০১) ট্রান্সফরমার কি বা কাকে বলে?
ট্রান্সফরমার একটি স্থির বৈদ্যুতিক যন্ত্র যা বিদ্যুৎ শক্তিকে একটি বৈদ্যুতিক বর্তনি (সার্কিট) থেকে অপর একটি বৈদ্যুতিক বর্তনিতে ফ্রিকুয়েন্সিকে কোন প্রকার পরিবর্তন না করে স্থানান্তর করে।
০২) কার্যপ্রণালীর ওপর ভিত্তি করে ট্রান্সফরমার কত প্রকার ও কি কি?
কার্যপ্রনালীর উপর ভিত্তি করে ট্রান্সফরমার দুই প্রকার যথাঃ
a) স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার।
b) স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার।
০৩) ট্রান্সফরমার কোথায় ব্যবহার করা হয়?
ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন লাইনে। রেডিও, টেলিভিশন, টেপ-রেকর্ডার, ভিসিয়ার ইত্যাদি জায়গায়।
বৈদ্যুতিক কমিউনিকেশন সার্কিটে, টেলিফোন ও কন্ট্রোল সার্কিটে।
০৪) ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে ট্রান্সফরমার কত প্রকার ও কি কি?
ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে ট্রান্সফরমার প্রকারভেদ হলো
a) পাওয়ার ট্রান্সফরমার
b) ডিস্ট্রিবিউশন ট্রান্সফরমার
c) অটো ট্রান্সফরমার
d) ইন্সট্রুমেন্ট ট্রান্সফরমার
ইন্সট্রুমেন্ট ট্রান্সফরমার আবার দুই প্রকার
ক) কারেন্ট ট্রান্সফরমার
খ) পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার
০৫) স্থাপন এর উপর ভিত্তি করে ট্রান্সফরমার কত প্রকার ও কি কি?
স্থাপন এর উপর ভিত্তি করে ট্রান্সফরমারকে নিচের অংশে ভাগ করা যায়
a) ইনডোর টাইপ ট্রান্সফরমার
b) আউটডোর টাইপ ট্রান্সফরমার
c) আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রান্সফরমার
d) পোল মাউন্টেড ট্রান্সফরমার
০৬) ফেজের সংখ্যা অনুসারে ট্রান্সফরমার কত প্রকার ও কি কি?
ফেজের সংখ্যা অনুসারে ট্রান্সফরমার কে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
a) সিঙ্গেল ফেজ ট্রান্সফরমার
b) পলি ফেজ ট্রান্সফরমার
০৭) ফ্রিকোয়েন্সি অনুসারে ট্রান্সফরমার কত প্রকার ও কি কি?
ফ্রিকোয়েন্সি অনুসারে ট্রান্সফরমার দুই প্রকার।
a) রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সফরমার
b) অডিও ফ্রিকোয়েন্সি ট্রান্সফরমার
০৮) ট্রান্সফরমার স্টেপ আপ অথবা স্টেপ ডাউন বুঝার উপায় কি?
ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি সাইডের তুলনায় সেকেন্ডারি সাইডে যদি প্যাচ সংখ্যা বেশি থাকে তাহলে সেই ট্রান্সফরমার হলো স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার।
ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি সাইডের তুলনায় সেকেন্ডারি সাইডে যদি প্যাচ সংখ্যা কম থাকে তাহলে সেই ট্রান্সফরমার হলো স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার।
ট্রান্সফরমারের ইফিসিয়েন্সি কি?
ট্রান্সফরমার কর্মদক্ষতা বলতে বুঝায়, ব্যবহৃত আউটপুট এবং ইনপুট পাওয়ার অনুপাত। পৃথিবীতে এমন কোন মেশিন আবিষ্কার হয় নি যার ইফিসিয়েন্সি ১০০ ভাগ।
কিন্তু একমাত্র ট্রান্সফরমার যার ইফিসিয়েন্সি ইনপুটের ৯০%ভাগ থেকে ৯৯% পাওয়া যায়। সুতারাং এতেই বুঝা যায় যে ট্রন্সফরমারের ইফিসিয়েন্সি খুবই ভালো এবং পাওয়ার লস খুব কম।
০৯) লিকেজ ফ্লাক্স কি?
প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি কয়েলে যে ফ্লাক্স উৎপন্ন হয় তাকেই লিকেজ ফ্লাক্স বলা হয়ে থাকে। প্রাইমারি ফ্লাক্সের তুলনায় সেকেন্ডারিতে যদি ফ্লাক্স বেশি হয় সেক্ষেত্রে আউটপুটে স্বাভাবিকের চেয়ে কম ভোল্টেজ উৎপন্ন হয়।
১০) ট্রান্সফরমারের কোর কি দিয়ে তৈরি?
ট্রান্সফরমারের কোর সাধারণত সিলিকন স্টিল নামক এক ধরনের স্টিল দিয়ে তৈরি। ট্রন্সফরমারের কোরগুলো সাধারণত নরমাল স্টিনলেস স্টিল দিয়ে হয় না।
১১) ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি উয়াইন্ডিং কাকে বলে?
প্রাইমারি উয়াইন্ডিংঃ
ট্রান্সফরমারের যে সাইডে সাপ্লাই বা সোর্স যুক্ত করা হয় তাকে প্রাইমারি উয়াইন্ডিং বলা হয়।
সেকেন্ডারি উয়াইন্ডিংঃ
ট্রান্সফরমারের যে সাইডে আউটপুট বা লোড সংযুক্ত করা হয় তাকে সেকেন্ডারি উয়াইন্ডিং বলা হয়।
১২) ট্রান্সফরমারে সংযোগ ছাড়া এক কয়েল থেকে অন্য কয়েলে কিভাবে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়?
মিউচুয়াল ইন্ডাকশন এর মাধ্যমে ট্রান্সফরমার এক কয়েল থেকে অন্য কয়েলে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়ে থাকে। যখন প্রাইমারি কয়েলে সাপ্লাই দেওয়া হয় তখন এর চারপাশে একটি ম্যাগনেটিক ফিল্ড বা তড়িৎ চুম্বকীয় আবেশের সৃষ্টি হয়ে থাকে।
তখন এই ফিল্ড থেকেই ফ্লাক্স সংগ্রহ করে সেকেন্ডারি কয়েল এবং এদের মধ্যে মিউচুয়াল ইন্ডাকশনের তৈরি হয় যার ফলে সেকেন্ডারিতে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়ে থাকে। এই বিদ্যুৎ প্রবাহ মান নির্ভর করে প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি কয়েলের প্যাচ সংখ্যার উপর।
১৩) ট্রান্সফরমারের ট্রান্সফরমেশন রেশিও কাকে বলে?
ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি ও সেকেন্ডারির ভোল্টেজ, কারেন্ট ও প্যাচ সংখ্যার মধ্যে যে সম্পর্ক থাকে তাকে ট্রান্সফরমেশন রেশিও বলে।
Vp/Vs=Np/Ns=Is/Ip
১৪) ট্রান্সফরমারের রেটিং কেন কেবিএ (kVA) তে লেখা হয়ে থাকে?
আমরা জানি ট্রান্সফরমারের মোট লস=কোর লস+কপার লস। কোর লস নির্ভর করে ভোল্টেজের উপর । কপার লস নির্ভর করে কারেন্টের উপর। তাহলে মোট লস নির্ভর করে কারেন্ট এবং ভোল্টেজের উপর কিন্তু উহাদের মধ্যবর্তী ফেজ এঙ্গেলের উপরে নয়।
তাহলে বলা যায় যে পাওয়ার ফ্যাক্টর পরিবর্তনের সাথে মোট লসের কোন সম্পর্ক নেই। তাই ট্রান্সফরমারের রেটিং কেবিএ (kVA) তে লেখা হয়ে থাকে।
১৫) ট্রান্সফরমারের কি কি লস হয়?
a) কোর লস
b) কপার লস
c) কোর লস
d) এডি কারেন্ট লস
e) হিস্টেরেসিস লস
f) কপার লস
প্রাইমারি উয়াইন্ডিং এ কপার লস।
সেকেন্ডারি উয়াইন্ডিং এ কপার লস।
১৬) এডি কারেন্ট লস কি এবং তা কিভাবে কমানো যায়?
