Friday, December 1, 2023

জেনেরেটর কি? কত প্রকার ও কি কি? এসি ও ডিসি জেনারেটর এর প্রকারভেদ

 

প্রশ্নঃ জেনেরেটর কি

উত্তরঃ  যে যন্ত্রের সাহায্যে যান্ত্রিক শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রুপান্তরিত করা হয় তাকে জেনেরেটর বলে। এই রাপান্তরন প্রকিয়া সম্পাদনের জন্য Magnetic field তৈরির প্রয়োজন হয়।

জেনেরেটর এ আরমেচার এর উপরিভাগে তারের কয়েল বসানো থাকে। চুম্বকক্ষেত্রের ভিতরে আরমেচারটিকে ঘুরানোর জন্য প্রয়োজন হয় একটি প্রাইমমুভার (ইঞ্জিন)। আরমেচার কয়েলকে যদি চুম্বক্ষেত্রের মধ্যে ঘুরানো হয় তবে আরমেচার পরিবাহীতে ভোল্টেজ উৎপন্ন হয় তবে তাকে EMF (Electro motive Force) বলে।
 

জেনেরেটর সাধারনত দুই প্রকার

১। এসি জেনারেটর
২। ডিসি জেনারেটর

অল্টারনেটরের(এ সি জেনারেটর) মুলতত্ত্বঃ 

তড়িৎ-চৌম্বক আবেশের (Electromagnetic induction) তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে অল্টারনেটর তৈরি করা হয়। ডি সি জেনারেটরের মত অল্টারনেটরেও আর্মেচার ও চৌম্বকক্ষেত্র থাকে। অল্টারনেটরে আর্মেচার ওয়াইন্ডিং একটি স্থির কাঠামোর উপর বসানো থাকে। একে স্টেটর বলা হয়। আর মেশিনের চৌম্বক কয়েল একটি ঘূর্ণনশীল কাঠামোর উপর বসানো থাকে যাকে রোটর বলা হয়। একটি ঢালাই লোহার ফ্রেমের সাথে আর্মেচার ও স্টেটরের কেন্দ্রভাগ আটকানো থাকে। কেন্দ্রভাগের ভিতরের দিকে ওয়ান্ডিং বসানোর জন্য খাঁজ কাটা থাকে। রোটরের বাইরের দিকে পর্যায়ক্রমে দক্ষিণ ও উত্তর মেরু সৃষ্টি হয়। পোলের গায়ে জড়ানো কয়েল দিয়ে ডি সি সাপ্লাই থেকে ১২৫ কিংবা ২৫০ ভোল্টে বিদ্যুত প্রবাহিত হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ডি সি প্রবাহ দেয়ার জন্য রোটর শ্যাফ্‌টের সঙ্গে সংযুক্ত একটি ছোট শান্ট জেনারেটর ব্যবহার করা হয় যাকে এক্সাইটার বলা হয়। এক্সাইটার থেকে বিদ্যুত কারেন্ট ব্রাশ ও স্লিপ রিং হয়ে কয়েলে জায়। রোটর ঘুরতে আরম্ভ করলে সে সঙ্গে চুম্বক বলরেখাও ঘুরতে থাকে। ঘুরন্ত চৌম্বক বলরেখা যখন স্টেটরের খাঁজে বসানো পরিবাহকগুলোকে ছেদ করে, তখন তড়িৎ-চুম্বকীয় আবেশের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি পরিবাহকে তড়িচ্চালক শক্তি আবিষ্ট হয়। আবিষ্ট পরিবাহকের অভিমুখ ফ্লেমিং এর দক্ষিণ হাত নিয়ম থেকে জানা যায়। এ নিয়ম প্রয়োগ করলে দেখা যায় কোন পরিবাহকের সামনে যখন দক্ষিণ প্রান্ত এসে দাঁড়ায় তখন আবিষ্ট তড়িচ্চালক শক্তি ও বিদ্যুৎ যে দিকে কাজ করে উত্তর প্রান্ত আসলে তার বিপরিত হয়। ফলে আর্মেচারের আবিষ্ট তড়িচ্চালক শক্তিও তড়িৎ দিক পরবর্তি হয়।

এসি জেনারেট এর গঠন

বর্তমান যুগে এসি জেনারেটরের প্রচলন সবচেয়ে বেশি। এসি জেনারেটরে একটি ক্ষেত্রচুম্বক থাকে এবং চুম্বকের মাঝখানে ১ টি কাঁচা লোহা এর পাতের উপর তারের একটি আয়তাকার কুন্ডলী থাকে। এখানে যে কাঁচা লোহার পাত থাকে সেটাকে আর্মেচার বলা হয়ে থাকে। এখন এই আর্মেচারকে চুম্বকের দুই মেরুর ঠিক মাঝখানে যান্ত্রিক শক্তি দিয়ে সমান দ্রুতিতে ঘুরানো হয় । দুই প্রান্তের দুইটি স্প্রিং এর সাথে আয়তাকার কুন্ডলী সংযুক্ত থাকে। এই স্প্রিং দুটি আর্মেচারের একই অক্ষ এর বরাবর ঘুড়তে পারে। এমনভাবে কার্বন নির্মিত দুইটি ব্রাশ স্থাপন করা হয় যাতে আর্মেচার ঘুরার সময় স্প্রিং দুটিকে স্পর্শ করে এবং ব্রাশ দুটির সাথে বহিবর্তনীর রোধ সংযুক্ত থাকে। মুলত এটি একটি জেনারেটের এর গঠন প্রানালী ।

 

এসি জেনারেট এর কার্যপ্রনালী

যখন আরমেচারকে ঘুরানো হয় ঠিক তখন আর্মেচার কুন্ডলী চম্বুকক্ষেত্রের বলরেখাগুলো কে ছেদ করে এবং তাড়িতচৌম্বক আবেশের নিয়মান অনুযায়ী কুণ্ডলীতে তড়িৎ চালক শক্তি আবিষ্ট হয় এবং কুণ্ডলীর দুই প্রান্ত বহিবর্তনীর সাথে সংযুক্ত থাকার কারনে বর্তনীতে পর্যাবৃত্ত তড়িৎ প্রবাহের উৎপত্তি হয় । এই আবিশষ্ট তরিৎ প্রবাহেরে মান সাধারনত চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রাবল্য এবং ঘূর্ণন বেগ এর উপর নির্ভর করে। কুন্ডলীর ১ বার ঘুর্ননের মধ্যে আবিষ্ট তড়িৎ প্রবাহের অভিমুখও ১ বার পরিবর্তিত হয় এবং এভাবেই যান্ত্রিক শক্তি হতে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপন্ন করা হয়।

অল্টারনেটরের(এ সি জেনারেটর) বিভিন্ন অংশের তালিকাঃ

অল্টারনেটরের প্রধান অংশ তিনটি:

  • স্টেটর
  • রোটর
  • এক্সাইটার

স্টেটরঃ

বড় বড় অল্টারনেটরের স্টেটর দুই ধরনের হয়ে থাকে:

  • ফ্রেম বা ইয়ক
  • স্টাম্পিং

রোটরঃ

অল্টারনেটের রোটর দুই ধরনের:

  • স্যালিয়েন্ট পোল
  • নন স্যালিয়েন্ট পোল

 

এসি জেনারেটর এর প্রকারভেদ

এসি জেনারেটর দুই প্রকার

১। ইন্ডাকশন জেনারেটরঃ ইন্ডাকশন জেনারেটর সাধারন জেনারেটর এর মতই অল্টারনেটিং কারেন্ট জেনারেটর এবং সাধারন জেনারেটর এর মত একই কার্যপ্রনালীতে কাজ করে। এই জেনারেটর এর কার্যপ্রনালী ট্রান্সফর্মারের মতই শুধু পার্থক্য হল ট্রান্সফরমার একটি স্ট্যাটিক ডিভাইস এবং জেনারেটর একটি ঘুর্নায়মান ডিভাইস। এগুল সাধারনত ছোট মেশিন যেমন মিক্সার এ ব্যাবহার হয়।

