আমি ইলেকট্রন, আমাকে যদি বুর্জ খলিফার উপরে h উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া হয় তাহলে mgh বিভব শক্তি সঞ্চয় করব।
এখন যদি h উচ্চতা থেকে আবার লাফ দি তাহলে আমার বিভব শক্তি শূন্য হয়ে যাবে।অর্থাৎ উচ্চ স্থান থেকে নিম্ন স্থানে গিলে এনার্জি লস হয়। আবার উচ্চ এনার্জি অর্জন করতেও বাইরে থেকে শক্তি প্রয়োগ প্রয়োজন।
ঠিক একই কাজ পরমাণু তে সাব এটমিক পার্টিকেলেও ঘটে।
যদি ভ্যালেন্স ব্যান্ড থেকে বাইরের কোন শক্তির মাধ্যমে ইলেকট্রন কে এক্সাইট করে কন্ডাকশন ব্যান্ড এ নেওয়া হয় তাহলে এটি এনার্জি অর্জন করবে।
আবার যদি এটি নিচের ব্যান্ড এ নেমে আসে তাহলে সেই এনার্জি লস করবে।
এই লস ফোটন/ আলো অথবা ফোনন/ হিট আকারে হবে।
আমরা বেসিক ডায়োড এর ভিডিও তে দেখেছি যে, যখন ডায়োড ফরোয়ার্ড বায়াস পায় তখন এটির ডেফ্লেশন লেয়ার চেপে গিয়ে ইলেকট্রন ফ্লো হয়।
n type সেমিকন্ডাক্টর এ ইলেকট্রন কন্ডাকশন ব্যান্ড এ থাকে। এবং পি টাইপে ব্যালেন্স ব্যান্ড এ থাকে। কারন এন টাইপে মেটাল এটম বা ধাতু দিয়ে এন টাইপে পরিণত করা হয়েছে। এবং পি টাইপে অধাতু এটম ব্যবহার করায় এন টাইপের থেকে পি টাইপের এনার্জি কম থাকবে।
ফলে এন টাইপ থেকে পি টাইপ এ ইলেকট্রন ফ্লো হবে তখন PN জাংশন এ Hole Electron এক সাথে মিশবে, এই প্রক্রিয়া কে Hole electron recombination বলে।
ফলে উচ্চ শক্তি স্থর থেকে ইলেক্ট্রন কম শক্তি স্থরে আসার কারনে একটি এনার্জি লস করবে। এই এনার্জি লস হিট আকারে হয় সাধারণ ডায়োড আর LED বা light emiting diode এ বিভিন্ন রং এর আলো নির্গত হয়। কি রং এর আলো নির্গত হবে সেটা কি পরিমান এনার্জি লস হয় তার উপর নির্ভর করে।
কি পরিমান এনার্জি লস করবে এটি বের করার জন্য। E=hv ফরমূলা ব্যবহার করা হয়।
h হলো প্লানক্স ধ্রুবক, আর V এখানে ফ্রিকোয়েন্সী।
এই ফ্রিকোয়েন্সী কি জেনে নি।
মনে করুন, সেই বুর্জ খলিফা তে আবার যাই,Ev থেকে ইলেক্ট্রন Ec তে যাচ্ছে, আবার Ec থেকে Ev তে ফিরে আসছে এটা যদি একটি চক্র ধরি। তাহলে এই পুরো চক্র বা কাজ টি যদি ১ সেকেন্ড এ হয় এটা তাহলে ১ ফ্রিকোয়েন্সী বলবে। অর্থাৎ ফ্রিকোয়েন্সী হলো যে কোন কাজ পূর্ণ সাইকেল/ চক্র ১ সেকেন্ড এ যতবার হবে সেটাই ফ্রিকোয়েন্সী।
এটিতে ইলেকট্রন Ec থেকে Ev হয়ে আবার Ec তে আসছে সেকেন্ড এ একবার এটার ফ্রিকোয়েন্সী ১।
এবার একই সময়ে ২ বার ঘটছে তাই ফ্রিকোয়েন্সী ২\
এবার একই সময়ে ৮ বার ঘটছে তাই ফ্রিকোয়েন্সী ৮/
অর্থাৎ কাজটি যত দ্রুত ঘটে ফ্রিকোয়েন্সী তত বেশি হবে।
ধরি,
ইলেকট্রন সাইন ওয়েব আকারে প্রবাহিত হয়।
এই ওয়েভের একটি সাইকেল এর দূরত্ব কে ওয়েবলেন্থ বলে। এটিকে ল্যামডা দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
ফ্রিকোয়েন্সী ১ এ ধরলাম এই দূরত্ব ১ মিটার।
এখন ফ্রিকোয়েন্সী বেড়ে ২ হলে, একই সময়ে দুইটি পুর্ণ সাইকেল দিচ্ছে ফলে এর ওয়েব লেন্থ কমে যাচ্ছে, আগের থেকে অর্ধেক, ফলে ওয়েভ লেন্থ হবে-২।
এরুপ ফ্রিকোয়েন্সী বেড়ে ৮ হয় তাহলে ওয়েভ লেন্থভো কমে ১/৮ হবে।
অর্থাৎ ফ্রিকোয়েন্সী যত বাড়ছে ওয়েভলেন্থ তত কমছে।
ফ্রিকোয়েন্সী ও ওয়েভলেন্থ একটি ফরমূলা দ্বারা প্রকাশ করা যায়। v=c/lamda, এখানে C হলো আলোর বেগ।
তাহলে, এনার্জির সমীকরণ এ বসালে এই সূত্র টি পাওয়া যায়।
এই সমীকরণ থেকে জানা যাবে, কোন পর্দার্থের এনার্জি ব্যান্ড থেকে কি ওয়েব লেন্থ এর ফটোন/ ফনোন নির্গত হয়।