এডি কারেন্ট লসঃ
এডি কারেন্ট কোরের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় কোর রেজিস্ট্যান্স বাধাগ্রস্ত হয়ে যে অপচয় হয়, তাকেই এডি কারেন্ট লস বলে।
এডি কারেন্ট লস কমানোর উপায়ঃ
এডি কারেন্ট লস কমাতে হলে কোরের লেমিনেশন গুলো কে যথা সম্ভব পাতলা বা চিকন করতে হবে এবং লেমিনেশন গুলোকে ভালভাবে লেমিনেটিং বা ইনসুলেটিং করে এডি কারেন্ট লস অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
১৭) হিস্টেরেসিস লস কি এবং তা কিভাবে কমানো যায়?
হিস্টেরেসিস লসঃ
আমরা জানি অল্টারনেটিং কারেন্ট পর্যায়ক্রমে পরিবর্তিত হয় । অল্টারনেটিং কারেন্ট পর্যায়ক্রমে পরিবর্তিত হওয়ার কারণে চুম্বক ক্ষেত্রের মেরুর দিক পরিবর্তন হয়ে থাকে।
এ পর্যায়ক্রমিক চুম্বকীকরন ও বিচুম্বকীকরেনের ফলে কোরে অনুচুম্বক গুলো স্ব-স্ব স্থানে সংঘর্ষের কারনে পাওয়ার লস হয়, এই লসকেই হিসটেরেসিস লস বলে। হিস্টেরেসিস লসের কারনে তাপ উৎপন্ন হয়ে থাকে। যত বেশি হিস্টেরেসিস লস হবে তত বেশি তাপ উৎপন্ন হবে।
হিস্টেরেসিস লস কমানোর উপায়ঃ
এই লস কমানোর জন্য জন্য উচ্চ গুণসম্পন্ন ম্যাগনেটিক শিটের কোর ব্যবহার করতে হবে। যেমনঃ সিলিকন স্টিল।
১৮) ট্রান্সফরমারের ওয়েল কি এবং তা কেন ব্যবহার করা হয়?
ট্রান্সফরমার ওয়েল
ট্রান্সফরমারের ট্যাঙ্কের ভিতর যে তৈল ব্যবহার করা হয় সেই তৈল-ই হলো ট্রান্সফরমার ওয়েল।
ওয়েল ব্যবহার
এটি সাধারণত ইন্সুলেশনের জন্য এবং উইন্ডিংকে ঠাণ্ডা রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়।
১৯) আইডিয়াল ট্রান্সফরমার কি?
আইডিয়াল বা আদর্শ ট্রান্সফরমার বলতে এমন এক ধরনের ট্রান্সফরমারকে বুঝায় যার মধ্যে কোন পাওয়ার লস নেই। অর্থাৎ ইনপুটে দেওয়া ১০০% পাওয়ার আউটপুটে পাওয়া যাবে।
কিন্তু বাস্তবে এমন কোন মেশিন বা বস্তু নেই যার পাওয়ার লস থাকবে না। সব ধরনের মেশিনে পাওয়ার লস থাকে। কিন্তু ট্রান্সফরমারের পাওয়ার লস অনেক কম হয়ে থাকে।
২০) আইডিয়াল ট্রান্সফরমারের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?
উয়াইন্ডিং এর রেজিস্ট্যান্স খুবই কম থাকবে।
এতে কোন লিকেজ ফ্লাক্স থাকবে না।
কোরে কোন প্রকার লস থাকবে না।
কোরের পারমিয়েবিলিটি বা ভেদ্যতা খুবই উচ্চ মানের।
২১) অটো ট্রান্সফরমার কি অথবা কোন ধরনের ট্রান্সফরমারে শুধুমাত্র একটি কয়েল ব্যবহার করা হয়?
অটো ট্রান্সফরমার হলো এমন এক ধরনের ট্রান্সফরমার যার মধ্যে কেবল মাত্র একটি কয়েল থাকে অর্থাৎ এর কিছু অংশ প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি উভয় কয়েলে ইলেক্ট্রিক্যালি ও ম্যাগনেটিক্যালি কমন থাকে।
২২) ট্রান্সফরমার স্টেপ আপ অথবা স্টেপ ডাউন বুঝার উপায় কি?
ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি সাইডের তুলনায় সেকেন্ডারি সাইডে যদি প্যাচ সংখ্যা বেশি থাকে তাহলে সেই ট্রান্সফরমার হলো স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার।
ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি সাইডের তুলনায় সেকেন্ডারি সাইডে যদি প্যাচ সংখ্যা কম থাকে তাহলে সেই ট্রান্সফরমার হলো স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার।
২৩) ট্রান্সফরমারের ইফিসিয়েন্সি কি?
ট্রান্সফরমার কর্মদক্ষতা বলতে বুঝায়, ব্যবহৃত আউটপুট এবং ইনপুট পাওয়ার অনুপাত। পৃথিবীতে এমন কোন মেশিন আবিষ্কার হয় নি যার ইফিসিয়েন্সি ১০০ ভাগ।
কিন্তু একমাত্র ট্রান্সফরমার যার ইফিসিয়েন্সি ইনপুটের ৯০%ভাগ থেকে ৯৯% পাওয়া যায়। সুতারাং এতেই বুঝা যায় যে ট্রন্সফরমারের ইফিসিয়েন্সি খুবই ভালো এবং পাওয়ার লস খুব কম।
২৪) লিকেজ ফ্লাক্স কি?
প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি কয়েলে যে ফ্লাক্স উৎপন্ন হয় তাকেই লিকেজ ফ্লাক্স বলা হয়ে থাকে। প্রাইমারি ফ্লাক্সের তুলনায় সেকেন্ডারিতে যদি ফ্লাক্স বেশি হয় সেক্ষেত্রে আউটপুটে স্বাভাবিকের চেয়ে কম ভোল্টেজ উৎপন্ন হয়।
২৫) ট্রান্সফরমারের কোর কি দিয়ে তৈরি?
ট্রান্সফরমারের কোর সাধারণত সিলিকন স্টিল নামক এক ধরনের স্টিল দিয়ে তৈরি। ট্রন্সফরমারের কোরগুলো সাধারণত নরমাল স্টিনলেস স্টিল দিয়ে হয় না।
২৬) ট্রান্সফরমার ব্যাংকিং কাকে বলে এবং ইহা কত প্রকার ও কি কি?
ট্রান্সফরমার ব্যাংকিং
কাজের ক্ষেত্রে অনেক সময় ৩ ফেজ ট্রান্সফরমার ব্যবহার না করে ৩ টি এক ফেজ ট্রান্সফরমার এর সাহায্যে ৩ ফেজ সাপ্লাই দিয়ে থাকি। এই ব্যবস্থাকে সাধারণত ট্রান্সফরমার ব্যাংকিং বলে।
কত প্রকার
ট্রান্সফরমার ব্যাংকিং সাধারণত ৬ প্রকার হয়ে থাকে
a) স্টার-স্টার
b) ডেল্টা-ডেল্টা
c) স্টার-ডেল্টা
d) ডেল্টা-স্টার
e) ওপেন ডেল্টা অথবা (V-V)
f)
কানেকশন।
![😭](https://static.xx.fbcdn.net/images/emoji.php/v9/t99/1.5/16/1f62d.png)
২৭) ট্রান্সফরমারের টেস্ট কেন করা হয়?
আমরা জানি ট্রান্সফরমারের পারফরম্যান্স এর হিসাব সমতুল্য সার্কিটের উপর ভিত্তি করে করা হয়। সমতুল্য সার্কিট চারটি উপাদান নিয়ে গঠিত।
সমতুল্য রেজিস্ট্যান্স R(01) বা R(02) সমতুল্য লিকেজ রিয়্যাক্ট্যান্স X(01) বা X(02) কোর লস রেজিস্ট্যান্স R(0), ম্যাগ্নেটাইজিং রিয়্যাক্ট্যান্স X(0)। এই ধ্রুবক গুলো ব্যবহার করে ট্রান্সফরমারের পারফরম্যান্স খুব সহজে বের করা যায়।
২৮) ট্রান্সফরমারের ওপেন সার্কিট এবং শর্ট সার্কিট টেস্ট কেন করা হয়?