২। সিঙ্ক্রোনাস জেনারেটরঃ এই জেনারেটর হচ্ছে অল্টারনেটিং কারেন্ট জেনারেটর যেটা সিঙ্ক্রোনাস স্পিডে ঘুরে। এগুলো পাওয়ার প্লান্টে ব্যবহার করে হয় এদের উচ্চতর দক্ষতার কারনে। সিঙ্ক্রোনাস জেনারেটর ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ইন্ডাকশনের ফ্যারাডের সুত্র অনুসারে কাজ করে।

 

সুবিধা

  • সাধারন ডিজাইন
  • ছোট সাইজের হয়
  • লস খুব কম হয়
  • কম মেইন্টেন্যান্স এর প্রয়োজন হয়।
  • ব্রেকার এর সাইজ তুলানামুলক ছোট হয়।

ডিসি জেনারেটর

ডিসি জেনারেটর হচ্ছে ডাইরেক্ট কারেন্ট জেনারেটর যা হচ্ছে একপ্রকারের ইলেক্ট্রিক্যাল মেশিনের মত কাজ করে যা মেকানিক্যাল এনার্জিকে ডাইরেক্ট কারেন্টে রুপান্তর করে। এই রুপান্তরন প্রকিয়াটি Induced EMF এর নিতী অনুসরন করে।

 

ডিসি জেনারেটরের এর গঠন

ডিসি জেনারেটরকে ডিসি মোটর হিসেবে ব্যাবহার করা যায় কোনরকম পরিবর্তন ছাড়াই। তাই ডিসি মোটর বা জেনারেটরকে ডিসি মেশিন হিসেবে বলা যেতে পারে। ডিসি মেশিন স্ট্যটর এবং রোটর সাধারনত এই দুইটি অংশ দ্বারা গঠিত। ৪ পোল ডিসি মেশিনের গঠন প্রানলী নিম্নে দেওয়া হলঃ
 

ডিসি জেনারেটরের বেসিক কম্পনেন্ট সমুহ

ইয়োকঃ মেশিনের বাইরের আবরনীকে ইয়োক বলা হয়। এটি কাষ্ট আয়রন বা স্টিল দারা তৈরি করা হয়। সম্পুর্ন এসেম্বলিকে ধরে রাখে এটি।

পোলসঃ পোল গুলো ইয়োকের সাথে বোল্ট দ্বারা যুক্ত করা হয়। পোল এর সাথে ফিল্ড উয়ান্ডিং পেচানো থাকে।

ফিল্ড উয়ান্ডিংঃ ফিল্ড উয়ান্ডিং কপার দ্বারা তৈরি করা হয়। এগুলো প্রত্যেক পোল এর সাথে পেচানো অবস্থায় সিরিজে যুক্ত থাকে।

আর্মেচার কোরঃ এটি হচ্ছে ডিসি মেশিনের রোটর। এটি দেখতে সিলিন্ডার আকৃতির শেপ, অনেকগুলো স্লট দ্বারা তৈরী যা আর্মেচার উয়ান্ডিং গুলো বহন করে। আর্মেচার পাতলা লেমিনেটেদ গোলাকার স্টিলের ডিস্ক দিয়ে তৈরি যেন Eddy কারেন্ট লস না হয়।

 আর্মেচার উয়ান্ডিংঃ এটা হচ্ছে প্যাচানো কপার কয়েল যা আর্মেচার স্লটের মধ্যে থাকে। আর্মেচার কন্ডাক্টর গুলো ইন্সুলেটেড থাকে একটা থেকে অন্যটা থেকে এবং আরমেচার কোর থেকেও আলাদা থাকে।

কমুটেটরঃ এটি দেখতে সিলিন্ডার আকৃতির এবং এখানেই কারেন্ট স্টোর হয়ে থাকে এবং পরবর্তী স্টিপে সঞ্চালনের জন্য তৈরি হয়।

ব্রাশঃ এটি মুলত কন্টাক্ট সাপ্লাই দেওয়ার জন্য ব্যাবহার করা হয়। এবং আউটপুট সাপ্লাই ও এখান থেকেই হয়।
 

ডিসি জেনারেটর এর প্রকারভেদ

১.সেলফ এক্সাইটেড ( Self excited) - এই ধরনের জেনারেটর এ ফিল্ড কয়েল গুলো এনারজাইজড হয় জেনেরেটর দ্বারা উৎপাদিত কারেন্ট দ্বারা। এই জেনেরেটর আবার তিন ধরনের হয়ঃ

a) সিরিজ জেনারেটর  b) শান্ট জেনারেটর  c) কম্পাউন্ড জেনারেটর।

২. সেপারেটলি এক্সাইটেদ ( Separately excited) - এই ধরনের জেনারেটর এ ফিল্ড কয়েল গুলো এনারজাইজড হয় স্বাধীন বহির্মুখী ডিসি উৎস থেকে।

সুবিধাঃ

  • অতি সাধারন ডিজাইন
  • অপারেশন সহজ

 

১। জেনারেটর কাকে বলে?

উত্তরঃ জেনারেটর এমন একটি যন্ত্র বা মেশিন যার সাহায্যে যান্ত্রিক শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা হয়।

২। স্ট্রে লস কি?

উত্তরঃ সাধারণত ম্যাগনেটিক এবং মেকানিক্যাল লসগুলোকে যৌথভাবে স্ট্রে লস বলা হয়।

৩। ডিসি জেনারেটরের প্রধান অংশ কি কি?

উত্তরঃ ডিসি জেনারেটরের প্রধান অংশ দুটি যথাঃ ইলেকট্রিক্যাল সার্কিট ( ফিল্ড কয়েল, আর্মেচার ওয়াইন্ডিং, কম্যুটেটর, ব্রাশ) ও ম্যাগনেটিক সার্কিট (ফ্রেম, পোল কোর, পোল স্যু, আর্মেচার কোর, এয়ার গ্যাপ)।

৪। ডিসি জেনারেটরের আবিষ্ট ই.এম.এফ কি কি বিষয়ের উপর নির্ভরশীল?

উত্তরঃ চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রাবল্য, আর্মেচার কন্ডাক্টরের দৈর্ঘ্য এবং আর্মেচার কয়েলের টার্ন সংখ্যা, আর্মেচারের গতিবেগ।

আরো জানুন>>সার্কিট ১ প্রশ্ন ও উত্তর

৫। এক্সাইটেশন অনুযায়ী ডিসি জেনারেটর কত প্রকার?

উত্তরঃ এক্সাইটেশন অনুযায়ী ডিসি জেনারেটর দুই প্রকার যথা, সেপারেটলি এক্সাইটেড এবং সেলফ এক্সাইটেড।

৬। কনস্ট্যান্ট লস কি?

উত্তরঃ ডিসি জেনারেটরের স্ট্রে লস এবং শান্ট ফিল্ড কপার লসকে একত্রে কনস্ট্যান্ট লস বলে।

৭। ডিসি জেনারেটরের লস কত প্রকার?

উত্তরঃ ডিসি জেনারেটরের লস তিন প্রকার। যথাঃ কপার লস, ম্যাগনেটিক লস, মেকানিক্যাল লস।

৮। সিরিজ জেনারেটর কাকে বলে?

উত্তরঃ যে ধরনের জেনারেটরের ফিল্ড কয়েল আর্মেচারের সাথে সিরিজে সংযোগ থাকে, তাকে সিরিজ জেনারেটর বলে।

৯। সিরিজ ফিল্ড কয়েলের তার কেমন হয়?

উত্তরঃ সিরিজ ফিল্ড কয়েলের তার তুলনামূলক ভাবে মোটা এবং অল্প সংখ্যক প্যাচের হয়।

১০। সেপারেটলি এক্সাইটেড জেনারেটর কাকে বলে?

