর্কীকরণ
বালির সঙ্গে কোন প্রকার ময়লা, কাদামাটি থাকতে পারবে না। লবণাক্ত বালি ব্যবহার করা যাবে না এবং নির্মাণ কাজের পূর্বে বালি ভালভাবে ধুয়ে নিতে হবে যেন বালির সালে সংযুক্ত কাদা, লবণ, ময়লা, আগাছা, ডালপালা, নুড়ি বের হয়ে যায়।
বালি পরীক্ষা
বালির গুণাবলী পরীক্ষার জন্য নিম্নলিখিতপরীক্ষাগুলো করা প্রয়োজন
- কিছু বালি দুআঙ্গুলের ফাঁকে নিয়ে ঘষা দিতে হবে, যদি আঙ্গুলের সাথে ধুলা জাতীয় দ্রব্য লেগে থাকে, তবে বুঝতে হবে বালির সাথে ধুলা রয়েছে।
- মুখ নিয়েও বালি পরীক্ষা করা যায়। একটু বালি মুখে নিয়ে বোঝা যাবে এর মাঝে লবণ জাতীয় পদার্থ আছে কিনা।
- একটি পরিষ্কার কাঁচের গ্লাসে পানি নিয়ে তার মাঝে কিছু বালি ছেড়ে দিতে হবে এবং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। যদি বালিতে ধুলা থাকে তবে তার স্তর বালির উপরে হবে।
- কিছু পরিমাণ কষ্কিক সোডা ৩% একটি বোতলে নিয়ে তার সাথে অল্প কিছু বালি যোগ করে মুখ বন্ধ করে দিতে হবে এবং কিছুক্ষণ ঝাকাতে হবে এবং ২৪ ঘন্টা ঐ অবস্থায় রেখে দিতে হবে। যদি বোতলে রক্ষিত দ্রব্যের রং পরিবর্তন হয়ে বাদামী হয়, তবে বুঝতে হবে বালিতে রাসায়নিক পদার্থ বিদ্যমান।
- বালু তীক্ষ্ম নজর দিয়ে দেখলে যদি এতে পাথর, কয়লার টুকরা বা অন্য কোন নোংরা থাকে তাহলে ব্যবহারে না নেওয়াই ভালো। আরেকটা উপায় হল, একটা কাঁচের গ্লাসে আধা গ্লাস বালু নিয়ে বাকিটা পানি দিয়ে ভরে দিন এবং একটা চামচ দিয়ে ভাল করে নেড়ে নিন। বালুতে নোংরা থাকলে পানির রং ময়লা বা ঘোলা হয়ে যাবে। বালুটা নীচে বসে যাওয়ার পর দেখুন যদি বালুর ওপর মাটির স্তর বেশী মোটা হয় তাহলে এ বালু ব্যবহার করার দরকার নেই। যদি ভুল ক্রমে এমন বালু এসে যায় এবং পরীক্ষার পরে ব্যবহারযোগ্য মনে না হয় তাহলে ও চিন্তার কোন কারণ নেই, এমন বালুকে পরিস্কার করারও উপায় আছে।
- বালুকে ধুয়ে পরিস্কার করা যায়: বালুর গাদায় পানি ঢেলে দিন তাতে করে ময়লা মাটি নীচে বসে যাবে। এবার কোদাল দিয়ে বালুটাকে ভাল করে মিশিয়ে নিন তারপর চালনি দিয়ে ছেঁকে নিন। বালু পরিস্কার হয়ে যাবে।
- ভেজাল বালু ব্যবহারে অসুবিদা হতে পারে: শ্রমিকেরা মশলাতে বেশী পানি মেশানো পছন্দ করে। যদি প্রথম থেকেই বালুতে পানি বেশী থাকে তাহলে, সেই বালু ব্যবহারে নির্মাণ কমজোর হতে পারে। তাই যদি দেখেন বালু ভেজা তবে ঠিকাদারকে বলবেন ইঞ্জিনিয়ার এর পরামর্শ মতে পানি মেশাতে।
