Saturday, December 23, 2023

ডায়োড, কি, কেন কিভাবে কাজ করে, প্রকারভেদ, ব্যবহার আদ্যপ্রান্ত

 প্রশ্নঃ বিভিন্ন প্রকার Diode এর নাম লিখ। 

উত্তরঃডায়োড মূলত একটি নির্দিষ্ট দিকের তড়িৎ প্রবাহকে সহায়তা করে এবং তার বিপরীত দিকের তড়িৎ প্রবাহকে বাধা প্রদান করে। এই ধরনের একদিকে প্রবাহিত করার প্রবণতাকে রেকটিফিকেশন বলা হয়ে থাকে যা এসি কারেন্ট থেকে ডিসি কারেন্টে তৈরি এবং রেডিও সংকেতের মর্মোদ্ধারের প্রথম ধাপ।

অধিকাংশ আধুনিক ডায়োডই অর্ধপরিবাহী জাংশন তত্ত্বের উপর নির্ভর করে বানানো হয়। এদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো P-N জাংশন ডায়োড। এধরনের ডায়োড অর্ধ পরিবাহীর ক্রিস্টাল যেমন সিলিকন থেকে নির্মিত হয়। ক্রিস্টালের এক অংশে কিছু অপদ্রব্য মেশানো হয় (ডোপায়ন) যাতে এমন একটা জায়গা তৈরি হয় যাতে ঋণাত্নক চার্জের বাহক বা ইলেকট্রন অধিক পরিমাণে থাকে; এঅংশকে বলা হয় এন(N)-টাইপ অর্ধপরিবাহী। ক্রিস্টালের অপর অংশে ভিন্নধর্মী অপদ্রব্যের সাহায্যে ধনাত্নক চার্জের ঘনত্ব বাড়িয়ে তোলা হয়। এ অংশটিকে বলা হয় পি(P)-টাইপ অর্ধপরিবাহী। এই দুইটি অংশের (পি ও এন) সংযোগস্থলকে বলে পি-এন জাংশন যেখানে ডায়োডের মূল কাজগুলো সংগঠিত হয়ে থাকে। ডায়োডে তড়িৎ প্রবাহের দিক হচ্ছে P টাইপ অর্ধপরিবাহী থেকে N টাইপ অর্ধপরিবাহক দিকে। এর বিপরীত দিকে তড়িৎ প্রবাহিত হতে পারে না।

শটকি ডায়োড একটি বিশেষ গঠন যাতে পি বা এন যেকোন একটি অংশের বদলে একটি ধাতু ব্যবহৃত হয়। তাতে অর্ধপরিবাহী জাংশনটি তৈরি হয় ধাতু ও অর্ধপরিবাহীর সংযোগস্থলে।

নিঃশেষিত স্তর বা ডিপলেশন স্তরঃ 

একটি P টাইপ অর্ধপরিবাহকের অভ্যন্তরে প্রচুর হোল ও খুবই কম সংখ্যক মুক্ত ইলেক্ট্রন থাকে। আবার N টাইপ অর্ধপরিবাহকের ক্ষেত্রে এর বিপরীত অর্থাৎ প্রচুর মুক্ত ইলেক্ট্রন ও খুবই কম সংখ্যক হোল থাকে। যখন একটি P-N জংশন তৈরী করা হয় তখন P অঞ্চল হতে হোলগুলো N অঞ্চলের দিকে এবং N অঞ্চল হতে ইলেকট্রনগুলো P অঞ্চলের দিকে যেতে চেষ্টা করে। এটি একটি ব্যাপন প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে পদার্থকণিকা অধিক ঘনত্বের স্থান থেকে কম ঘনত্বের স্থানে প্রবাহিত হতে থাকে। এ অবস্থায়-
১. P অঞ্চল হতে কিছু হোল N অঞ্চলে চলে যাওয়ায় P অঞ্চলের জাংশন-সংলগ্ন এলাকার অণুগুলো আয়নিত হয়ে ঋণাত্মক চার্জ ধারণ করে। ২. একইভাবে N অঞ্চল হতে P অঞ্চলে ইলেক্ট্রনের ব্যাপনের কারণে N অঞ্চলে ধনাত্মক চার্জে আয়নিত একটি অঞ্চল তৈরি হয়।
এভাবে P অঞ্চলে ঋণাত্মক ও N অঞ্চলে ধনাত্মক আয়ন উন্মুক্ত হয়ে যাওয়ায় একটি উল্টো ব্যাপার ঘটে
১. P অঞ্চলের ঋণাত্মক আয়ন, N অঞ্চলের ইলেক্ট্রনকে P অঞ্চলে প্রবেশে বাধা দেয়
২. N অঞ্চলের ধনাত্মক আয়ন, P অঞ্চলের হতে হোলকে N অঞ্চলে প্রবেশে বাধা দেয়