ওপেন সার্কিট টেস্ট
এই টেস্ট করার সময় হাই সাইড ওপেন রাখতে হয় এবং লো ভোল্টেজ সাইড ইকুইপমেন্ট সংযুক্ত করা হয়। ওপেন সার্কিট টেস্ট যে কারনে করা হয়।
নো লোড কারেন্ট নির্ণয়
কোর লস নির্ণয়
এই টেস্ট করার সময় রেটেড ভোল্টেজ সাপ্লাই দেওয়া হয়।
শর্ট সার্কিট টেস্টঃ
এই টেস্ট করার জন্য লো ভোল্টেজ সাইডকে শর্ট করতে হয়। শর্ট সার্কিট টেস্ট যে কারনে করা হয়ঃ
কপার লস নির্ণয় করার জন্য
সমতুল্য রেজিস্ট্যান্স, রিয়াক্ট্যান্স এবং ইম্পিড্যান্স নির্ণয় করার জন্য
ইফিসিয়েন্সি এবং ভোল্টেজ রেগুলেশন নির্নয় করার জন্য।
২৯) নো-লোড অবস্থায় কারেন্টের পরিমান এত কম হয় কেন?
নো-লোড অবস্থায় ট্রান্সফরমারের প্রাইমারীতে কারেন্টের পরিমান খুব কম হয়ে থাকে কারন ট্রান্সফরমার ডিজাইন এর সময় এর উয়াইন্ডিং এ প্রয়োজনীয় সংখ্যক টার্ন দেওয়া হয়।
এর ফলে উচ্চমানের ইন্ডাক্টিভ সার্কিটে পরিণত হয়। এমন অবস্থায় যখন ভোল্টেজ আরোপিত হয় তখন সেলফ ইন্ডাকশনের কারনে কাউন্টার ইএমএফ তৈরি হয় এবং কারেন্টকে সিমিত রাখে। এই কারনে নো-লোড অবস্থায় কারেন্টের পরিমান এত কম হয়।
৩০) ভোল্টেজ রেগুলেশন বলতে কি বুঝায়?
ট্রান্সফরমারের ভোল্টেজ বৃদ্ধি পেলে সেকেন্ডারিতে ভোল্টেজ কমে যায়। তাই নো লোড ভোল্টেজ হতে ফুল লোড ভোল্টেজ পর্যন্ত মোট ভোল্টেজ ড্রপকে ফুল লোড ভোল্টেজ দ্বারা ভাগ করলে ভোল্টেজ রেগুলেশন পাওয়া যায়। একে শতকরা হিসেবে প্রকাশ করা হয়।
৩১) সার্কুলেশন কারেন্ট কি এবং এতে কি সমস্যা হয়?
সার্কুলেশন কারেন্ট
প্যারালাল অপারেশনের সময় যদি উভয় ট্রান্সফরমারে ট্রান্সফরমেশন রেশিও এক না হয় তাহলে আমরা জানি ট্রন্সফরমারের ইন্ডিউসড সেকেন্ডারি ইএমএফ এর কম-বেশি বা অসমতা বিরাজ করে।
এবং সঠিকভাবে ফেজ বিপরীত বা অপজিশন হয় না যার ফলে লোড অবস্থায় এমনকি নো-লোড অবস্থায় ট্রান্সফরমারের উভয় উয়াইন্ডিং এর কিছু কারেন্ট আবর্তাকারে বা ঘূর্ণন কারে প্রবাহিত হয়, ইহাই সার্কুলেশন কারেন্ট।
সমস্যা
a) অসম লোড বহনের প্রবনতা সৃষ্টি হয়।
এর ফলে পূর্ণভাবে KVA আউটপুট পাওয়া যায় না।
b) ট্রান্সফরমার অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়।
৩২) ট্রান্সফরমার কেন প্যারালালে সংযোগ করা হয়?
অনেক সময় ট্রান্সফরমারকে অতিরিক্ত লোড বহন করার জন্য প্রয়োজন হতে পারে। এই অবস্থায় দুই বা ততদিক ট্রান্সফরমারকে প্যারালালে সংযোগ করতে হয়।
প্যারালাল সার্কিটে সংযুক্ত করতে হলে নিচের শর্তগুলো পুরন করতে হয়।
a) সবগুলো ট্রান্সফরমার এর হাই এবং লো সাইডের ভোল্টেজ রেটিং একই হতে হবে অর্থাৎ ট্রান্সফরামার রেশিও একই হতে হবে।
b) ট্রান্সফরমার সমূহকে সঠিক পোলারিটি অনুযায়ী সংযোগ দিতে হবে।
c) প্রতিটি ট্রান্সফরমারের সমতুল্য ইম্পিডেন্স অবশ্যই KVA রেটিং এর উল্টানুপাতিক হতে হবে।
d) প্রতিটি ট্রান্সফরমারের নিজস্ব সমতুল্য রেজিস্ট্যান্স এবং রিয়্যাক্ট্যান্স এর অনুপাত একই হতে হবে।
e) ফেজ সিকুয়েন্স অবশ্যই একই হতে হবে।
৩৩) একটি ট্রান্সফরমারের নেমপ্লেটে প্রদত্ত ভোল্টেজ ব্যতীত অন্য কোন ভোল্টেজে কি ট্রান্সফরমার চালানো যেতে পারে?
উত্তরঃ
কিছু কিছু ক্ষেত্রে ট্রান্সফরমার নেমপ্লেটে প্রদত্ত ভোল্টেজ অপেক্ষা কম ভোল্টেজে চালান যেতে পারে। যদি ট্যাপ প্রদান করা না হয়ে থাকে তাহলে ট্রান্সফরমার নেমপ্লেটে প্রদত্ত ভোল্টেজ অপেক্ষা বেশি ভোল্টেজে চালান উচিত নয়। যদি নির্ধারিত ভোল্টেজ অপেক্ষা কম ভোল্টেজে ট্রান্সফরমার চালান হয়, তাহলে এর KVA রেটিংও ক্রমান্বয়ে কমে যাবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি কোন ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি ভোল্টেজ ৪৮০ ভোল্ট ও সেকেন্ডারি ভোল্টেজ ২৪০ ভোল্ট হয়ে থাকে এবং এটি যদি ২৪০ ভোল্টে অপারেট করা হয় তাহলে সেকেন্ডারি ভোল্টেজ হ্রাস পেয়ে হবে ১২০ ভোল্ট। যদি ট্রান্সফরমারটির রেটিং ১০KVA হয়ে থাকে তাহলে সেটি হয়ে যাবে ৫ KVA অথবা প্রদত্ত ভোল্টেজের সমানুপাতিক হবে।
৩৪) ট্রান্সফরমারের কর্মদক্ষতা বেশি হয়ে থাকে কেন?
উত্তরঃ
ট্রান্সফরমার একটি স্ট্যাটিক ডিভাইস অর্থাৎ স্থির যন্ত্র। এতে কোন ঘূর্ণায়মান অংশ নেই, ফলে ঘর্ষণজনিত কোন ক্ষয় বা লস এতে নেই। অন্যান্য ঘূর্ণায়মান যন্ত্রের তুলনায় ট্রান্সফরমারে লস অনেক কম। তাই ট্রান্সফরমারের কর্মদক্ষতা সবচাইতে বেশি। ট্রান্সফরমারের কর্মদক্ষতা ৯৫%-৯৮% পর্যন্ত হয়ে থাকে।
৩৫) ট্রান্সফরমারের রেটিং kW এ না লিখে kVA লেখা হয়ে থাকে কেন?
উত্তরঃ
ট্রান্সফরমারের মোট লস= কোর লস + কপার লস। কোর লস নির্ভর করে ভোল্টেজ এর উপর এবং কপার লস নির্ভর করে কারেন্টের উপর, কিন্তু ট্রান্সফরমারের মোট লস কারেন্ট ও ভোল্টেজের মধ্যবর্তী ফেজ কোণের উপর নির্ভর করেনা। kW এর সাথে পাওয়ার ফ্যাক্টর বা কারেন্ট ও ভোল্টেজের মধ্যবর্তী ফেজ এঙ্গেল জড়িত কিন্ত kVA এর সাথে পাওয়ার ফ্যাক্টর থাকেনা। এজন্য ট্রান্সফরমারের রেটিং kW এ না লিখে kVA লেখা হয়ে থাকে।
৩৬) ট্রান্সফরমার ব্যাংকিং কাকে বলে?