উত্তরঃ যে ধরনের ডিসি জেনারেটরে ফিল্ড কয়েলকে পৃথকভাবে ব্যাটারি হতে বা জেনারেটর হতে কারেন্ট সরবরাহ করে উত্তেজিত করা হয়, তাকে সেপারেটলি এক্সাইটেড জেনারেটর বলে।

১১। পোল পিচ কাকে বলে?

উত্তরঃ ডিসি জেনারেটরের পাশাপাশি দুটি পোলের মধ্যবিন্দু হতে মধ্যবিন্দু পর্যন্ত দূরত্বকে পোল পিচ বলে।

১২। আর্মেচার ওয়াইন্ডিং কাকে বলে?

উত্তরঃ আর্মেচার কোরের উপরিভাগের খাজগুলোতে নির্দিষ্ট নিয়মে পরিবাহী কয়েল প্যাঁচানো কে আর্মেচার ওয়াইন্ডিং বলে।

১৩। প্রগ্রেসিভ ওয়াইন্ডিং কাকে বলে?

উত্তরঃ ল্যাপ ওয়াইন্ডিং-এ ব্যাক পিচ ফ্রন্ট পিচ অপেক্ষা বড় হলে ওয়াইন্ডিং সামনের দিকে অর্থাৎ ডানাবর্তে ক্রমাগত অগ্রসর হয়, একেই প্রগ্রেসিভ ওয়াইন্ডিং বলে।

১৪। কম্যুটেটর পিচ কাকে বলে?

উত্তরঃ ডিসি জেনারেটরের কম্যুটেটরের দু’টি সেগমেন্টের দূরত্বকে কম্যুটেটর পিচ বলে।

১৫। গড় পিচ কাকে বলে?

উত্তরঃ আর্মেচার ওয়াইন্ডিং-এর ফ্রন্ট পিচ এবং ব্যাক পিচ এর গড়কে অ্যাভারেজ পিচ বলে।

১৬। ইকুইলাইজারের কাজ কি?

উত্তরঃ ল্যাপ ওয়াইন্ডিং এর বিভিন্ন প্যারালাল পথের ভোল্টেজ সমান রাখার জন্য ইকুইলাইজার ব্যবহার করা হয়।

১৭। ফ্রন্ট পিচ কাকে বলে?

উত্তরঃ আর্মেচারের যে দিকে কম্যুটেটর থাকে, সেই দিকে একটি কয়েল যতগুলো কন্ডাক্টর কে অন্তর্ভুক্ত করে তাকে ফ্রন্ট পিচ বলে।

১৮। ল্যাপ ওয়াইন্ডিংয়ে বেশি কারেন্ট উৎপন্ন হয় কেন?

উত্তরঃ ল্যাপ ওয়াইন্ডিংয়ে অনেকগুলো প্যারালাল রাস্তা থাকায় প্যারালাল রাস্তাগুলোতে উৎপন্ন কারেন্ট একত্রিত হয়ে কারেন্টের পরিমাণ বেশি হয়। এজন্য ল্যাপ ওয়াইন্ডিংয়ে বেশি কারেন্ট উৎপন্ন হয়।

১৯। ইন্টার পোলের কাজ কি?

উত্তরঃ ইন্টারপোল আর্মেচার প্রতিক্রিয়ার ফলে আর্মেচারে ফিল্ড পোলের চৌম্বক বলরেখা আড়াআড়ি বারে উৎপন্ন চৌম্বক বলরেখাকে বিনষ্ট করে। এর ফলে ফিল্ড পোলের চৌম্বক বলরেখা বিকৃত হবে না এবং এরজন্য ব্রাশকে সরানো প্রয়োজন হয় না।

২০। আর্মেচার রিয়্যাকশন কাকে বলে?

উত্তরঃ মেশিনের পোলের চৌম্বক ক্ষেত্রের উপর আর্মেচার কন্ডাক্টরের কারেন্ট প্রবাহজনিত চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রভাবকে আর্মেচার রিয়্যাকশন বলে।

২১। ডিসি জেনারেটর এর প্রকারভেদঃ-

এক্সাইটেশন এর উপর ভিত্তি করে জেনারেটরকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়-

১। সেপারেটলি এক্সাইটেড জেনারেটর।

২। সেলফ এক্সাইটেড জেনারেটর।

সেলফ এক্সাইটেড জেনারেটর আবার তিন প্রকার-

১। শান্ট জেনারেটর।

২। সিরিজ জেনারেটর।

৩। কম্পাউন্ড জেনারেটর।

কম্পাউন্ড জেনারেটরকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-

১। শর্ট শান্ট কম্পাউন্ড জেনারেটর।

২। লং শান্ট কম্পাউন্ড জেনারেটর।

জেনারেটর এর বিভিন্ন অংশ

Untitled

ইয়ক বা ফ্রেমঃ

জেনারেটরের বাইরের আবরন বা স্তরকে ইয়ক বা ফ্রেম বলে।ছোট জেনারেটর এর ক্ষেত্রে এই ইয়কে কাস্ট আয়রন ব্যবহার করা হয় আর বড় জেনাটরের ক্ষেত্রে স্টিল ব্যবহার করা হয়।

ফিল্ড ওয়াইন্ডিং ও পোল কয়েলঃ

এটি তামার তার দ্বারা তৈরী যা প্রতিটি পোলে সুন্দর ভাবে সাজানো থাকে।

আর্মেচার কোরঃ

জেনারেটরের ভিতরে যে অংশটুকু অবিরাম ঘুরে,তাকেই আর্মেচার বলে। এটা দেখতে অনেকটা সিলিন্ডার এর মত যাতে তামার কন্ডাক্টর প্যাঁচানো থাকে।

আর্মেচার ওয়াইন্ডিংঃ

এটা হলো আর্মেচার স্লটের বাঁকি অংশ যা কন্ডাক্টর দ্বারা প্যাঁচানো থাকে।

আর্মেচারঃ

এটি জেনারেটরের ঘুরন্ত অংশ যার সাথে শ্যাফট লাগানো থাকে

কম্যুটেটরঃ

এটা দেখতে গোলাকার বিয়ারিং এর মত যার মাধ্যমে এতে কারেন্ট এসে জমা হয়ে থাকে পরবর্তী ধাপে যাবার জন্য।

ব্রাশঃ

এটা কার্বন গ্রাফাইটের তৈরি। এটা ব্রাশ কন্টাক্ট এর জন্য ব্যবহার করা হয় যা আউটপুটে সাপ্লাই দিয়ে থাকে।

স্লিপ রিংঃ

এটা কম্যুটেটর এর সাথে যুক্ত থাকে।

এসি এবং ডিসি জেনারেটর এর মাঝে পার্থক্যঃ

আমরা জানি,যেকোন জেনারেটরের আর্মেচার ওয়াইন্ডিং-এ প্রথমত পরিবর্তনশীল ভোল্টেজ বা এসি উৎপন্ন হয়।ডিসি জেনারেটরের ক্ষেত্রে এই এসিকে কম্যুটেটরের মাধ্যমে ডিসিতে রুপান্তরিত করা হয় এবং তা লোডে সরবরাহ করা হয়।এসি এবং ডিসি জেনারেটরের মূল পার্থক্য হলো একটি কম্যুটেটর।

১। প্রাইম মুভার কাকে বলে? কয়েকটি প্রাইম মুভারের নাম লিখ?