এওবস্থায় একটি তাপীয় সাম্যাবস্থা অর্জিত হয়, যাতে ইলেকট্রন ও হোলের ব্যাপন বন্ধ হয়ে যায় এবং জাংশন বা সংযোগস্থলে একটি বিভব প্রাচীর (Potential Barrier) সৃষ্টি হয়। এই বিভব প্রাচীরের উভয় পাশে একটি সীমা পর্যন্ত শুধুমাত্র আয়ন (P অঞ্চলে ঋণাত্মক আয়ন এবং N অঞ্চলে ধনাত্মক আয়ন) থাকে, এই সীমার মধ্যে কোন মুক্ত মুখ্য আধান বাহক (Majority Charge Carrier) তথা ইলেক্ট্রন বা হোল থাকেনা। এই স্তরে আধানবাহকের অনুপস্থিতির কারণে একে নিঃশেষিত স্তর বা ডিপলেশন স্তর (Depletion Region) বলে।

ডায়োডের কার্যপ্রণালীঃ 

একটি ডায়োডে তড়িৎ প্রবাহ হবে কিনা তা নির্ভর করে এর উপর প্রযুক্ত বহিঃস্থ বিভব বা ভোল্টেজের (Voltage) উপর যা দুইভাবে হতে পারে-
১. সম্মুখী ঝোঁক বা সম্মুখী বায়াস (Forward Bias)
২. বিমুখী ঝোঁক বা বিমুখী বায়াস (Reverse Bias)

পি ও এন অঞ্চলের সংযোগস্থলে নিঃশেষিত বা ডিপ্লেশন স্তর (হালকা রঙে)। ডিপ্লেশন স্তরের আয়ন ইলেকট্রন ও হোলকে বিকর্ষণ করে, তাতে তড়িৎ প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়।

 

পি-এন জাংশন ডায়োডের I–V বৈশিষ্ট্য

সম্মুখী ঝোঁক বা সম্মুখী বায়াস (Forward bias)ঃ

বহিঃস্থ ভোল্টেজ যদি এমনভাবে প্রয়োগ করা হয় যে, তড়িৎ-উৎসের (ব্যাটারী) ধনাত্মক প্রান্ত ডায়োডের P প্রান্তের সাথে এবং তড়িৎ-উৎসের ঋণাত্মক প্রান্ত ডায়োডের N প্রান্তের সাথে যুক্ত থাকে তবে তাকে সম্মুখী ঝোঁক বা সম্মুখী বায়াস বলা হয়। এক্ষেত্রে ব্যাটারীর ধনাত্মক প্রান্ত-
১. N অঞ্চলের ইলেক্ট্রন গুলোকে P অঞ্চলের দিকে টানবে (কারণ ইলেক্ট্রনের চার্জ এবং ব্যাটারীর ধনাত্মক প্রান্তের চার্জ বিপরীত)
২. P অঞ্চলের হোলগুলোকে N অঞ্চলের দিকে ঠেলে দিবে (কারণ হোলের চার্জ এবং ব্যাটারীর ধনাত্মক প্রান্তের চার্জ সমপ্রকৃতির)
এবং ব্যাটারীর ঋনাত্মক প্রান্ত-
১. N অঞ্চলের ইলেক্ট্রন গুলোকে P অঞ্চলের দিকে ঠেলে দিবে (কারণ ইলেক্ট্রনের চার্জ এবং ব্যাটারীর ঋণাত্মক প্রান্তের চার্জ সমপ্রকৃতির)
২. P অঞ্চলের হোলগুলোকে N অঞ্চলের দিকে টানবে (কারণ হোলের চার্জ এবং ব্যাটারীর ঋণাত্মক প্রান্তের চার্জ বিপরীত)