উত্তরঃ
অনেক সময় ৩ ফেজ ট্রান্সফরমার ব্যবহার না করে তিনটি ১ ফেজ ট্রান্সফরমার এর সাহায্যে ৩ ফেজ সাপ্লাই দেয়া হয়, এই ব্যবস্থাকে ট্রান্সফরমার ব্যাংকিং বলে।
৩৭) ট্রান্সফরমার ব্যাংকিং করার শর্ত কি কি?
উত্তরঃ
ক) প্রতিটি ট্রান্সফরমার এর kVA রেটিং একই হতে হবে।
খ) প্রতিটি ট্রান্সফরমার এর ভোল্টেজ রেটিং একই হতে হবে।
গ) সঠিক পোলারিটি অনুযায়ী সংযোগ দিতে হবে।
৩৮) কোন ট্রান্সফরমার এর এফিসিয়েন্সি কখন ম্যাক্সিমাম হয়?
উত্তরঃ যখন আয়রণ লস ও কপার লস প্রায় সমান হয় তখনই ওই ট্রান্সফরমারের ইফিসিয়েন্সি ম্যাক্সিমাম হতে পারবে।
৩৯) অটো ট্রান্সফরমার কি?
উত্তরঃ
অটো ট্রান্সফরমার এমন এক ব্যাতিক্রমি ট্রান্সফরমার যার মধ্যে কেবল একটি ওয়াইন্ডিং থাকে। ইহার কিছু অংশ প্রাইমারি আর কিছু অংশ সেকেন্ডারি, উভয় কয়েল ইলেকট্রিক্যাল ও ম্যাগনেটিক্যালি সংযুক্ত থাকে। তারপরও একে ট্রান্সফরমার বলা হয়, কারণ ইহার কার্যপ্রণালী দুই ওয়াইন্ডিং ট্রান্সফরমার এর মতই।
৪০) অটো ট্রান্সফরমারের ব্যবহারগুলো কি কি?
উত্তরঃ
ক) ডিস্ট্রিবিউশন লাইনে ভোল্টেজ ঘাটতি পুরনে ইহা ব্যবহার করা হয়।
খ) ৩-ফেজ ইন্ডাকশন মোটর চালু করার কাজে ব্যবহার হয়।
গ) রাজপথ আলোকিত করার কাজে ইহা ব্যবহার হয়।
ঘ) রেডিও ইলেক্ত্রনিক্সে ইহা ব্যবহার করা হয়।
৪১) আইডিয়াল ট্রান্সফরমার কি?
উত্তরঃ
আইডিয়াল বা আদর্শ ট্রান্সফরমার বলতে এমন এক দরনের ট্রান্সফরমারকে বুঝায় যার মধ্যে কোন পাওয়ার লস নেই । অর্থাৎ ইনপুটে দেওয়া ১০০% পাওয়ার আউটপুটে পাওয়া যাবে। কিন্ত বাস্তবে এমন কোন মেশিন বা বস্ত নেই যার পাওয়ার লস থাকবে না। সব ধরনের মেশিনে পাওয়ার লস থাকে। কিন্তু ট্রান্সফরমারের পাওয়ার লস অনেক কম হয়ে থাকে।
৪২) আইডিয়াল ট্রান্সফরমারের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি?
উত্তরঃ
ক) ওয়াইন্ডিং এর রেজিস্ট্যান্স খুবই কম থাকবে।
খ) এতে কোন লিকেজ ফ্লাক্স থাকবে না।
গ) কোরে কোন প্রকার লস থাকবে না।
ঘ) কোরের পারমিয়েবিলিটি বা ভেদ্যতা খুবই উচ্চ মানের।
৪৩) একটি ট্রান্সফরমার স্টেপ আপ না স্টেপ ডাউন বুঝার উপায় কি?
উত্তরঃ
ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি সাইডের তুলনায় সেকেন্ডারি সাইডে যদি প্যাচ সংখ্যা বেশি থাকে তাহলে সেই ট্রান্সফরমার হলো স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার।
ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি সাইডের তুলনায় সেকেন্ডারি সাইডে যদি প্যাচ সংখ্যা কম থাকে তাহলে সেই ট্রান্সফরমার হলো স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার।
৪৪) লিকেজ ফ্লাক্স কি?
উত্তরঃ
প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি কয়েলে যে ফ্লাক্স উৎপন্ন হয় তাকেই লিকেজ ফ্লাক্স বলা হয়ে থাকে। প্রাইমারি ফ্লাক্সের তুলনায় সেকেন্ডারিতে যদি ফ্লাক্স বেশি হয় সেক্ষেত্রে আউটপুটে স্বাভাবিকের চেয়ে কম ভোল্টেজ উৎপন্ন হয়।
৪৫) ট্রান্সফরমারের কোর কি দিয়ে তৈরি?
উত্তরঃ
ট্রান্সফরমারের কোর সাধারণত সিলিকন স্টিল নামক এক ধরনের স্টিল দিয়ে তৈরি। ট্রন্সফরমারের কোরগুলো সাধারণত নরমাল স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে হয় না।
৪৬) ট্রান্সফরমারের টেস্ট কেন করা হয়?
উত্তর:
আমরা জানি ট্রান্সফরমারের পারফরম্যান্স এর হিসাব সমতুল্য সার্কিটের উপর ভিত্তি করে করা হয়। সমতুল্য সার্কিট চারটি উপাদান নিয়ে গঠিত। সমতুল্য
রেজিস্ট্যান্স R(01) বা R(02); সমতুল্য লিকেজ রিয়্যাক্ট্যান্স X(01) বা X(02); কোর লস রেজিস্ট্যান্স R(0); ম্যাগ্নেটাইজিং রিয়্যাক্ট্যান্স X(0) । এই ধ্রুবক গুলো ব্যবহার করে ট্রান্সফরমারের পারফরম্যান্স খুব সহজে বের করা যায়।
ট্রান্সফরমারের পারফরম্যান্স বের করার জন্যই টেস্ট হরা হয়।
৪৭) ট্রান্সফরমারের ওপেন সার্কিট এবং শর্ট সার্কিট টেস্ট কেন করা হয়?
উত্তরঃ
ক) ওপেন সার্কিট টেস্ট >
এই টেস্ট করার সময় হাই সাইড ওপেন রাখতে হয় এবং লো ভোল্টেজ সাইড ইকুইপমেন্ট সংযুক্ত করা হয়। ওপেন সার্কিট টেস্ট যে কারনে করা হয়ঃ
1. নো লোড কারেন্ট নির্ণয়,
2. কোর লস নির্ণয়।
এই টেস্ট করার সময় রেটেড ভোল্টেজ সাপ্লাই দেওয়া হয়।
খ) শর্ট সার্কিট টেস্ট >
এই টেস্ট করার জন্য লো ভোল্টেজ সাইডকে শর্ট করতে হয়। শর্ট সার্কিট টেস্ট যে কারনে করা হয়ঃ
1. কপার লস নির্ণয়,
2. সমতুল্য রেজিস্ট্যান্স নির্ণয়,
3. রিয়াক্ট্যান্স নির্ণয়,
4. ইম্পিড্যান্স নির্ণয়,
5. ইফিসিয়েন্সি নির্ণয়,
6. ভোল্টেজ রেগুলেশন নির্নয়।
৪৮) নো-লোড অবস্থায় কারেন্টের পরিমান এত কম হয় কেন?