প্রচলিত ভাবে বালি তিন প্রকার
- ভিটি বালি: ভিটি বালু-র এফ এম ০.৫ থেকে ০.৭। ভরাট কাজে ব্যবহৃত হয়।
- লোকাল বালি: এর এফ এম ১.২ থেকে ১.৮। গাঁথুনি, প্লাস্টারিং এর কাজে ব্যবহৃত হয়।
- মোটা বালি: মোটা বালু সিলেটে অধিক পাওয়া যায়। এর এফ এম ২.৩ থেকে ২.৮। ঢালাই এর কাজে ব্যবহৃত হয়।
গোলাকার বালু অপেক্ষা কোণাকার বালু ভাল । ঢালাইয়ের কাজে মোটা বালুই ভাল। বালুকে বলা হয় ফাইন এগ্রিগেট। বালু পরিস্কার ও কাদা মুক্ত হওয়া উচিত।
সিমেন্ট ঃ সিমেন্ট হল সেই সকল গুঁড়া জাতীয় পদার্থের সাধারণ নাম, যাদেরকে পানি বা অন্য কোন তরলের সাথে মিশ্রিত করলে কাদার মত নমনীয় পদার্থ পাওয়া যায় এবং তা কিছু সময়ের মধ্যে জমে গিয়ে বিভিন্ন দৃঢ়তার শক্ত পদার্থ গঠন করে।
সিমেন্ট বাড়ী-ঘর, রাস্তা, সেতু ইত্যাদি যাবতীয় নির্মাণ কাজের প্রধান উপাদান।
সিমেন্ট কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। যেমন:
- পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট
- পজুলানা সিমেন্ট
- অধিক অ্যালুমিনা সমৃদ্ধ সিমেন্ট
- ক্ষয়রোধী সিমেন্ট
- পানিরোধী সিমেন্ট
- রঙিন সিমেন্ট ইত্যাদি
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট।
সিমেন্টের মূল উপাদানগুলি হল - চুনাপাথর, সিলিকা, (বালি), আয়রন অক্সাইড ইত্যাদি। এসব উপাদানকে ২ ভাগে ভাগ করা যায়:
- ক. চুন জাতীয় পদার্থ। (চক্, চুনাপাথর ইত্যাদি)
- খ. মাটি জাতীয় পদার্থ। (সিলিকা, আয়রন অক্সাইড, এ্যালুমিনা ইত্যাদি)
ক.সিমেন্ট কি
উত্তরঃ - সিমেন্ট হল সেই সকল গুঁড়া জাতীয় পদার্থের সাধারণ নাম,যাদেরকে পানি বা অন্য কোন তরলের
সাথে মিশ্রিত করলে কাদার মত নমনীয় পদার্থ পাওয়া যায় এবং তা কিছু সময়ের মধ্যে জমে গিয়ে বিভিন্ন দৃঢ়তার শক্ত পদার্থ গঠন করে। প্রায় সকল ধরনের প্রকৌশল কাজেই সিমেন্টের ব্যবহার হয়ে থাকে।এর সাহায্যে কাজ করা সহজ এবং কাজের স্হায়িত্বশীলতাও অধিক। কাজের ধরন ও মান অনুযায়ী সিমেন্ট পাওয়া যায়।
খ. প্রকারভেদ :-
উত্তরঃ - সিমেন্ট প্রধানত দুই প্রকার যথা :
১।প্রাকৃতিক সিমেন্ট
২।কৃত্রিম সিমেন্ট
প্রাকৃতিক সিমেন্ট :- ২৫% থেকে ৪০% কর্দম এবং বাদ বাকি কার্বনেট অব লাইমযুক্ত প্রাকৃতিক চুনাপাথর পুড়িয়ে এবং মিহি পাউডারে চূর্ণ করে প্রাকৃতিক সিমেন্ট পাওয়া যায়।