ফলে ভোল্টেজ বাড়াতে থাকলে ডিপলেশন স্তর সংকুচিত হতে থাকবে (যেহেতু আধান বাহকের চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে) এবং এক পর্যায়ে ডিপলেশন স্তর উপেক্ষা করে আধান বাহকগুলো জংশন অতিক্রম করবে। যেহেতু P অঞ্চল হতে হোল N অঞ্চলে প্রবেশ করছে এবং N অঞ্চল হতে ইলেক্ট্রন P অঞ্চলে প্রবেশ করছে সেহেতু এটা বলা যায় ডায়োডের মধ্য দিয়ে তড়িৎ/বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যাটারীর উপস্থিতির কারণে এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে এবং বর্তনীতে তড়িৎ প্রবাহ চলতে থাকবে।

সম্মুখী ঝোঁক বৃদ্ধির সাথে সাথে তড়িৎ প্রবাহ এক্সপোনেশিয়াল-ভাবে বাড়তে থাকে (ডায়োডের I–V বৈশিষ্ট্য দ্রষ্টব্য)। এ কারণে সম্মুখী ঝোঁকে চালিত ডায়োডকে চালু বা অন হিসেবে গণ্য করা হয়। যে সম্মুখী ভোল্টেজে ডায়োডের তড়িৎ প্রবাহ প্রত্যাশিত পর্যায়ে উন্নীত হয় (প্রয়োগভেদে ০.০১-১০ এম্পিয়ার/সে.মি.), তাকে কাট-ইন ভোল্টেজ বলা হয়। সিলিকন পি-এন ডায়োডের জন্য এর মান ০.৬ - ০.৭ ভোল্ট, আবার সিলিকন শটকি ডায়োডের জন্য এর মান ০.৩ ভোল্টের কাছাকাছি। অপরদিকে উচ্চ ব্যান্ড-পার্থক্যের পদার্থ (যেমন সিলিকন কার্বাইড বা গ্যালিয়াম নাইট্রাইড) দিয়ে তৈরি ডায়োডের জন্য কাট-ইন বিভব ২ ভোল্টেরও বেশি হতে পারে।