উত্তরঃ
নো-লোড অবস্থায় ট্রান্সফরমারের প্রাইমারীতে কারেন্টের পরিমান খুব কম হয়ে থাকে কারন ট্রান্সফরমার ডিজাইন এর সময় এর ওয়াইন্ডিং এ প্রয়োজনীয় সংখ্যক টার্ন দেওয়া হয়। এর ফলে উচ্চমানের ইন্ডাক্টিভ সার্কিটে পরিণত হয়। এমন অবস্থায় যখন ভোল্টেজ আরোপিত হয় তখন সেলফ ইন্ডাকশনের কারনে কাউন্টার ইএমএফ তৈরি হয় এবং কারেন্টকে সীমিত রাখে। এই কারনে নো-লোড অবস্থায় কারেন্টের পরিমান এত কম হয়।
৪৯) ভোল্টেজ রেগুলেশন বলতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ
ট্রান্সফরমারের ভোল্টেজ বৃদ্ধি পেলে সেকেন্ডারিতে ভোল্টেজ কমে যায়। তাই নো লোড ভোল্টেজ হতে ফুল লোড ভোল্টেজ পর্যন্ত মোট ভোল্টেজ ড্রপকে ফুল লোড ভোল্টেজ দ্বারা ভাগ করলে ভোল্টেজ রেগুলেশন পাওয়া যায়। একে শতকরা হিসেবে প্রকাশ করা হয়।
৫০) সার্কুলেশন কারেন্ট কি?
উত্তরঃ
প্যারালাল অপারেশনের সময় যদি উভয় ট্রান্সফরমারে ট্রান্সফরমেশন রেশিও এক না হয় তাহলে আমরা জানি ট্রন্সফরমারের ইন্ডিউসড সেকেন্ডারি ইএমএফ এর কম-বেশি বা অসমতা বিরাজ করে এবং সঠিকভাবে ফেজ বিপরীত বা অপজিশন হয় না যার ফলে লোড অবস্থায় এমনকি নো-লোড অবস্থায় ট্রান্সফরমারের উভয় ওয়াইন্ডিং এর কিছু কারেন্ট আবর্তাকারে বা ঘূর্ণনাকারে প্রবাহিত হয়, ইহাই সার্কুলেশন কারেন্ট।
৫১) সার্কুলেশন কারেন্টের সমস্যা কি?
উত্তরঃ
1. অসম লোড বহনের প্রবনতা সৃষ্টি হয়।
2. এর ফলে পূর্ণভাবে KVA আউটপুট পাওয়া যায় না।
3. ট্রান্সফরমার অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়।
৫২) ট্রান্সফরমার কেন প্যারালালে সংযোগ করা হয়?
উত্তরঃ
অনেক সময় ট্রান্সফরমারকে অতিরিক্ত লোড বহন করার জন্য প্রয়োজন হতে পারে। এই অবস্থায় দুই বা ততোধিক ট্রান্সফরমারকে প্যারালালে সংযোগ করতে হয়। প্যারালাল সার্কিটে সংযুক্ত করতে হলে নিচের শর্তগুলো পুরন করতে হয়।
1. সবগুলো ট্রান্সফরমার এর হাই এবং লো সাইডের ভোল্টেজ রেটিং একই হতে হবে অর্থাৎ ট্রান্সফরামার রেশিও একই হতে হবে।
2. ট্রান্সফরমার সমূহকে সঠিক পোলারিটি অনুযায়ী সংযোগ দিতে হবে।
3. প্রতিটি ট্রান্সফরমারের সমতুল্য ইম্পিডেন্স অবশ্যই KVA রেটিং এর উল্টানুপাতিক হতে হবে।
4. প্রতিটি ট্রান্সফরমারের নিজস্ব সমতুল্য
রেজিস্ট্যান্স এবং রিয়্যাক্ট্যান্স এর অনুপাত একই হতে হবে।
5. ফেজ সিকুয়েন্স অবশ্যই একই হতে হবে।
৫৩) এক ফেজ ট্রান্সফরমার দ্বারা তিন ফেজ সাপ্লাই
দেওয়া যায় কি ?
উ : হ্যাঁ যায়, ভি ভি বা ওপেন ডেল্টা কানেকশন
করে।
৫৪) ট্রান্সফরমার হামিং কি ?
উ : ট্রান্সফরমারের কোর এবং কয়েল কানেকশন যদি
মজবুত ভাবে না করা থাকে, লুজ কানেকশন থাকে
তাহলে ফুল লোড অবস্থায় কাঁপতে থাকে এবং এক
প্রকার আওয়াজ হয়, তাহাই হামিং।
৫৫) লিকেজ ফ্লাক্স কি?
উত্তরঃ আমরা জানি ট্রান্সফরমার মিউচুয়াল বা কমন ইন্ডাকটেন্স এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করে। এখন, লিকেজ ফ্লাক্স বলতে বুঝায় প্রাইমারী ও সেকেন্ডারী কয়েলের যে ফ্লাক্স উৎপন্ন হয়। আর আরেকটি কথা হল যদি সেকেন্ডারি কয়েলের ফ্লাক্সের পরিমাণ প্রাইমারী এর চেয়ে বেশি হয় তাহলে আউটপুটেও স্বাভাবিকের চেয়ে কম ভোল্টেজ উতপন্ন হবে।
৫৬) ট্রান্সফরমারের কোরের লেমিনেশন/ইনসুলেশন কতটুকু পুরু হয়ে থাকে?
উত্তরঃ আসলে এই লেমিনেশন স্বাভাবিক ভাবে ০.৪ মিমি থেকে ০.৫ মিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে পাওয়ার লাইনে ব্যবহৃত অনেক ট্রান্সফরমারের লেমিনেশনের পুরুত্ব অনেক কম হয় (০.২ মিমি)।
৫৭) ট্রান্সফরমার কোর কি দিয়ে তৈরি হয়?
উত্তরঃ আসলে ট্রান্সফরমারের কোর গুলো নরমাল স্টেনলনেস স্টিল দিয়ে হয় না। এটার জন্য সিলিকন স্টিল নামক একধরনের স্টিল এর পাত ব্যহার করা হয় যা বাজারে পাওয়া যায়। তবে আসল নকল এর ও একটা বিষয় কিন্তু সব জায়গাতেই আছে।
৫৮) একটি ট্রান্সফরমার কয়েল এর তার গুলো কি মানের হতে হবে?
উত্তরঃ একটি ট্রান্সফরমারের প্রাইমারী এমং সেকেন্ডারী কয়েল অনেক ভাল মানের অরিজিনাল কপার তার দিতে তৈরি করতে হবে।তাছাড়া এটার মধ্যে দিয়ে অতিরিক্ত রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়,ফলে ভোল্টেজ ড্রপ বেশি হয়,লসের পরিমাণ বেড়ে যায়।
৫৯) অন লোড আর নো লোড কি?
উত্তরঃ ট্রান্সফরমারের আউটপুটে যখন কোন লোড লাগানো থাকে না তখন তাকে বলে “নো লোড কন্ডিশন”। আর যদি আউটপুটে লোড বিদ্যমান থাকে তাহলে তাকে বলা হয় “লোডেড কন্ডিশন”।
৬০) ট্রান্সফরমার ঠান্ডা রাখার সবচেয়ে জনপ্রিয় বা ব্যবহৃত উপায় কি?
উত্তরঃ অয়েল কুলিং বা তেল দিয়ে করা হয়। এ ছাড়াও হাল আমলে এয়ার কুলিং, নাইট্রোজেন কুলিং, ওয়াটার কুলিং প্রভৃতিও ব্যবহার করা হয়।
৬১) এ.সি কে ডি.সি এবং ডি.সি কে এ.সি কি ভাবে
করা হয় ?
উ : এ.সি কে ডি.সি করা হয় রেকটিফায়ার ও
রোটারী কনভার্টার দ্বারা এবং ডি.সি কে এ.সি
করা হয় ইনভার্টার দ্বারা।
৬২) সি.বি কি ?
উ : সার্কিট ব্রেকার যাহা ক্রটি পূর্ণ লাইনকে আপনা
আপনি র্সোস হতে বিচ্ছিন্ন করে।
৬৩) ট্রান্সফরমার গরম হওয়ার কারন কি ?
উ : (a) ওভার লোড হওয়ার জন্য হতে পারে
(b) ইন্সুলেশন দুর্বল হয়ে গেলে
(c) কোথাও আর্থ হয়ে গেলে
(d) ওভার ভোল্টেজ সাপ্লাইয়ের জন্য।
৬৪) সিলিকা জেলের স্বাভাবিক রং কি রূপ থাকে ?
উ : ভাল অবস্থায় ধব ধবে সাদা, কিন্তু জলীয় বাস্প গ্রহন করলে কিছুটা বাদামী রং এর হয়ে যায়,আবার উত্তাপ দিলে ইহা সাদা হয়ে যায়।
৬৫)ট্রান্সফরমার তৈলের কাজ কি ?