এটি এমন এক ধরনের মেশিন যার সাহায্যে যান্ত্রিক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপন্ন করা হয় আর এই বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করার জন্য একটি চুম্বক-ক্ষেত্র এবং একটি আর্মেচার যার উপরি ভাগে তারের কয়েল প্যাঁচানো থাকে এবং যাকে যান্ত্রিক শক্তির মাধ্যমে চুম্বক ক্ষেত্রে ঘুরানো হয়। আর যে যন্ত্রের মাধ্যমে একে ঘুরানো হয় তাকে প্রাইম মুভার বলে যেমনঃ টারবাইন।

এই প্রাইম মুভার পেট্রোল ইঞ্জিন ,ডিজেল ইঞ্জিন ,স্টিম টারবাইন , গ্যাস টারবাইন ,ওয়াটার টারবাইন ,গ্যাস ইঞ্জিন ,সিএনজি ইঞ্জিন হতে পারে।

২। ইঞ্জিনএ কালো ধোঁয়া উৎপন্ন হয় কেন?

ইঞ্জিনে বিভিন্ন কারনে কালো ধোঁয়া উৎপন্ন হতে পারে। যেমনঃ

ওভার লোড বা লো লোডে চললেপিস্টনের রিং বা লাইনার ক্ষয়প্রাপ্ত হলেকম্প্রেসর প্রেসার কম হলেফুয়েল ইনজেকশন টাইমিং সময় মত না হলেট্যাপেট ক্লিয়ারেন্স সঠিক না হলেভাল্ব টাইমিং সঠিক না হলে ও ইঞ্জেক্টর ত্রুটিপূর্ণ হলে।

৩। কার্বুরেটর কি?

কার্বুরেটর প্রেট্রোল ইঞ্জিনের হার্ট। এটা মূলত ইঞ্জিনের চাহিদা অনুযায়ি বিভিন্ন অনুপাতে এয়ার ফুয়েল মিক্সার করে।

৪। সুপ্ত তাপ কাকে বলে?

তাপমাত্রার কোন পরিবর্তন না ঘটিয়ে একক ভরের কোন বস্তু এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রুপান্তর হতে যে তাপ গ্রহন বা বর্জন করে তাকে ঐ বস্তুর সুপ্ততাপ বলে।

৫। ইঞ্জিনে সাদা ধোঁয়া উৎপন্ন হয় কেন?

ইঞ্জিনে সাদা ধোঁয়া বিভিন্ন কারনে হতে পারে তবে এর মধ্যে রয়েছেঃ

কম্বাশন চেম্বারে পানি প্রবেশ করলেজ্বালানি দূষণ হলেইঞ্জিনের তাপমাত্রা মাত্রা-অতিরিক্ত হলেফুয়েল ইঞ্জেকশন টাইমিং বেশি হলে।

 

প্রশ্নঃ পিস্টন রিং সংক্ষিপ্ত ভূমিকা আলোচনা কর? 

উত্তরঃ  পিস্টন রিং ব্যাপকভাবে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি যেমন বাষ্প ইঞ্জিন, ডিজেল ইঞ্জিন, পেট্রল ইঞ্জিন, কম্প্রেসার, জলবাহী presses ইত্যাদি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়, ব্যাপকভাবে অটোমোবাইল, ট্রেন, জাহাজ, ইয়ট এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। সাধারণ পিস্টন রিং পিস্টন রিং ঘের মধ্যে ইনস্টল করা হয়, এটি এবং পিস্টন, সিলিন্ডার মাছ ধরার নৌকা, সিলিন্ডার মাথা এবং অন্যান্য উপাদান গঠন চেম্বার কাজ।

 তাৎপর্যঃ 

পিস্টন রিং জ্বালানী ইঞ্জিনের মূল অংশ, যা সিলিন্ডার, পিস্টন এবং সিলিন্ডার প্রাচীরের সাথে জ্বালানি গ্যাসের সীলমোহর সমাপ্ত করে।অটোমোবাইল ইঞ্জিনের দুটি ধরণের ডিজেল এবং পেট্রল ইঞ্জিন আছে, কারণ এর বিভিন্ন জ্বালানির পারফরম্যান্সের কারণে পিস্টন রিং ব্যবহার একই নয়, কাস্টিং দ্বারা প্রথম পিস্টন রিং নয়, কিন্তু প্রযুক্তির অগ্রগতিতে, ইস্পাত উচ্চ ক্ষমতা পিস্টন রিং , এবং ইঞ্জিন ফাংশনের সাথে, পরিবেশগত প্রয়োজনীয়তা উন্নত করা হচ্ছে, যেমন বিভিন্ন তাপ চিকিত্সা, তাত্পর্য, ক্রোমিয়াম প্লেটিং, গ্যাস নাইট্রিকাইটিং, শারীরিক জমাশন, পৃষ্ঠ লেপ, জিংক এবং ম্যাঙ্গানিজ ফসফটিং চিকিত্সা ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের চিকিত্সা অ্যাপ্লিকেশন, ইত্যাদি। যে পিস্টন রিং ফাংশন ব্যাপকভাবে উন্নত।

ক্রিয়া

পিস্টন রিং অ্যাকশন sealing অন্তর্ভুক্ত, সমন্বয় তেল (তেল নিয়ন্ত্রণ), তাপ প্রবাহ (তাপ স্থানান্তর), গাইড (সমর্থন) চার ফাংশন। সীলমোহর: সিল করা গ্যাসের কথা উল্লেখ করে, ক্র্যাঁকসেকের দহন চেম্বারের গ্যাস লিককে সরে না দেয়, সর্বনিম্ন সীমাতে গ্যাস ফুটো নিয়ন্ত্রণ, তাপ দক্ষতা বাড়ায়। গ্যাস ফুটো কেবল ইঞ্জিন শক্তি হ্রাস করবে না, তেলের দুর্বলতাও তৈরি করবে, এটি গ্যাস রিংয়ের প্রধান কাজ, তৈল নিয়ন্ত্রণ (তেল নিয়ন্ত্রণ): অতিরিক্ত তৈলাক্তকরণের তেলের সিলিন্ডার প্রাচীর, কিন্তু সিলিন্ডার প্রাচীরের কাপড় পাতলাও তেল ফিল্ম, সিলিন্ডার এবং পিস্টন এবং রিং স্বাভাবিক তৈলাক্তকরণ নিশ্চিত করার জন্য, এটি তেল রিং এর প্রধান কাজ। আধুনিক হাই স্পিড ইঞ্জিনে, তেলের চশমা নিয়ন্ত্রণের জন্য পিস্টন রিংয়ের কর্মে বিশেষ মনোযোগ প্রদান করা হয়; তাপ চালনা: সিলিন্ডার হাতা থেকে পিস্টন তাপ প্রবাহ, যে, শীতল প্রভাব। নির্ভরযোগ্য তথ্য অনুযায়ী, নলকুচ করা পিস্টনের পিস্টন শীর্ষে তাপ হল সিলিন্ডার প্রাচীরের পিস্টন রিং দিয়ে $ সংখ্যা। কুলিং পিস্টন মধ্যে $ নম্বর সিলিন্ডার প্রাচীর পিস্টন রিং মাধ্যমে ছড়িয়ে হয়; সমর্থন: পিস্টন মসৃণ আন্দোলন নিশ্চিত করার জন্য ঘর্ষণ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাসকরণ এবং পিস্টনকে সিলিন্ডারের মুখোমুখি হতে বাধা দেওয়ার জন্য পিস্টন এবং সিলিন্ডার প্রাচীরের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ রোধ করতে সিলিন্ডারে পিস্টন রাখার জন্য পিস্টন রিং। সাধারণ পেট্রোল ইঞ্জিনের পিস্টন দুটি গ্যাস রিং এবং একটি তেলের রিং ব্যবহার করে, যখন ডিজেল ইঞ্জিন সাধারণত দুটি গ্যাস রিং এবং একটি তেল রিং ব্যবহার করে।

 