এটি হলো ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক স্পেক্ট্রাম। এত দীর্ঘ স্প্রেক্ট্রাম থেকে শুধু আমরা ৪০০-৭০০ ন্যানোমিটার রেঞ্জের আলো দেখতে পায়।
তবে বিভিন্ন প্রযুক্তির সহায়তায় বর্তমানে, বাকী স্প্রেক্ট্রাম এর আলো সম্পর্কে ধারণা ও ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে।
এই ৪০০-৭০০ ন্যানোমিটার এর আলো নির্গত করতে ব্যান্ড গ্যাপ এনার্জি ১.৬ থেকে প্রায় ৩.২ প্রয়োজন।
আপনারা বিভিন্ন রং এর আলোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যান্ড গ্যাপ, ওয়েব লেন্থ ও তার ফ্রিকোয়েন্সী দেখতে পারছেন।
এই বিভিন্ন নির্দিষ্ট মানের ব্যান্ড গ্যাপ তৈরি করতে, বিভিন্ন এটম মিক্সড করে তৈরি করা যায়।
এখন, এনার্জির সূত্র দিয়ে, GaAS এর জন্য ব্যান্ড গ্যাপ এনার্জি থেকে কিভাবে ওয়েব লেন্থ বের করা হয় এটি দেখব।
এর ব্যান্ড গ্যাপ-১.৪২৪।
ল্যামডা সমান এটি লেকা যায়।
ভগ্নাংশ এর লবে প্লানকের ধ্রুবক এর মান ও আলোর বেগ এর মান বসিয়ে দি।
হর এ এনার্জি কে জুল এককে নেওয়ার জন্য, একটি ইলেকট্রন এর চার্জ দ্বারা গুন করেছি।
সমাধান করলে ৮৭১ ন্যানো মীটার হয়।
এটি ইনফ্রারেড আলোর ওয়েভ লেন্থ।
দৃশ্যমান আলো তৈরি করতে Ga ও As এর অনুপাত কম বেশি করে এটি পরিবর্তন করা যাবে।
এছাড়া অন্য বিভিন্ন এটম মিশিয়েও বিভিন্ন ব্যান্ড গ্যাপ সৃষ্টি করা যাবে।
এই ন্যানোমিটার কি সেটা একটু জেনে নি। এটা আসলে কতটা ছোট।
আমাদের মাথার চুল প্রায় ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ন্যানোমিটার। অর্থাৎ একটি চুল কে ১ লক্ষ ভাগ করলে সেটি এক ন্যানোমিটার হবে।
আমাদের বই এর কাগজ এর পৃষ্ঠা প্রায় ৭৫০০০০ ন্যানোমিটার।
আমাদের হাতের নখ প্রায় প্রতি সেকেন্ড এ ১ ন্যানোমিটার করে বাড়ে।
এখন, LED তৈরি তে আমাদের প্রয়োজন দৃশ্যমান আলো তৈরি। সেজন্য আমাদের এমন সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করতে হবে যেন এই ব্যান্ড গ্যাপ দৃশ্য মান আলো তৈরি করতে পারে।
এখন দেখি কিভাবে LED তৈরি করা হয়।
প্রথমে একটি সাবস্ট্রেট নেওয়া হয়। এর উপর সেমিকন্ডাক্টর সমূহ বসানো হয়।
এর পর এন টাইপ সেমিকন্ডাক্টর ও
তার উপর পি টাইপ সেমিকন্ডাক্টর বসানো হয়।
এর পর বাইরে থেকে বায়াসিং এর জন্য পি টাইপের উপর একটি প্লেট যুক্ত করা হয়।
আলো কে একমূখী করার জন্য একটি রিফ্লেক্টিভ কন আকৃতির কেভ বসানো হয়।
এর পর একটি রডের সাথে পি টাইপ ও অপর একটি রোডের সাথে এন টাইপ সংযোগ দেওয়া হয়।
পুরোটা একটি এপোক্সি লেন্স বা কাভার দ্বারা ঢেকে দেওয়া হয়।
ক্যাথোড বোঝার জন্য LED এর পাশে এই রকম কিছুটা কাটা থাকে, আর অন্যটি এনোড।
কিছু ক্ষেত্রে এনোড টা ক্যাথোড এর থেকে লম্বা থাকে।
এইভাবে বিভিন্ন রং এর আলো তৈরি করার জন্য বিভিন্ন মিক্সড পদার্থ ব্যবহার করা হয়।
একই সাথে তিন রং এর আলো তৈরি করার জন্য একটি এন টাইপ সেমিকন্ডাক্টর এর উপর তিনটি পি টাইপ সেমিকন্ডাক্টর বসানো হয়। এইভাবে RGB অর্থাৎ Red, Green ও Blue রং এর আলো তৈরি করা যাবে, একটি LED দিয়েই। বাইরে থেকে কন্ট্রোলিং ইউনিট বা আইসি দ্বারা এটিকে বিভিন্ন রং এর আলো তৈরি করা সম্ভব।
তিনটি রং একসাথে জ্বললে এটি থেকে সাদা আলো নির্গত হবে।
এইভাবে সাদা রং এর আলো তৈরি করা কম্পলিকেটেড। এই জন্য ব্লু লাইট এর উপর ফসফরাসের কোটিং দিয়ে সাদা রং তৈরি করা সম্ভব।
ভিডিওটি দেখতে পারেন ।
No comments:
Post a Comment