কৃত্রিম সিমেন্ট :-চুনা পাথরের সাথে সঠিক অনুপাতে মাটি মিশিয়ে গুঁড়া করা হয় এবং মিশ্রণকে চুল্লিতে উত্তপ্ত করলে ক্লিঙ্কারে পরিণত হয়।এ ক্লিঙ্কার মিহি করে গুঁড়া করলে কৃত্রিম সিমেন্ট পাওয়া যায়।বিভিন্ন
ধরণের কৃত্রিম সিমেন্টের মধ্যে পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট বেশি ব্যবহৃত হয়।
গ. মাঠ পর্যায়ে সিমেন্টের পরীক্ষা পদ্ধতি গুলো :-
১।সিমেন্টের বস্তায় হাত দিলে ঠান্ডা অনুভূত হলে সিমেন্ট ভালো।
২।পানিতে মুঠোবদ্ধ সিমেন্ট ফেললে ডুবে গেলে ভালো সিমেন্ট।
৩।দু'আঙ্গুলের মাঝে নিয়ে ঘষলে, মিহি পাউডার মনে হলে সিমেন্ট ভালো।
৪।সিমেন্ট মুঠোতে জড়ো করলে, জড়ো হয়ে থাকলে সিমেন্ট ভালো।
ঘ.ল্যাবরেটরিতে সিমেন্টের যে পরীক্ষা করা হয়ে থাকে:-
১।Setting time test
২।Soundness test
৩।Fineness test
৪।Tensile strength test
৫।Compressive strength test
৬।Chemical composition test
ঙ. পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের অম্ল ও ক্ষারকীয় উপাদানের তালিকা হলো:-
১।ক্যালসিয়াম অক্সাইড - ৬৩%
২।সিলিকা-২২%
৩।অ্যালুমিনা - ৭%
৪।আয়ন অক্সাইড - ৩%
৫।ম্যাগনেশিয়াম অক্সাইড - ৫।ম্যাগনেশিয়াম অক্সাইড - ২%
৬।সালফার ট্রাই - অক্সাইড - ২%
৭।ক্ষারকীয় পদার্থ - ১%
চ. OPC এবং PCC সিমেন্টের পার্থক্য আলোচনা করা হলো।
১। OPC - Ordinary Portland Cement.
২।OPC সিমেন্টে ক্লিংকারের পরিমাণ ৯৫-১০০ শতাংশ থাকে।
৩।এতে জিপসাম ০-৫ শতাংশ।
৪।OPC সিমেন্টে ফ্লাই এ্যাশ, লাইম স্টোন ইত্যাদি থাকে না।
৫।OPC সিমেন্ট ঢালাই কাজে বহুল পরিমাণে ব্যবহার হয়।
৬।PCC এর চাইতে OPC সিমেন্টের কমপ্রেসিভ স্টেন্থ বেশি আসে।
৭।এই সিমেন্টে ২৮ দিনে পূর্ণ শক্তি অর্জন করতে পারে।
৮।এই সিমেন্টের সেটিং টাইম দ্রুত তাই নির্দিষ্ট সময় পর শাটারিং খুলতে কোন সমস্যা হয়না।
১।PCC - Portland Composite Cement
২।PCC সিমেন্টে ক্লিংকারের পরিমাণ ৬৭-৭৯ শতাংশ।
৩। জিপসামের পরিমাণ ২-৭ শতাংশ।
৪।PCC সিমেন্টে ফ্লাই এ্যাশ,লাইম স্টোন ২১-৩৫ শতাংশ।
৫।গাঁথুনিও প্লাস্টারের কাজে ব্যাপকভাবে এই সিমেন্ট ব্যবহার হচ্ছে।
৬।এই সিমেন্ট ঢালাই কাজেও ব্যবহার করা হয়,কিন্তু একই অনুপাতে OPC এর চাইতে PCC এর কম্প্রেসিভ স্ট্রেন্থ কম আসে।
৭।২৮ দিনে PCC পূর্ণ শক্তি অর্জন করতে পারে না, এতে ২৮ দিনের বেশি সময় লাগে।
ছ. বিভিন্ন প্রকার পোর্টল্যান্ড সিমেন্টের ব্যবহার নিম্নে আলোচনা করা হলো