অল্টারনেটর ও  ডি সি জেনারেটরের সাথে তুলনাঃ 

ডিসি জেনারেটরের সাথে অল্টারনেটরের বেশ কিছু পার্থক্য বিশেষ গুরুত্বের দাবীদার।

অল্টারনেটরডিসি জেনারেটর
১. এতে পরিবর্তনশীল ভোল্টেজ উৎপন্ন হয় এবং স্লিপ রিং এর মাধ্যমে লোডে সরবরাহ করা হয়।১. এতে প্রাথমিক অবস্থায় পরিবর্তনশীল ভোল্টেজ উৎপন্ন হলেও পরে কম্যুটেটরের সাহায্যে ডি সি তে রুপান্তরিত করে লোডে সরবরাহ করা হয়।
২. এতে স্লিপ রিং থাকে।২. এতে কম্যুটেটর থাকে।
৩. চৌম্বক ক্ষেত্র ও আর্মেচার যেকোন একটি ঘুরন্ত এবং অপরটি স্থির থাকতে হবে ।৩. চৌম্বক ক্ষেত্র স্থির থাকবে ও আর্মেচার ঘুরবে।
৪. আর্মেচার ওয়াইন্ডিং খোলা থাকে।৪. আর্মেচার ওয়াইন্ডিং বন্ধ থাকে।
৫. ফিল্ডে ডি সি সাপ্লাই দিতে হয়।৫. আলাদা ডি সি সাপ্লাই দিতে হয়না।
৬. ফিল্ড কোর লেমিনেটেড শিট দ্বারা তৈরি।

৬. ফিল্ড কোর ঢালাই লোহার তৈরি।

 উইকিপিডিয়া ও ইন্টারনেট হতে তথ্য, ছবি সংগৃহীত

টারবাইন কি?, বয়লার কি? টারবাইন কি?, হাইড্রলিক পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ। , থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ? , নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ।, ওয়াইন্ড বা বায়ু পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ। , সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ। , গ্যাস টারবাইন কি?, বয়লার কি?

 প্রশ্নঃ টারবাইন কি?

উত্তরঃ টারবাইন মূলত একটি মেশিন বা প্রাইম মুভার যেখানে প্রবাহীরা ক্রমাগত ভরবেগের পরিবর্তন দিয়ে ঘূর্ণন গতি পাওয়া যায়। অর্থাৎ টারবাইন একটি ঘূর্ণায়মান যান্ত্রিক ডিভাইস যা তরল প্রবাহ থেকে শক্তি নিষ্কাশন করে দরকারি কাজে ব্যবহার করা হয়। 

টারবাইন জেনারেটর এর সাথে যুক্ত থাকে বলে টারবাইনের সাহায্যে  জেনারেটরের মাধ্যমে ইলেকট্রিক পাওয়ার জেনারেট করা হয়। 

বিভিন্ন ধরনের টারবাইন রয়েছে। যেমনঃ স্ট্রীম টারবাইন, গ্যাস টারবাইন, ওয়াটার টারবাইন ইত্যাদি ।

স্ট্রীম টারবাইন হল আদর্শ প্রাইম মুভার, যার ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়। পাওয়ার প্ল্যান্টে জেনারেটর পরিচালনার জন্য বড় স্ট্রীম টারবাইন ব্যবহার করা হয়। 

প্রশ্নঃ হাইড্রলিক পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ। 

উত্তরঃ কাপ্তাই পাওয়ার প্ল্যান্ট হল হাইড্রলিক পাওয়ার প্ল্যান্ট। এখানে পানির বিভব শক্তিকে কাজে লাগিয়ে টারবাইন চালানো হয়। 

হাইড্রলিক শব্দের বাংলা অর্থ জলবাহী । তাহলে বুঝা যায় হাইড্রোলিক পাওয়ার প্ল্যান্টের মূল উৎস হল পানি তাই একে জল বিদ্যুৎ পাওয়ার প্ল্যান্টও বলে। 

এই প্ল্যান্টে একটি উঁচু জায়গাতে পানিকে বাঁধ দিয়ে আটকানো হয়ে থাকে। ঐ উচু স্থানের পানি যখন নিচের দিকে পরতে দেওয়া হয় তখন সেই পানি প্রচন্ড বেগ নিয়ে পরে। পানির এই প্রচন্ড বেগ দিয়েই টারবাইনের চাকাকে ঘুরানো হয়ে থাকে। টারবাইনের শ্যাফটের সাথে জেনারেটরের শ্যাফট মজবুত ভাবে সংযুক্ত থাকে। ফলে জেনারেটর ঘুরে বিদ্যুৎ বা কারেন্ট উৎপন্ন হয়। 

প্রশ্নঃ থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ? 

উত্তরঃ থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট বা তাপীয় পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে এমন এক ধরনের পাওয়ার প্ল্যান্টকে বুঝি যা তাপীয় শক্তিকে ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ারে পরিণত করা হয়। 

থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট এ পানিকে বাস্পে পরিণত করা হয়। আর এই কাজটি করে বয়লার। অর্থাৎ থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টে বয়লার থাকে যা পানিকে বাস্পে পরিণত করে। 

এই বাস্পকে উচ্চ বেগে টারবাইনের দিকে প্রবাহিত করা হয় ফলে টারবাইন প্রচন্ড বেগে ঘুরে। আবার টারবাইনের শ্যাফটের সাথে জেনারেটরের শ্যাফট মজবুত ভাবে সংযুক্ত থাকে। ফলে জেনারেটরও  ঘুরে এবং বিদ্যুৎ বা কারেন্ট উৎপন্ন হয়। 

প্রশ্নঃ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ। 

উত্তরঃ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট বা পারমানবিক পাওয়ার প্ল্যান্ট একটি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র যেখানে তাপ উৎস একটি পারমানবিক চুল্লী। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টকে তাপীয় পাওয়ার প্ল্যান্টও বলা হয়। 

নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট এ বয়লারের স্থানে পারমানবিক চুল্লী থাকে। এই পারমানবিক চুল্লীতে (পারমানবিক পদার্থের যেমনঃ ইউরেনিয়াম) পারমানবিক ফিউশন রিয়াকশন হয় অর্থাৎ অনেক নিউক্লিয়াস (প্রোটন ও নিউটন) অনায়াসে বিভক্ত হয়ে যায় বা একটি অংশের উপর অন্য অংশ প্রভাব ফেলে এনার্জি বা শক্তি রিলিজ করে ফলে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয় এবং এই তাপকে কাজে লাগিয়ে পানিকে বাস্পে পরিণত করা হয়। ঐ বাস্প মূলত টারবাইনকে ঘুরাতে সাহায্য করে। আবার টারবাইনের শ্যাফটের সাথে জেনারেটরের শ্যাফট মজবুত ভাবে সংযুক্ত থাকে। ফলে জেনারেটরও  ঘুরে এবং বিদ্যুৎ বা কারেন্ট উৎপন্ন হয়। 

প্রশ্নঃ ওয়াইন্ড বা বায়ু পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ। 

উত্তরঃ ওয়াইন্ড শব্দের বাংলা অর্থ বায়ু। অর্থাৎ বায়ু শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। 

ওয়াইন্ড বা বায়ু পাওয়ার মূলত বাতাসের প্রবাহের উপর নির্ভর করে। উচ্চ গতি সম্পন্ন বাতাসের প্রবাহের ফলে বাতস বা বায়ু টারবাইনকে ঘুরায়। আবার টারবাইনের শ্যাফটের সাথে জেনারেটরের শ্যাফট মজবুত ভাবে সংযুক্ত থাকে। ফলে জেনারেটরও  ঘুরে এবং বিদ্যুৎ বা কারেন্ট উৎপন্ন হয়। 

প্রশ্নঃ সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ। 

উত্তরঃ সোলার পাওয়ার শব্দের বাংলা অর্থ সৌর শক্তি। সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট হল এমন একটি পাওয়ার প্ল্যান্ট যা সূর্যের আলো (Sunlight) শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ইলেকট্রিক্যাল শক্তিতে রূপান্তরিত করে। 

এই ইলেকট্রিক্যাল শক্তি রূপান্তরিত করে সরাসরি (Directly) ফটো ভোল্টাইক ব্যবহার করে আর পরোক্ষ ভাবে (Indirectly) কেন্দ্রীভূত সোলার শক্তির মাধ্যমে। 

কেন্দ্রীভূত সোলার শক্তিতে লেন্স অথবা আয়না (Mirror) এবং স্ট্র্যাকিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। যাতে অনেক বড় জায়গা ফোকাস করতে পারে। 

ফটো ভোল্টাইক সেল মূলত আলোক শক্তিকে ইলেকট্রিক শক্তিতে বা বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করে। 

প্রশ্নঃ গ্যাস টারবাইন কি?