বিমুখী ঝোঁক বা বিমুখী বায়াস (Reverse bias)ঃ

বহিঃস্থ ভোল্টেজ যদি এমনভাবে প্রয়োগ করা হয় যে, তড়িৎ-উৎসের (ব্যাটারী) ঋণাত্মক প্রান্ত ডায়োডের P প্রান্তের সাথে এবং তড়িৎ-উৎসের ধনাত্মক প্রান্ত ডায়োডের N প্রান্তের সাথে যুক্ত থাকে তবে তাকে বিমুখী ঝোঁক বা বিমুখী বায়াস বলা হয়। এক্ষেত্রে ব্যাটারীর ঋণাত্মক প্রান্ত-
১. N অঞ্চলের ইলেক্ট্রন গুলোকে জংশন থেকে N অঞ্চলের দিকে ঠেলে দিবে (কারণ ইলেক্ট্রনের চার্জ এবং ব্যাটারীর ঋণাত্মক প্রান্তের চার্জ সমপ্রকৃতির)
২. P অঞ্চলের হোলগুলোকে জংশন থেকে P অঞ্চলের আরো প্রান্তের দিকে টেনে আনবে (কারণ হোলের চার্জ এবং ব্যাটারীর ঋণাত্মক প্রান্তের চার্জ বিপরীত)
এবং ব্যাটারীর ধনাত্মক প্রান্ত-
১. N অঞ্চলের ইলেক্ট্রনগুলোকে জংশন থেকে N অঞ্চলের আরো প্রান্তের দিকে টেনে আনবে (কারণ ইলেক্ট্রনের চার্জ এবং ব্যাটারীর ধনাত্মক প্রান্তের চার্জ বিপরীত)
২. P অঞ্চলের হোলগুলোকে জংশন থেকে P অঞ্চলের দিকে ঠেলে দিবে (কারণ হোলের চার্জ এবং ব্যাটারীর ধনাত্মক প্রান্তের চার্জ সমপ্রকৃতির)
এইক্ষেত্রে ভোল্টেজ বাড়াতে থাকলে ডিপলেশন স্তর সম্প্রসারিত হতে থাকবে (যেহেতু আধান বাহকের চাপ কমে যাচ্ছে); নির্দিষ্ট সীমার অতিরিক্ত ভোল্টেজ প্রয়োগ করলে আয়োনাইজেশন বা টানেলিং প্রক্রিয়ায় ডায়োডের মধ্য দিয়ে তড়িৎ-প্রবাহ হতে থাকে। এই ভোল্টেজকে ব্রেকডাউন ভোল্টেজ বলে। এটি লক্ষ্য করা জরুরি যে যদিও একে ব্রেকডাউন ভোল্টেজ বলা হয়, এর ফলে ডায়োডের পদার্থগত কোন ক্ষতি বা পরিবর্তন ঘটে না, শুধুমাত্র এর বিপরীতমুখী (N থেকে P অঞ্চলের দিকে) তড়িৎ-প্রবাহ রোধের ক্ষমতা লোপ পায়। বিভব পার্থক্য ব্রেকডাউন ভোল্টেজের নিচে নেমে এলে ডায়োড পুনরায় তার একমুখী তড়িৎ পরিবহনের ক্ষমতা (রেকটিফিকেশন)ফেরত পায়। তবে উচ্চ বিভব পার্থক্যে উচ্চ তড়িৎ প্রবাহ ডায়োডে উচ্চ তাপমাত্রা তৈরি করে যা একটি নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করলে ডায়োডটি পুড়ে যেতে পারে, বা ডায়োডের ধাতব সংযোগ ও বহিঃআবরণ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এ কারণে উচ্চ তাপমাত্রা ও উচ্চ বিভব পার্থক্যে যেসব ডায়োড ব্যবহৃত হয় (বিশেষত পাওয়ার ইলেকট্রনিক্সে) সেগুলো তৈরিতে তাপসহ ধাতব সংযোগ ও বহিঃআবরণ প্রস্তুত করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ[৮]

শকলি ডায়োড সূত্রঃ

যেকোন ডায়োডের দুই প্রান্তে বিভব-পার্থক্যের পরিবর্তনের সাথে তড়িৎ প্রবাহের পরিবর্তন শকলি আদর্শ ডায়োড সূত্র মেনে চলে। সূত্রটি হচ্ছে-

{\displaystyle I=I_{\mathrm {S} }\left(e^{V_{\mathrm {D} }/(nV_{\mathrm {T} })}-1\right),\,}

যেখানে,

I ডায়োডে তড়িৎ প্রবাহ,

IS হলো বন্ধ বা অফ অবস্থায় তড়িৎ প্রবাহ যে নিম্নমাত্রায় গিয়ে ঠেকে,

VDহলো ডায়োডের বিভব,

VT হলো তাপীয় বিভব, এবং

n হলো আইডিয়ালিটি ফ্যাকটর যাকে কোয়ালটি ফ্যাকটর বা এমিশন সহগও বলা হয়ে থাকে।

তাপীয় বিভব VT একটি তাপমাত্রা-সংবেদী ধ্রুবক যাকে প্রকাশ করা হয়ঃ

{\displaystyle V_{\mathrm {T} }={\frac {kT}{q}}\,,}

যেখানে k হলো বল্টজম্যান ধ্রুবক, T হলো পরম তাপমাত্রা পি-এন সংযোগের এবং q হলো একটি ইলেকট্রনের আধানের মান। কক্ষ তাপমাত্রায় (৩০০ কেলভিন) তাপীয় বিভবের মান প্রায় ২৫.৬২৯ মিলিভোল্ট।