উ : ইহার প্রধান কাজ দুটি- প্রথমত ইহা ইন্সুলেশনের কাজ করে, দ্বিতীয়ত ট্রান্সফরমারকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্যে করে।
৬৬) ব্রিদার কি ?
উ : ইহা ট্রান্সফরমারের কনজার্ভেটরের সহিত লাগানো থাকে, যার মাধ্যমে বাহির হতে ঠান্ডা বাতাস ফিল্টার হয়ে ট্যাংকে ঢুকে এবং গরম বাতাস ট্যাংক হতে বাহির হয়ে যায়।
৬৭) বুকলজ রিলে কি ?
উ : ইহা এক প্রকার রিলে যাহা ট্রান্সফরমারেরট্যাংক ও কনজার্ভেটরের সংযোগকারী পাইপের মধ্যে বসানো থাকে এবং ট্রান্সফরমারের ভিতরে ত্রুটি দেখা দিলে সর্তক ঘন্টা বাজিয়ে থাকে।
৬৮) গার্ড ওয়্যার কি ?
উ : ট্রান্সমিশন লাইনের নীচে ব্যবহ্নত তার, যাহা আর্থের সহিত সংযোগ থাকে।
৬৯) ব্যাটারীর সলিউশন তৈরির সময় এসিড পানিতে না পানি এসিডে মিশাতে হয় ?
উ : এসিড পানিতে মিশাতে হয়।
৭০) জাম্পার কি ?
উ : মেইন লাইন হতে বাসা বাড়ীতে সাপ্লাই লাইনের সংযোগ রক্ষাকারী তার।
৭১) ডেম্পার ওয়্যাইন্ডিং কি ?
উ : সিনক্রোনাস মোটরকে র্স্টাট দেওয়ার জন্য ইহার পোলের উপর মোটা তারের ওয়্যাইন্ডিং দেওয়া হয় এবং ইহা অল্টারনেটরে ও ব্যবহ্নত হয় হান্টিং দোষ কমানোর জন্য।
৭২) ট্রান্সফরমার এর প্রাইমারিতে ডিসি সাপ্লাই দিলে কি হবে?
উত্তরঃ ডিসি ট্রান্সফরমার সম্ভব নয়। কারন, ফ্লেমিং এর induce voltage এর নিয়মানুসারে একটি বিদ্যুৎ পরিবাহি পদার্থ ও একটি চুম্বক ক্ষেত্র এবং এই দুই এর মধ্যে কোন একটি গতিশীল থাকবে। অর্থাৎ এদের মধ্যে relative motion থাকবে। তবেই ঐ বিদ্যুৎ পরিবাহি পদার্থে ভোল্টেজ আবিষ্ট করা সম্ভব।
ট্রান্সফরমারের প্রাইমারিতে যখন এসি সাপ্লাই দেয়া হয় তখন যেই ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হয় তার মেরুগুলো এসি সাপ্লাই এর ফ্রিকোয়েন্সির এর অনুপাতে পরিবর্তন হয়। এইভাবে এই গতিশীল চুম্বক বলরেখা যখন সেকেন্ডারি এর কয়েল এর মধ্য দিয়ে যায় তখন সেকেন্ডারি তে ভোল্টেজ আবিষ্ট করে।
কিন্তু যখন প্রাইমারি কয়েল এ ডিসি সাপ্লাই দেয়া হলে ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হবে কিন্তু তার মেরু বা পোল গুলো হবে স্থির কারণ ডিসি তে কোনও ফ্রিকোয়েন্সি থাকে না এ কারণে সেকেন্ডারি তে কোনও ভোল্টেজ আবিষ্ট হবে না সুতরাং ডিসি সাপ্লাই দিলে প্রাইমারিতে প্রচুর কারেন্ট প্রবাহিত হবে কারণ ডিসিতে ইম্পিড্যান্স এসির তুলনায় কম। ফলে প্রাইমারিতে ডিসি সাপ্লাই দিলে প্রচুর কারেন্ট প্রবাহিত হবে যার কারণ এ প্রাইমারি কয়েল পুড়ে যেতে পারে।
৭৩) রেজোন্যান্ট ফ্রিকুয়েন্সি কী?
উত্তরঃ একটি এ.সি সার্কিট ইন্ডাকটেন্স এবং ক্যাপাসিট্যান্স এর মান যাই হোক না কেন যে ফ্রিকোয়েন্সিতে ঐ ইন্ডাকটিভ ও ক্যাপাসিটিভ রিয়াকটেন্স এর মান সমান হয়, সেই ফ্রিকোয়েন্সিকে কে রেজোন্যান্ট ফ্রিকোয়েন্সি বলে।
৭৪)) HRC ফিউজ কী?
উত্তরঃ High Rupturing Capacity. উচ্চ কারেন্ট প্রবাহিত হয় এমন লাইনে যে ফিউজ ব্যবহৃত হয় সেগুলো HRC ফিউজ।
৭৫) লোড বিহীন অবস্থায় ট্রান্সফরমার কী পাওয়ার গ্রহণ করে? কেন করে?
উত্তরঃ হুম করে। কোর লস কমাবার জন্য।
৭৬) ট্রান্সফরমার শর্ট সার্কিট টেস্ট কেন করানো হয়?
উত্তরঃ ১) কপার লস মাপার জন্য।
২)সমতুল্য রেজিস্টান্স,, রিয়্যাকট্যান্স, ইম্পিড্যান্স মাপার জন্য।
৩) ইফিসিয়েন্সি মাপতে।
৪) ভোল্টেজ রেগুলেশন পরিমাপ করতে।
৭৭) এ.সি কে ডি.সি এবং ডি.সি কে এ.সি তে কীভাবে রূপান্তরিত করা হয়?
উত্তরঃ এ.সি কে ডি.সি করা হয় রেকটিফায়ার দিয়ে,, এবং ডি. সি কে এ.সি তে রূপান্তরিত করা হয় ইনভার্টার দিয়ে।
৭৮) ডি.সি সিরিজ জেনারেটর ট্রান্সমিশন লাইনে কী হিসেবে ব্যবহৃত হয়?
উত্তরঃ বুস্টার হিসেবে।
৭৯) কম্যুটেটর কী দিয়ে তৈরী?
উত্তরঃ টানা শক্ত কপার দিয়ে।
৮০) PLC লাইন কী?
উত্তরঃ যে লাইনের মাধ্যমে পাওয়ার স্টেশন,, সাব স্টেশন ,, রিসিভিং স্টেশনে নিজস্ব জরুরী যোগাযোগ ব্যাবস্থা টেলিফোন এর মাধ্যমে সম্পাদন করা হয়।
৮১) মেকানিকাল পাওয়ার ডি.সি সিরিজ মোটর এর সর্বোচ্চ কখন হয়?
উত্তর ঃ যখন ব্যাক ই এম এফ প্রদত্ত ভোল্টেজ এর হাফ হয়।
৮২) কেনো DC কে বাদ দিয়ে AC ভোল্টেজ কে ট্রান্সমিট করা হয়?
উত্তরঃ স্বাভাবিক ভাবে DC ব্যবস্থায় ভোল্টেজ বৃদ্ধি করা বা হ্রাস করা সম্ভব নয় ফলে DC ব্যবস্থায় উৎপাদিত ভোল্টেজকেই সরাসরি বিতরন করতে হয়। অর্থাৎ DC তে উৎপাদিত ভোল্টেজ 400v সীমিত রাখতে হয়, যেহেতু লোড গুলোর প্রায় সবই 400v ,230v এর।
একই ভাবে ট্রান্সমিশন ভোল্টেজ ও বৃদ্ধি করা সম্ভব হয় না। Dc ভোল্টেজ কম থাকার কারনে বেশি Power প্রেরণে কারেন্ট (I) বৃদ্ধি পায় ফলে কপার লস(I^2R) বৃদ্ধি পায় ।
অন্য দিকে AC ব্যবস্থায় ভোল্টেজকে বৃদ্ধি করে অধিক Power প্রেরণে কারেন্ট(I) কে কমানো হয় ফলে কপার লস(I^2R) কম হয় ।
অর্থাৎ Ac ব্যবস্থাতে সুবিধা অনেক বেশি ।
৮৩) কারেন্ট কাকে বলে?