উত্তরঃ  গ্যাস টারবাইন এমন একটি আবর্তনশীল ইঞ্জিন যা দাহ্য(জ্বলন) গ্যাসের প্রবাহ থেকে শক্তি গ্রহণ করে থাকে। উদাহরন হিসেবে জেট বিমান যার ইঞ্জিন অনেক বড় আকারের হয়ে থাকে। এই ইঞ্জিন মূলত টার্বোফ্যান দ্বারা চলে থাকে। এই টার্বোফ্যান গ্যাস টারবাইনের উদাহরণঃ জেট বিমান টার্বোফ্যান।

আমরা উপরের লেখাগুলোতে বিভিন্ন পাওয়ার প্ল্যান্ট নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রতিটি পাওয়ার প্ল্যান্টে টারবাইন আছে শুধুমাত্র সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট ছাড়া। ষ্টীম টারবাইন, ওয়াইন্ড টারবাইন, ওয়াটার টারবাইন ইত্যাদি বিভিন্ন পাওয়ার প্ল্যান্টে শক্তি উৎপাদনে ব্যবহিত হয়ে থাকে। আর এসবের ফলিত প্রয়োগই মূলত গ্যাস টারবাইন।

গ্যাস টারবাইন ইঞ্জিনে ব্লেডকে ঘোরানোর জন্য উচ্চ চাপ যুক্ত গ্যাস ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

গ্যাস টারবাইনের গঠন ও কার্যপ্রণালী

গ্যাস টারবাইনের গঠনপ্রণালী খুবই সাধারণ।

কম্প্রেসরঃ

এটি অন্তর্গ্রহণ মুখ দিয়ে আসা বায়ুকে উচ্চ চাপে সংকোচিত করে।

দহন কক্ষঃ

এটা মূলত ফুয়েলকে জ্বালায় এবং উচ্চ চাপ ও উচ্চ গতি সম্পন্ন গ্যাস উৎপন্ন করে।

টারবাইনঃ

দহন কক্ষ থেকে প্রবাহিত অনেক বেশি চাপ ও অনেক উচ্চ গতি সম্পন্ন গ্যাস থেকে শক্তি গ্রহণ করে।

উপরের চিত্র আমরা অক্ষিয় প্রবাহ গ্যাস টারবাইন দেখতে পাচ্ছি যা সাধারণত হেলিকপ্টারের রোটরে ব্যবহিত হয়ে থাকে। এরা কিভাবে কাজ করে তা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা যাক।

কম্প্রেসরঃ

এখানে কম্প্রেসর কোণাকৃতি একটি সিলিন্ডার এবং এর উপরে একসাথে ছোট ছোট ফ্যান ব্লেড লাগানো আছে। এই ইঞ্জিনে কম্প্রেসর বায়ু গ্রহণ করে। বায়ু যখন কম্প্রেসরে প্রবেশ করবে তখন এর চাপ অনেক কম থাকবে আর পরবর্তীতে কম্প্রেসরের মাধ্যমে বায়ুকে সঙ্কোচিত করার পর এর চাপ প্রায় ৩০ গুণ বেড়ে যাবে।

দহন কক্ষঃ

উচ্চ চাপ যুক্ত বায়ু দহন কক্ষে প্রবেশ করে থাকে। এরপরে ফুয়েল ইঞ্জেক্টরের বেল্ট(বলয়) থেকে স্থিরভাবে ফুয়েল ইনজেক্ট করা হয়। ফুয়েল হিসেবে কেরোসিন, জেট-ফুয়েল, প্রোপেন অথবা অন্য প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হয়। দহন কক্ষের ভিতরে উচ্চ চাপ যুক্ত বায়ু প্রায় ১০০ মাইল/ঘন্টা বেগে এবং এই পরিবেশে দহন সম্পন্ন করতে হয় যা করা প্রায় অসম্ভব। এই সমস্যা সমাধানের জন্য দহন কক্ষে শিখা ধারক অথবা ক্যান ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ক্যান সাধারণত ফাঁপা থাকে, ছিদ্রযুক্ত ভারী ধাতব অংশ। ইঞ্জিক্টর ক্যানের ডানপাশে থাকে এবং সংকোচিত বায়ু ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ করে থাকে।

প্রশ্নঃ বয়লার কি?

উত্তরঃ বয়লার স্টিলের তৈরি একটি বদ্ধ ভ্যাসেল। এটি প্রেসার কুকারের মতো (উচ্চ চাপে বদ্ধ অবস্থায় থাকা পানিকে উচ্চ তাপমাত্রায় বাষ্পীভূতকরণ), তবে আরও উচ্চ চাপে কাজ করে। এর কাজ হল জ্বালানি বা বিদ্যুৎ বা পারমাণবিক শক্তি থেকে প্রাপ্ত তাপকে তরলে (সাধারণত পানি) স্থানান্তর করা। নির্দিষ্ট চাপে তরলটি উত্তপ্ত হয় অথবা বাষ্পীভূত হয় অথবা বাষ্প আরও উত্তপ্ত হয় অথবা উল্লিখিত একাধিক প্রক্রিয়ার সংমিশ্রণও হতে পারে।
বয়লার বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়, যেমনঃ

  • আবাসিক বা বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের জন্য গরম পানি প্রস্তুত করতে,
  • ষ্টীম ইঞ্জিন বা টারবাইনে শক্তি উৎপাদন করতে,
  • টেক্সটাইল শিল্পে সাইজিং এবং ব্লিচিংয়ের জন্য,
  • বাণিজ্যিকভাবে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে,
  • চিনির কারখানায়, কেমিক্যাল শিল্পে, সুতার মিলে ইত্যাদি।