১।High early strength portland cement - দ্রুত জমাট বাঁধার জন্য।
২। Clay cement - সামুদ্রিক নির্মাণ কাজে।
৩।Colour cement - বিভিন্ন মোজাইক কাজে তথা বিভিন্ন সৌন্দর্যবর্ধক কাজে।
৪।Aluminous cement - ২৪ ঘন্টায় শতকরা ৭৫% শক্তি অর্জন করে।
৫।Pazzolanic silica cement - অগ্নি প্রতিরোধক পৃষ্ঠ নির্মাণে।
৬।White cement - মোজাইক, সুইমিং পুল, গোসলখানা ইত্যাদিতে অলংকার মূলক সৌন্দর্যবর্ধক কাজে।
জ. বাংলাদেশে উৎপাদিত কয়েকটি সিমেন্টের নাম হলো:-
১।স্ক্যান সিমেন্ট
২।হোলসিম সিমেন্ট
৩।সেভেন রিংস সিমেন্ট
৪।শাহ সিমেন্ট
৫।বসুন্ধরা সিমেন্ট
৬।প্রিমিয়ার সিমেন্ট
৭। আনোয়ার সিমেন্ট
৮। আকিজ সিমেন্ট
৯।মেট্রোসেম সিমেন্ট
১০।ক্রাউন সিমেন্ট
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১।শুষ্ক পদ্ধতিতে সিমেন্ট তৈরির জন্য উপাদানসমূহের মিশ্রণকে 'র - মিক্স' বলে।
২।Ordinary portland cement এর Initial setting time ৩০ মিনিট।
৩। Ordinary portland cement এর final setting time ১০ ঘন্টা।
৪। প্রতি ব্যাগ হোয়াইট সিমেন্টের ওজন ৪০কেজি।
৫।সিমেন্টের এক বস্তার উপর এক বস্তা এরূপে ১০ বস্তার অধিক রাখা যাবে না।
৬।উৎপাদনের তিন মাস পরে সিমেন্ট কাজে লাগালে জমাটবদ্ধতার সময় ও শক্ততা ২% হ্রাস পায়।
৭।এক ঘনমিটার সিমেন্টের ওজন ১৪৪০ কেজি/ঘনমিটার।
৮।এক ব্যাগ সিমেন্টের ওজন ৫০ কেজি।
৯।এক ব্যাগ সিমেন্ট ১.২২ cft।
১০।এক ঘনমিটার সিমেন্ট ৩০ ব্যাগ।
১১. সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় পোর্টল্যান্ড সিমেন্ট।
১২.সিমেন্ট তৈরির মূল উপাদান হলো দুইটি - চুনজাত ও কাদাজাত।
১৩.সিমেন্ট শব্দটির উৎপত্তি রোমানস থেকে।
১৪. সিমেন্টের জমাটবদ্ধতা ত্বরান্বিত করে অ্যালুমিনা।
১৫.সিমেন্ট ২ টি পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়।
১৬.সিমেন্টের জমাটবদ্ধতা সময় নিরাপণে ভাইকেট যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।
১৭. ড্যাম নিমার্ণে লো- হিট সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়।
১৮.পদ্মা সেতু নির্মাণে বসুন্ধরা সিমেন্ট ব্যবহার হয়।
১৯.বরফ আচ্ছাদিত এলাকায় Air entraining cement ব্যবহার হয়।
২০।শক্তিশালী নির্মাণ কাজে Ordinary পরতলান
উইকিপিডিয়া ও ইন্টারনেট হতে তথ্য, ছবি সংগৃহীত
No comments:
Post a Comment