পাওয়ার সিস্টেম চাকুরী পরীক্ষায় খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করা হয়, সেটা হলো ট্রান্সফরমার এর রেটিং কেন KVA তে প্রকাশ করা হয়? আজ একটি গদ বাধা বইয়ের থিওরি বাদে একটু জানার চেষ্টা করি,
আমরা, যে একটিভ পাওয়ার এর সূত্র জানি , সেটা হলো , P=VxIxCos(theta) এখানে, Cos(theta) কে পাওয়ার ফ্যাক্টর বলে । এই পাওয়ার ফ্যাক্টর মূলত লোডের উপর নির্ভর করে । লোড ইন্ডাকটিভ না ক্যাপাসিটিভ না রেজিস্টিভ । এই বিষয়ক আমার ইউটিউব চ্যানেলে একটি বিস্তারিত ভিডিও আছে দেখে নিতে পারেন ।
আসলে এই কারেন্ট বা ভোল্টেজ কি দিবে এটিও নির্ধারিত হয় লোডের উপর ।
একটু ব্যাখ্যা করি, লোড যত বাড়বে কারেন্ট তত বেশী নিবে আবার বেশী কারেন্ট দিলে ভোল্টেজ ড্রপ ও বাড়বে ফলে ট্রান্সফরমার ও সাথে সাথে লোডে ভোল্টেজ কম পাবে ।
এখন তাহলে বুঝতেই পারছেন, পাওয়ার ফ্যাক্টর এর কারনে লোডের ভোল্টেজ/কারেন্ট কম বা বেশী হতে পারে কারন আপনারা ভিডিওটি দেখে নিয়েছেন অথবা কেন হয় সেটা জানেন ।
এখন আসি, তাহলে একটি ট্রান্সফরমার যখন তৈরি করা হয় তাহলে মূলত হিসাব করা হয় এটি দিয়ে কত লোড চালানো যাবে বা এটি কত ভোল্টেজ সিস্টেম এর জন্য তৈরি করা হয় ।
ধরেন, একটি ১১০০০/৪৪০ ভোল্ট, ২০০ কেভিএ ট্রান্সফরমার তৈরি করা হবে । তাহলে প্রথমে অনেকগুলো ডিজাইন মাথায় আনতে হবে, কোর সাইজ কেমন হবে, কত আর এম এর কয়েল প্যাচাতে হবে, ইনসুলেশন কেমন হবে, কুলিং কেমন হবে, রেডিয়েটর কেমন হবে, ভেক্টর গ্রুপ কি হবে, পারসেন্টেজ ইম্পিডেন্স কেমন হবে, বুশিং কেমন হবে ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক বিষয়।
আজ এত বিষয় নিয়ে আলোচনা করব না। এইগুলা পরে একদিন লিখব ।
এখন ধরেন, প্রাইমারি তে ১১০০০ ভোল্ট তাহলে এটি তে সেই মানের ইনসুলেশন বসাতে হবে এই জন্য ভোল্টেজ জানা প্রয়োজন, আবার সেকেন্ডারির জন্যও একই ভাবে ৪৪০ ভোল্ট দ্বার ইনসুলেশন কত হবে সেটা জানা যাবে।
এখন তাহলে, কয়েল প্যাচাতে কারেন্ট কত হবে জানা প্রয়োজন, এই কারনে, কত ক্যাপাসিটির ট্রান্সফরমার বানাবো সেটা জানতে হবে, ধরেই নিচ্ছি, ২০০ কেভিএ । তাহলে আমাদের রেটেড কারেন্ট হবে,
I=(200x1000)/(1.732x11000)=10.497 এম্পিয়ার প্রাইমারি সাইড এর রেটেড কারেন্ট
I=(200x1000)/(1.732x440)=২৬২.৪৩ এম্পিয়ার সেকেন্ডারি সাইড এর রেটেড কারেন্ট
এই কারেন্ট দ্বারা আমরা বুঝতে পারব কি মানের কপার তার ব্যবহার করা যাবে, বা কত আর এম এর তার ব্যবহার করতে হবে ।
সাথে সাথে আমরা এটাও বুঝলাম , যত পাওয়ার ফ্যাক্টর এর লোড ই দি না কেন এই ট্রান্সফরমার দিয়ে ২৬২ অ্যাম্পিয়ার এর উপর লোড দেওয়া যাবে না এবং তখন ভোল্টেজ ৪৪০ ভোল্ট এর আশে পাশে থাকবে ।
এছাড়া, এই ভোল্টেজ দ্বারা, বোঝা যাবে এটির কোর লোস কত হবে এবং কারেন্ট দ্বারা বোঝা যাবে লোডেড অবস্থায় কপার লস কত হবে, তাহলে দুইটি বাদ দিয়ে লোডেড অবস্থায় সর্বচ্চো কত কিলোওয়াট আউটপুট পাওয়া সম্ভব সেটি লোডের অবস্থার পাওয়ার ফ্যাক্টর দিয়ে গুন করে ব্যবহার করা যাবে।
এইসব কারন এই মূলত ট্রান্সফরমার এর রেটিং KVA তে প্রকাশ করা হয়, কিলোওয়াট এ নয় । অর্থাৎ KVA তে প্রকাশ করা হলে, নির্মানকারী গণ সঠিকভাবে ডিজিইন করতে পারবে ও ব্যবহারকারীও বুঝতে পারবে এটি কোন লোড এ কিভাবে চালাতে হবে ।
আশা করি বুঝতে পারছেন, কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
No comments:
Post a Comment