পরিবাহী পদার্থের মধ্যকার মুক্ত ইলেকট্রন সমূহ একটি নিদ্রিষ্ট দিকে প্রবাহিত হওয়ার হারকেই কারেন্ট বলে। ইহাকে I বা i দ্বারা প্রকাশ করা হয়, এর একক অ্যাম্পিয়ার (A বা Amp.) অথবা কুলম্ব/সেকেন্ড ।
৮৪) ভোল্টেজ কাকে বলে?
পরিবাহী পদার্থের পরমাণুগুলির মুক্ত ইলেকট্রন সমূহকে স্থানচ্যুত করতে যে বল বা চাপের প্রয়োজন সেই বল বা চাপকেই বিদ্যুৎ চালক বল বা ভোল্টেজ বলে। একে V দ্বারা প্রকাশ করা হয় এর একক Volts.
৮৫) রেজিষ্ট্যান্স কাকে বলে?
পরিবাহী পদার্থের মধ্য দিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হওয়ার সময় পরিবাহী পদার্থের যে বৈশিষ্ট্য বা ধর্মের কারণে উহা বাধাগ্রস্ত হয় উক্ত বৈশিষ্ট্য বা ধর্মকেই রোধ বা রেজিষ্ট্যান্স বলে। এর প্রতীক R অথবা r, আর একক ওহম (Ω)।
৮৬) সার্কিট বা বর্তনী কাকে বলে?
সার্কিট একটি বদ্ধ পথ, যাহার মধ্যে দিয়ে কারেন্ট প্রবাহিত হইতে পারে তাকে সার্কিট বা বর্তনী বলে।
৮৭) ওহমের সুত্র (Ohm's Law)?
ওহমের সুত্রঃ স্থির তাপমাত্রায় কোন বর্তনীর মধ্য দিয়ে যে কারেন্ট প্রবাহিত হয়, তাহা ঐ বর্তনীর দুই প্রান্তের বিভব পার্থক্যের সহিত সরাসরি সমানুপাতিক এবং রেজিস্টেন্সের সহিত উল্টানুপাতিক। অর্থাৎ I αV or I α1/V or I =V/R
ওহমের সূত্রটির ইংরেজি ভার্শন সবার জেনে রাখা দরকার, তাই ইংরেজি ভার্শনটিও এখানে উল্লেখ করা হলঃ
Ohm’s law Very basic circuit law that defines the relationships between current, voltage, and resistance in a DC circuit. Ohm’s law states that current is directly proportional to voltage and inversely proportional to resistance. (I = V/R) The other forms of the formula are V = IR and R =V/I.
৮৮) কারশফস এর সুত্র?
কারশফের কারেন্ট সুত্র (KCL) কোন বৈদ্যুতিক নেটওয়ার্কের এক বিন্দুতে মিলিত কারেন্ট সমুহের বীজগাণিতিক যোগফল শুন্য অথবা কোন বিন্দুতে আগত কারেন্ট = নির্গত কারেন্ট।
কারশফের ভোল্টেজ সুত্র (KVL) কোন বদ্ধ বৈদ্যুতিক নেটওয়ার্কের সকল ই.এম.এফ এবং সকল ভোল্টেজ ড্রপের বীজগাণিতিক যোগফল শুন্য।
৮৯) বিদ্যুচৌম্বক আবেশ (Eletromagnetic Induction) কাকে বলে?
যখন কোন পরিবাহী বা কন্ডাকটরের সাথে সংশ্লিষ্ট চৌম্বক ফ্লাক্স পরিবর্তিত হয়, তখন পরিবাহীটির ভিতরে একটি ই. এম. এফ আবিষ্ট হয়। যদি পরিবাহীটি একটি লুপ বা সার্কিট গঠন করে, তবে এতে কারেন্ট প্রবাহিত হবে। এই প্রক্রিয়াকেই বিদ্যুচৌম্বক আবেশ (Eletromagnetic Induction) বলে।
৯০) লেনজের সূত্র লিখ?
আবেশিত বিদ্যুচ্চালক বলের কারনে পরিবাহী তারে প্রবাহিত আবেশিত কারেন্ট পরিবাহী তারের চারপাশে একটি চৌম্বক ক্ষেত্র সৃষ্টি করে, যা দারা আবেশিত কারেন্টের উৎপত্তি, উহাকেই (অর্থাৎ পরিবর্তনশীল ফ্লাক্স) এ (সৃষ্ট চৌম্বক ক্ষেত্র) বাধা প্রদান করে ।
৯১) লেনজের সূত্র কোথায় ব্যবহার হয়?
যেখানে পরিবাহী স্থির এবং চৌম্বক ক্ষেত্র গতিতে থাকে সেখানে লেনজের সূত্র ব্যবহার হয়।
৯২) ফ্লেমিং এর রাইট হ্যান্ড রুল কি?
দক্ষিণ হস্তের বৃদ্ধাঙ্গুলি, তর্জনী ও মধ্যমাকে পরস্পর সমকোণে রেখে বিস্তৃত করলে যদি তর্জনী চৌম্বক বলরেখার অভিমুখ এবং বৃদ্ধাঙ্গুলি পরিবাহী তারের ঘূর্ণনের অভিমুখ নির্দেশ করে, তবে মধ্যমা পরিবাহিতে প্রবাহিত আবেশিত কারেন্টের অভিমুখ নির্দেশ করেবে। ইহাই ফ্লেমিং এর রাইট হ্যান্ড রুল।
৯৩) ফ্লেমিং এর রাইট হ্যান্ড রুল কোথায় প্রযোজ্য হয়?
যেখানে চৌম্বক ক্ষেত্র স্থির এবং পরিবাহী গতিতে থাকে, সেখানে ফ্লেমিং এর রাইট হ্যান্ড রুল ব্যবহার করা হয়।
৯৪)মিউচুয়াল ইনডাকট্যাঁন্স কাকে বলে?
যে বৈশিষ্ট্য বা ধর্মের কারনে পাশাপাশি দুটি কয়েলে একটির কারেন্টের পরিবর্তনের ফলে অন্যটিতে ভোল্টেজ আবিষ্ট হয় উক্ত ধর্ম বা বৈশিষ্ট্যকে মিউচুয়াল ইনডাকট্যাঁন্স বলে।
৯৫) সেলফ ইনডাকট্যাঁন্স কাকে বলে?
এটা কয়েলের এমন একটি ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য, যা কয়েলে প্রবাহিত কারেন্ট বা কয়েলের চারদিকের ফ্লাক্সের হ্রাস- বৃদ্ধিতে বাধা দান করে।
৯৬) হিসটেরেসিস কাকে বলে?
চৌম্বক গুণাবলীর কিছুটা অংশ চৌম্বক পদার্থ কত্রিক নিজের মধ্যে রেখে দেয়ার প্রবনতাকেই হিসটেরেসিস বলে।
৯৭) চৌম্বকী করন চক্র কাকে বলে?
একটি লোহাকে চুম্বকে পরিনত করা, আবার চুম্বকহীন করা এবং আবার চুম্বকে পরিনত করা, আবার চুম্বকহীন করা, এই প্রক্রিয়া অনবরত চলতেই থাকলে এই প্রক্রিয়াকেই চৌম্বকী করন চক্র (সাইকেল অব ম্যাগনেটাইজেশন) বলে।
৯৮) ম্যাগনেটাইজেশন বা B-H কার্ভ কি?
X- এক্সিস কে ম্যাগনেটাইজিং ফোরস (H) এবং Y- এক্সিস কে ফ্লাক্স ডেনসিটি (B) হিসেবে ধরে যে কার্ভ আকা হয় তাকে ম্যাগনেটাইজেশন বা B-H কার্ভ বলে।
৯৯) এডি কারেন্ট কি?