আইডিয়ালিটি ফ্যাক্টর নির্দেশ করে ডায়োডের আই-ভি বৈশিষ্ট্য শূণ্যস্থানে থার্মায়োনিক নিঃসরণের কতটা কাছাকাছি। একটি আদর্শ পি-এন জাংশন ডায়োডে তড়িৎ-প্রবাহ শুধুমাত্র গৌণ আধান বাহকের (N অঞ্চলে হোল ও P অঞ্চলে ইলেকট্রন) মাধ্যমে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আইডিয়ালিটি ফ্যাক্টরের মান হয় ১। শটকি ডায়োডে তড়িৎ-প্রবাহ ঘটে মুখ্য আধান বাহকের মাধ্যমে এবং এক্ষেত্রেও n-এর আদর্শ মান ১। প্রকৃত ডায়োড সাধারণত আদর্শ মান থেকে বিচ্যুতি প্রদর্শন করে। তবে বিশুদ্ধ ও উন্নতমানের ক্রিস্টাল থেকে তৈরি ডায়োডে এর মান ১ থেকে ২ এর মধ্যে থাকে। তবে পি-এন জাংশন ডায়োডে অতি উচ্চমাত্রার বিভব পার্থক্য তৈরির মাধ্যমে গৌণ আধানের সংখ্যা একটি নির্দিষ্ট মাত্রা অতিক্রম করালে (High injection condition) তা স্থানীয় আধান-নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে গিয়ে মুখ্য আধানেরও ব্যাপন ঘটায় (ambipolar transport)। এক্ষেত্রে আইডিয়ালিটি ফ্যাক্টরের মান দাঁড়ায় ২।

ব্যবহারঃ 

ডায়োডের প্রতীকজেনার ডায়োডের প্রতীকশটকি ডায়োডের প্রতীকটানেল ডায়োডের প্রতীক
ডায়োডজেনার ডায়োডশটকি
ডায়োড
টানেল
ডায়োড
LED symbol.svgPhotodiode symbol.svgVaricap symbol.svgSCR symbol.svg
লাইট ইমিটিং
ডায়োড
ফটোডায়োডভেরিক্যাপসিলিকন কন্ট্রোল্ড রেকটিফায়ার

নানা ধরণের ডায়োডের বর্তনী প্রতীক

রেডিও সংকেত ডিমড্যুলেশনঃ

অ্যাম্পলিচ্যুড মড্যুলেটেড(এএম) রেডিও সংকেত গ্রহণ ও তার মর্মোদ্ধারের (ডিমড্যুলেশন) জন্য ডায়োড ব্যবহার করা হয়। সারাংশ হলো একটি এএম সংকেতে পরিবর্তনশীল ঋণাত্নক ও ধনাত্নক চূড়া দেখা যায় যার বিস্তার বা এনভেলপ হলো মূল অডিও সংকেতে সমানুপাতিক। এএম রেডিও সংকেত ডায়োডের মধ্য দিয়ে গেলে এমন একটি সংকেতে পরিবর্তিত হয় যা থেকে একটি সাধারণ ফিল্টার ব্যবহার করে তথ্যবাহী মূল রেডিও সংকেতটি বের করে আনা যায়। পরে ট্রান্সডিউসার এবং অডিও অ্যাম্পলিফায়ার ব্যবহার করে তা থেকে শব্দ তরঙ্গ সৃষ্টি করা হয়।

শক্তির রূপান্তরঃ 

রেকটিফায়ার মূলত ডায়োডের মাধ্যমে গঠিত হয় যা পরিবর্তনশীল তড়িৎ প্রবাহকে একমুখী প্রবাহে পরিণত করে। আধুনিক ইলেকট্রনিক সরঞ্জামের (কম্পিউটার, মুঠোফোন, টিভি ইত্যাদি) ভেতরের বর্তনীগুলো নিম্ন-বিভবের ডিসি কারেন্ট দিয়ে চালিত হয়। এসব যন্ত্রে রেকটিফায়ার একটি অপরিহার্য অংশ যা বিদ্যুত লাইনের এসি কারেন্টকে ডিসিতে রূপান্তরিত করে। অপর একটি উদাহরণ হলো অটোমোটিভ অল্টারনেটর যেখানে ডায়োড এসি কারেন্টকে ডিসি কারেন্টে রূপান্তরিত করে যা প্রথমদিকে ডায়নামোতে ব্যবহৃত কম্যুটেটরের থেকে ভালো ফলাফল দিয়ে থাকে।