বয়লারের কম্পনেন্টসমূহ

  • শেল- বাঁকানো ষ্টীল প্লেট ব্যবহার করে, রিভেট বা ওয়েল্ডিং এর মাধ্যমে সিলিন্ডার তৈরি করা হয়। সিলিন্ডারের ২পাশে এন্ড প্লেট থাকে।
  • বার্নার- এখানে, বাতাসের সাথে ফুয়েল মিশ্রিত হয়। ফুয়েল হিসাবে প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল, কয়লা ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
  • কম্বাশন চেম্বার/ফায়ার বক্স/ফার্নেস- কম্বাশনের ফলে উৎপন্ন তাপে হিট এক্সচেঞ্জার গরম হতে থাকে।
  • হিট এক্সচেঞ্জার- এর মাধ্যমে বার্নারের সাথে পানির সরাসরি সংযোগ ছাড়াই পানিতে তাপ সরবারহ করা হয়।
  • সাপ্লাই লাইন- এই পাইপগুলোর মাধ্যমে গরম পানি বা ষ্টীম ডিস্ট্রিবিউশন পয়েন্টগুলোতে সরবারহ করা হয়।
  • রিটার্ন লাইন- যখন পানি ঠাণ্ডা হয়ে যায় অথবা ষ্টীম ঠাণ্ডা হয়ে পানিতে রূপান্তরিত হয়, তখন রিটার্ন লাইন রিহিটের জন্য তাদের বয়লারে নিয়ে যায়।
  • গ্রেট- এটি ফার্নেসের প্ল্যাটফর্ম, যার উপর ফুয়েল পোড়ানো হয়। এটি কাস্ট আইরনের দণ্ড পৃথক পৃথক করে রেখে প্রস্তুত করা হয়, যেন পর্যাপ্ত বায়ু তাদের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
  • অ্যাঁশ পিট- এখানে, ছাই জমা হয়। ছাইগুলি আগুনের নিচে রাখা বাক্সে পড়ে।
  • ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর- বয়লারের ভিতরে পানির লেভেল নির্দেশ করে।
  • সেফটি ভাল্ভ- বয়লারের ভিতর ষ্টীমের অতিরিক্ত চাপের কারণে হওয়া বিস্ফোরণ প্রতিরোধ করে। সেফটি ভাল্ভ ৪ ধরনের হয়ঃ
    • লিভার সেফটি ভাল্ভ
    • ডেড ওয়েট সেফটি ভাল্ভ
    • হাই ষ্টীম অ্যান্ড লো ওয়াটার সেফটি ভাল্ভ
    • স্প্রিং লোডেড সেফটি ভাল্ভ
  • প্রেশার গজ- বয়লারের ভিতরের ষ্টীমের চাপ পরিমাপ করে। বয়লারে সাধারণত বাউন্ডারি টাইপ প্রেশার গজ ব্যবহার করা হয়।
  • ফিউসিবল প্লাগ- বয়লারের পানির স্তর যখন অনিরাপদ সীমাতে চলে যায়, তখন এটি চুল্লীতে আগুন নিভানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • ফীড চেক ভাল্ভ- এটি ১টি নন-রিটার্ন ভাল্ভ। এটি শুধুমাত্র বয়লারের দিকে ফ্লুয়িড প্রবাহিত হতে দেয়। এই ভাল্ভ দিয়ে বয়লারে উচ্চ চাপে পানি সরবারহ করা হয়।
  • ষ্টীম স্টপ ভাল্ভ- এটি বয়লারের বাইরে ষ্টীম সরবারহ নিয়ন্ত্রণ করে।

নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য এগুলো বয়লারে লাগানো হয়।
 

প্রশ্নঃ বয়লার কত প্রকার কি কি?  প্রত্যেক প্রকার বয়লারের বর্ণনা

উত্তরঃ টিউবের ভেতরের উপাদানের উপর ভিত্তি করে বয়লার ২প্রকার

১। ফায়ার টিউব বয়লারঃ কম্বাশন চেম্বারে তৈরি হওয়া ফ্লেম ও গ্যাস টিউবের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, যা চারপাশের পানিকে গরম করে। টিউবের ওয়ালের মধ্য দিয়ে তাপ সঞ্চালিত হয়ে পানিতে আসে। উদাহরণঃ কোকরান বয়লার, লোকোমোটিভ বয়লার, ভেলকন বয়লার ইত্যাদি।

সুবিধাঃ

  • অপারেটিং খরচ কম।
  • ফিড ওয়াটার এর পরিশোধন দরকার নেই।
  • বিস্ফোরণের সম্ভাবনা কম।

অসুবিধাঃ

  • কর্মদক্ষতা কম (৭৫% পর্যন্ত)।
  • বড় প্ল্যান্ট এর জন্য উপযুক্ত না।
  • ষ্টীম তৈরির হার তুলনামূলক কম (ঘণ্টায় ৯টন পর্যন্ত)।
  • তৈরিকৃত ষ্টীমের চাপ তুলনামূলক কম (২৪.৫বার পর্যন্ত)।

fire tube boiler

২। ওয়াটার টিউব বয়লারঃ পানি টিউবের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই টিউবগুলো কম্বাশনের ফলে উৎপন্ন শিখা ও গ্যাস দ্বারা ঘেরা থাকে।উদাহরণঃ ব্যাবকক ও উইলকক্স বয়লার, লা মন্ট বয়লার, বেন্সন বয়লার ইত্যাদি

সুবিধাঃ

  • কর্মদক্ষতা বেশি (৯০% পর্যন্ত)।
  • বড় প্ল্যান্ট এর জন্য উপযুক্ত।
  • ষ্টীম তৈরির হার তুলনামূলক বেশি (ঘণ্টায় ৪৫০টন পর্যন্ত)।
  • তৈরিকৃত ষ্টীমের চাপ তুলনামূলক বেশি (১৬৫বার পর্যন্ত)।

অসুবিধাঃ

  • অপারেটিং খরচ বেশি।
  • ফিড ওয়াটার এর পরিশোধন দরকার আছে।
  • বিস্ফোরণের সম্ভাবনা বেশি।

water tube boiler

 

আবার, টিউবের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে বয়লার ২ধরনের

১। সিঙ্গেল টিউব বয়লার (১টি মাত্র ফায়ার বা ওয়াটার টিউব থাকে। উদাহরণঃ সিম্পল ভারটিক্যাল বয়লার এবং করনিশ বয়লার)
২। মাল্টিপল টিউব বয়লার (একাধিক ফায়ার বা ওয়াটার টিউব থাকে। উদাহরণঃ কোকরান বয়লার, লোকোমোটিভ বয়লার ইত্যাদি)
 

ফার্নেসের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে বয়লার ২প্রকার

১। ইন্টারনালি ফায়ার্ড বয়লার (ফার্নেস বয়লারের শেলের ভিতরে থাকে। সাধারণত ফায়ার টিউব বয়লারগুলো এই ধরনের হয়।)
২। এক্সটারনালি ফায়ার্ড বয়লার (ফার্নেস বয়লারের শেলের বাইরে থাকে। সকল ওয়াটার টিউব বয়লার এই ধরনের হয়।)
 

শেলের অক্ষের উপর ভিত্তি করে বয়লার আবার ২ধরনের হয়

১। ভারটিক্যাল বয়লারঃ (শেলের অক্ষ ভারটিক্যাল হয়। উদাহরণঃ সিম্পল ভারটিক্যাল বয়লার এবং কোকরান বয়লার)
২। হরাইযোনটাল বয়লারঃ (শেলের অক্ষ হরাইযোনটাল হয়। উদাহরণঃ লোকোমোটিভ বয়লার, ব্যাবকক ও উইলকক্স বয়লার ইত্যাদি)
 

পানি প্রবাহের ধরনের উপর ভিত্তি করে বয়লার ২প্রকার

১। ন্যাচারাল সারকুলেশন বয়লার (বাহ্যিক সহায়তা ছাড়া, প্রাকৃতিক পানির প্রবাহকেই ব্যবহার করা হয়।)
২। ফোর্সড সারকুলেশন বয়লার (পাম্পের সাহায্যে উচ্চ চাপে পানি প্রবাহ করা হয়)।
 

মুভ্যাবিলিটির উপর ভিত্তি করে বয়লার ২প্রকার হয়

১। ষ্টেশনারী বয়লার (পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং শিল্পকারখানায় ব্যবহার করা হয়।)
২। মোবাইল বয়লার (যানবাহনে ব্যবহার করা হয়, যেমনঃ মেরিন বয়লার, লোকোমোটিভ বয়লার)

প্রশ্নঃ বয়লার মাউন্টিংস বলতে কি বুঝ? পাঁচটি বয়লার মাউন্টিংস এর নাম লিখ।

উত্তরঃ বয়লার মাউন্টিংস:

বয়লার মাউন্টিংস হচ্ছে বয়লারের আবশ্যকীয় সরঞ্জাম যা ছাড়া বয়লার নিরাপদে ও সুষ্ঠভাবে কাজ করতে পারে না!