যখন একটি বৈদ্যুতিক চুম্বকের কয়েলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত কারেন্ট পরিবর্তিত হতে থাকে, তখন চৌম্বক ক্ষেত্রও পরিবর্তিত হতে থাকে। এই পরিবর্তনশীল ফ্লাক্স কয়েলের তারকে কর্তন করে, ফলে কয়েলে একটি ভোল্টেজের সৃষ্টি হয়। একই সময়ে এই ফ্লাক্স লৌহ দণ্ডকেও কর্তন করে। ফলে এই লৌহ দণ্ডেও ভোল্টেজের সৃষ্টি হয়। এই ভোল্টেজের কারনে লৌহ দণ্ডে একটি কারেন্ট আবর্তিত হতে থাকে, এই আবর্তিত কারেন্টকেই এডি কারেন্ট বলে।
১০০) এডি কারেন্ট লস কাকে বলে?
হিসটেরেসিস লস ছাড়াও চৌম্বক উপাদানের মজ্জায় আবর্তমান বা এডি কারেন্টের কারনে কিছু অপচয় হয়, একে এডি কারেন্ট লস বলে।
১০১) ফ্যারাডের সূত্র লিখ?
প্রথম সুত্রঃ একটি তার বা কয়েলে ই. এম. এফ আবিষ্ট হয় তখন, যখন উক্ত তার বা কয়েলের সাথে সংশ্লিষ্ট চৌম্বক ফ্লাক্স বা চৌম্বক বল রেখার পরিবর্তন ঘটে।
দ্বিতীয় সুত্রঃ আবেশিত বিদ্যুচ্চালক বল এর পরিমান চৌম্বক বল রেখার পরিবর্তনের হারের সাথে সরাসরি সমানুপাতিক।
উপরোক্ত সূত্র দুটি একত্রে এভাবে লেখা যায়ঃ একটি পরিবাহী এবং একটি চৌম্বক ক্ষেত্রে আপেক্ষিক গতি যখন এরুপভাবে বিদ্যমান থাকে যে, পরিবাহীটি চৌম্বক ক্ষেত্রটিকে কর্তন করে, তখন পরিবাহিতে আবেশিত একটি বিদ্যুচ্চালক বল সংঘটিত কর্তনের হারের সাথে সমানুপাতিক।
১০২) ফেরান্টি ইফেক্ট কী?
উত্তরঃ দীর্ঘ ও মধ্যম বিদ্যুৎ পরিবহন ব্যবস্থায় যখন লাইন লোড শূন্য অথবা কম পরিমান লোড থাকে, তখন গ্রহন প্রান্তের ভোল্টেজ প্রেরন ভোল্টেজ অপেক্ষা বেশি থাকে, তাকে ফেরান্টি ইফেক্ট বলে।
১০৩) কোন ট্রান্সফরমার এর এফিসিয়েন্সি কখন ম্যাক্সিমাম হয়?
উত্তরঃ যখন আয়রণ লস ও কপার লস প্রায় সমান হয় তখনই ওই ট্রান্সফরমারের ইফিসিয়েন্সি ম্যাক্সিমাম হতে পারবে।
১০৪) ট্রান্সফরমার ঠান্ডা রাখার সবচেয়ে জনপ্রিয় বা ব্যবহৃত উপায় কি?
উত্তরঃ অয়েল কুলিং বা তেল দিয়ে করা হয়। এ ছাড়াও হাল আমলে এয়ার কুলিং, নাইট্রোজেন কুলিং, ওয়াটার কুলিং প্রভৃতিও ব্যবহার করা হয়।
১০৫) লিকেজ ফ্লাক্স কি?
উত্তরঃ আমরা জানি ট্রান্সফরমার মিউচুয়াল বা কমন ইন্ডাকটেন্স এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করে। এখন, লিকেজ ফ্লাক্স বলতে বুঝায় প্রাইমারী ও সেকেন্ডারী কয়েলের যে ফ্লাক্স উৎপন্ন হয়। আর আরেকটি কথা হল যদি সেকেন্ডারি কয়েলের ফ্লাক্সের পরিমাণ প্রাইমারী এর চেয়ে বেশি হয় তাহলে আউটপুটেও স্বাভাবিকের চেয়ে কম ভোল্টেজ উতপন্ন হবে।
১০৬) ট্রান্সফরমারের কোরের লেমিনেশন/ইনসুলেশন কতটুকু পুরু হয়ে থাকে?
উত্তরঃ আসলে এই লেমিনেশন স্বাভাবিক ভাবে ০.৪মিমি থেকে ০.৫ মিমি পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে পাওয়ার লাইনে ব্যবহৃত অনেক ট্রান্সফরমারের লেমিনেশনের পুরুত্ব অনেক কম হয় (০.২ মিমি)।
১০৭) ট্রান্সফরমার কোর কি দিয়ে তৈরি হয়?
উত্তরঃ আসলে ট্রান্সফরমারের কোর গুলো নরমাল স্টেনলনেস স্টিল দিয়ে হয় না। এটার জন্য সিলিকন স্টিল নামক একধরনের স্টিল এর পাত ব্যহার করা হয় যা বাজারে পাওয়া যায়। তবে আসল নকল এর ও একটা বিষয় কিন্তু সব জায়গাতেই আছে।
১০৮) একটি ট্রান্সফরমার কয়েল এর তার গুলো কি মানের হতে হবে?
উত্তরঃ একটি ট্রান্সফরমারের প্রাইমারী এমং সেকেন্ডারী কয়েল অনেক ভাল মানের অরিজিনাল কপার তার দিতে তৈরি করতে হবে।তাছাড়া এটার মধ্যে দিয়ে অতিরিক্ত রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়,ফলে ভোল্টেজ ড্রপ বেশি হয়,লসের পরিমাণ বেড়ে যায়।
১০৯) অন লোড আর নো লোড কি?
উত্তরঃ ট্রান্সফরমারের আউটপুটে যখন কোন লোড লাগানো থাকে না তখন তাকে বলে “নো লোড কন্ডিশন”। আর যদি আউটপুটে লোড বিদ্যমান থাকে তাহলে তাকে বলা হয় “লোডেড কন্ডিশন”।
১১০) একটি ট্রান্সফরমারের নেমপ্লেটে প্রদত্ত ভোল্টেজ ব্যতীত অন্য কোন ভোল্টেজে কি ট্রান্সফরমার চালানো যেতে পারে?
উত্তরঃ কিছু কিছু ক্ষেত্রে ট্রান্সফরমার নেমপ্লেটে প্রদত্ত ভোল্টেজ অপেক্ষা কম ভোল্টেজে চালান যেতে পারে। যদি ট্যাপ প্রদান করা না হয়ে থাকে তাহলে ট্রান্সফরমার নেমপ্লেটে প্রদত্ত ভোল্টেজ অপেক্ষা বেশি ভোল্টেজে চালান উচিত নয়। যদি নির্ধারিত ভোল্টেজ অপেক্ষা কম ভোল্টেজে ট্রান্সফরমার চালান হয়, তাহলে এর KVA রেটিংও ক্রমান্বয়ে কমে যাবে।
উদাহরণস্বরূপঃ যদি কোন ট্রান্সফরমারের প্রাইমারি ভোল্টেজ ৪৮০ ভোল্ট ও সেকেন্ডারি ভোল্টেজ ২৪০ ভোল্ট হয়ে থাকে এবং এটি যদি ২৪০ ভোল্টে অপারেট করা হয় তাহলে সেকেন্ডারি ভোল্টেজ হ্রাস পেয়ে হবে ১২০ ভোল্ট। যদি ট্রান্সফরমারটির রেটিং ১০KVA হয়ে থাকে তাহলে সেটি হয়ে যাবে ৫ KVA অথবা প্রদত্ত ভোল্টেজের সমানুপাতিক হবে।
১১১) ট্রান্সফরমারের কর্মদক্ষতা বেশি হয়ে থাকে কেন?
উত্তরঃ ট্রান্সফরমার একটি স্ট্যাটিক ডিভাইস অর্থাৎ স্থির যন্ত্র। এতে কোন ঘূর্ণায়মান অংশ নেই, ফলে ঘর্ষণজনিত কোন ক্ষয় বা লস এতে নেই। অন্যান্য ঘূর্ণায়মান যন্ত্রের তুলনায় ট্রান্সফরমারে লস অনেক কম। তাই ট্রান্সফরমারের কর্মদক্ষতা সবচাইতে বেশি। ট্রান্সফরমারের কর্মদক্ষতা ৯৫%-৯৮% পর্যন্ত হয়ে থাকে।
No comments:
Post a Comment