অতিরিক্ত বিভবের থেকে সুরক্ষাঃ 

বৈদ্যুতিক সরঞ্জামে অতিরিক্ত বিভবের হাত থেকে সুরক্ষা দিতে মূল বর্তনীর সাথে সমান্তরালভাবে ডায়োড ব্যবহার করা হয়। সেগুলো সাধারণ অবস্থায় এরা রিভার্স বায়াস বা বিমুখী ঝোঁকে থাকে। কিন্তু কোন কারণে বর্তনীর ভোল্টেজ অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়ে গেলে তা ফরওয়ার্ড বায়াসড (সম্মুখী ঝোঁক) হয়ে যায় এবং অতিরিক্ত তড়িৎ-প্রবাহ মূল বর্তনীর সাথে ভাগ করে নিয়ে তাকে পুড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। উদাহরণ- মোটর নিয়ন্ত্রক ও রিলেতে বৈদ্যুতিক কুন্ডলীকে শক্তিহীন করতে এটা ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও বিদ্যুত লাইনে সংযুক্ত অনেক ইন্টিগ্রেটেড বর্তনীতে এটা ব্যবহার করা হয় ট্রান্সজিস্টরকে অতিরিক্ত বিভবের হাত থেকে রক্ষা করতে।

লজিক গেটঃ 

ইন্টিগ্রেটেড অর্ধপরিবাহী বর্তনীতে অ্যান্ড এবং অর লজিক গেটে ডায়োড ব্যবহার করা হয়। এগুলোকে ডায়োড লজিক হিসেবে ব্যবহার করা যায়।

তাপমাত্রা নির্ণয়ঃ 

ডায়োডের সম্মুখ বিভবের পতন নির্ভর করে তাপমাত্রার ওপর, তাই ডায়োডকে তাপমাত্রা নির্ণয়ের কাজে ব্যবহার করা যায়। সিলিকন ব্যান্ড গ্যাপ টেম্পারেচার সেন্সর এমন একটি যন্ত্র। সাধারণত সিলিকন ডায়োডের তাপমাত্রা সহগ হলো -২ মিলিভোল্ট/সেলসিয়াস অর্থাৎ, প্রতি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে ডায়োডের বিভব ২ মিলিভোল্ট হ্রাস পায়।

সৌর কোষ ও আলোক-সংবেদী বর্তনীতেঃ 

সৌর কোষ মূলত একটি মৃদু বিমুখী ঝোঁকে থাকা ডায়োড। সূর্যের আলো ডায়োডে এসে পড়লে তার ডিপ্লেশন অঞ্চলে নতুন ইলেকট্রন ও হোল জন্ম নেয়। ডিপ্লেশন অঞ্চলের আয়নিত অণুগুলোর তড়িৎক্ষেত্রের টানে এসব ইলেকট্রন ও হোল বিপরীত দিকে বাহিত হয়, যা তড়িৎশক্তি রূপে ডায়োডের প্রান্তে আবির্ভূত হয়। আলোক-সংবেদী কোষগুলোও একই কৌশলে কাজ করে। এ কোষগুলো আলোক ও বস্তুবিজ্ঞানের গবেষণায় বহুল ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের কোষের আরেকটি প্রয়োগ উচ্চশক্তির বিকিরণ, যেমন নিউক্লিয়ার বিকিরণ শনাক্ত ও পরিমাপ করা। তবে এ প্রযুক্তি এখনো তার শৈশব অতিক্রম করেনি।

বিভিন্ন প্রকার Diode এর নাম হলঃ 

  1. Small Signal Diode
  2. Large Signal Diode
  3. Zener Diode
  4. Light Emitting Diode(LED)
  5. Constant Current Diode
  6. Schottky Diode
  7. Shockley Diode
  8. Peltier Diode
  9. Crystal Diode
  10. Silicon Controlled Rectifier Diode
  11. Step Recovery Diode
  12. Tunnel Diode
  13. Varactor Diode
  14. Laser Diode
  15. Photo Diode
  16. Transient Voltage Suppression Diode
  17. Gold Doped Diode
  18. Super Barrier Diode
  19. Vacuam Diode
  20. Point Contact Devices Diode
  21. Gunn Diode
  22. Avalanche Diode
  23. Pin Diode 

  24. উইকিপিডিয়া ও ইন্টারনেট হতে তথ্য, ছবি সংগৃহীত

No comments:

Post a Comment

সাম্প্রতিক পোস্ট সমূহ

Recent Posts Widget