৫টি বয়লার মাউন্টিংসের নাম:-

১। সেফটি ভালবস(Safety valves)।

২। স্টপ ভালবস(stop valves)।

৩। ফিড চেক ভালবস(Feed check valves)।

৪। প্রেশার গেজ(pressure gauge)।

৫। ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর

প্রশ্নঃ বয়লার এ্যাকসোসরিজ বলতে কি বুঝ? পাঁচটি বয়লার এ্যাকসোসরিজ এর নাম লিখ।

উত্তরঃ বয়লার এক্সেসরিজ:

বয়লার এক্সেসরিজ হচ্ছে এমন কিছু ডিভাইস যা বয়লারের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বয়লারের সাথে যুক্ত করা যায়!

৫টি বয়লার এক্সেসরিজের নাম:

১। সুপার হিটার(Super Heater)।

২। এয়ার প্রি হিটার(Air pre-heater)।

৩। ড্রাফট(Draft)।

৪। ফিড পাম্প(Feed Pump)।

৫। ইকোনোমাইজার(Economizer)।

প্রশ্নঃ সেফটি ভাল্ব কাকে বলে? বয়লারে সেফটি ভাল্ব কেন ব্যবহার করা হয়? সেফটি ভাল্ব কত প্রকার ও কি কি?

উত্তরঃ সেফটি ভাল্ব:

বয়লারের মধ্যে ষ্টীমের অতিরিক্ত চাপকে যে ভাল্বের সাহায্যে বের করা হয় তাকে সেফটি ভাল্ব বলে।

এটা স্বংক্রিয়ভাবে অতিরিক্ত চাপকে বের করে দেয় এবং বয়লারকে নিরাপদ সীমার মধ্যে কার্যকর রাখে। বয়লারের নিরাপত্তার জন্য দুটি সেফটি ভাল্ব রাখা হয় যাতে একটি নষ্ট হলে অপরটি দ্বারা সাময়িক ভাবে কাজ চালানো যায়।

সেফটি ভাল্ব চার ধরনের হতে পারে। যথা –

১. লিভার সেফটি ভাল্ব

২. ডেড ওয়েট সেফটি ভাল্ব

৩. হাই ষ্টীম এন্ড লো ওয়াটার সেফটি ভাল্ব

৪. স্প্রীং লোডেড সেফটি ভাল্ব

প্রশ্নঃ ইকোনোমাইজার কি? ইকোনোমাইজার ব্যবহারের সুবিধা কি?

উত্তরঃ ইকোনোমাইজার:-

পরিত্যক্ত ফ্লু গ্যাসের তাপকে কাজে লাগানোর জন্য ইকোনোমাইজার ব্যবহার করা হয়। ইকোনোমাইজার দ্বারা পরিত্যক্ত ফ্লু গ্যাসের তাপ ব্যবহার করে ফিড ওয়াটার কে উত্তপ্ত করা হয়।

ইকোনোমাইজার ব্যবহারের সুবিধা:-

১. ১৫% থেকে ২০% জ্বালানী হ্রাস পায়।

২. বয়লারের ষ্টীম উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

৩. ইকোনোমাইজার ব্যবহারের ফলে বয়লার টিউবে স্কেল তৈরি হতে পারেনা।

প্রশ্নঃ ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট বলতে কি বুঝতে? ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট এর উদ্দেশ্য কি?

উত্তরঃ ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট:-

বয়লারে পানি প্রবেশ করানোর পূর্বে এর বিভিন্ন অপদ্রব্য দূর করে পানিকে পরিশোধন করাকে ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট বলে।

ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট এর উদ্দেশ্য:-

১. পানিকে উত্তপ্ত করার ফলে জ্বালানী সাশ্রয় হয়।

২. স্কেল উৎপন্নকারী লবণসমূহকে বয়লারে প্রবেশের পূর্বেই ওয়াটার থেকে পৃথক করা।

৩. বয়লারের ধাতব অংশ ক্ষয়কারী পানিতে দ্রবীভূত গ্যাস দূর করা।

প্রশ্নঃ এয়ার প্রি হিটার কি? এয়ার প্রি হিটার ব্যবহারের উদ্দেশ্য কি?

উত্তর: এয়ার প্রি হিটার:

বয়লারের দহন কার্যে যে বাতাস ব্যবহৃত হয় তাকে তাকে বয়লারে প্রবেশ করানোর পূর্বে যার সাহায্যে উত্তপ্ত করা হয় তাকে এয়ার প্রি হিটার বলে।

বয়লারের এ পরিত্যক্ত উত্তপ্ত ফ্লু গ্যাসকে বাতাস উত্তপ্ত করার কাজে ব্যবহার করা হয়।

এয়ার প্রি হিটার ব্যবহারের উদ্দেশ্য :

১. উত্তপ্ত বাতাস প্রবেশ করানো হলে ফার্নেসের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, এর ফলে পানিতে বেশি পরিমান তাপ সঞ্চালন করা যায় এবং প্রতি কেজিতে জ্বালানীর বাষ্পায়ন ক্ষমতা বেড়ে যায়।

২. ৩৫°-৪০° তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বয়লারের দক্ষতা ২% বৃদ্ধি পায়।

৩. এটা নিম্ন মানের জ্বালানীকে জ্বলনে সহায়তা করে।

প্রশ্নঃ সুপার হিটার কি? ইহা ব্যবহারের উদ্দেশ্য গুলি লিখ।

উত্তরঃ সুপার হিটার:

বয়লারে যে বাষ্প তৈরি হয় তা আর্দ্র অবস্থায় থাকে। আর্দ্র বাষ্পকে তাপের সাহায্যে সম্পৃক্ত বাষ্পে রুপান্তরিত করতে বয়লারের সাথে যে ডিভাইস ব্যবহার করা হয় তাকে সুপার হিটার বলে।

সুপার হিটার ব্যবহারের উদ্দেশ্য:

১. সুপার হিটেড ষ্টীমে অপেক্ষাকৃত বেশি তাপ থাকে তাই বেশি কাজ পাওয়া যায়।

২. সুপার হিটার ব্যবহারে প্লান্টের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।

৩. সুপার হিটার ব্যবহারে টারবাইন ব্লেডের ক্ষয় কম হয়।

প্রশ্নঃ বয়লার কেন বিস্ফোরিত হয়?

উত্তরঃ বয়লারে একটি সেফটি ভাল্ব থাকে, যা একটি নির্দিষ্ট চাপে বা প্রেসারে সেট করা থাকে। বয়লারের অবস্থা অনুযায়ী ওই চাপ নির্ধারণ করা হয়। প্রেসার এর চেয়ে বেশি হলে সেফটি ভাল্ব স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হওয়ার কথা। প্রেসার বেশি হওয়ার পরেও সেফটি ভাল্ব ওপেন না হলে বয়লার বিস্ফোরিত হয়।

প্রশ্নঃ কনডেন্সার কি?

উত্তরঃ স্টিম টারবাইন কে ঘুরিয়ে যখন বেড় হয় , তখন এই এগজস্ট স্টিমকে ঠান্ডা করার কাজে কনডেন্সার ব্যবহার করা হয় । এটি মাধ্যমে ঠান্ডা পানি স্টিম এর সংস্পর্শে ঘনীভূত হয়ে করে পানিতে পরিনত করা হয়।অর্থাৎ স্টিম কে পানি করে পুনরায় ফিড ওয়াটার হিসাবে বয়লারে সরবারহ করা হয় । একে আমরা হীট একচেঞ্জারও বলে থাকি।

প্রশ্নঃ পাওয়ার প্লান্টে ওভারহোলিং কত প্রকার ও কি কি ? 

উত্তরঃপাওয়ার প্লান্টে ওভারহোলিং চার প্রকারঃ  যথা ১/হেড ওভারহোলিং। ২/ব্লগ ওভারহোলিং। ৩/ইঞ্জিন সাহায্যকারী যন্ত্রাংশ ওভারহোলিং।৪/পুনরায় সংযোগ ।।

কার্যপদ্ধতি ::আমরা প্রথমে ইঞ্জিন হেড ওভারহোলিং নিয়ে আলোচনা করব। ১/প্রথমে ইঞ্জিনটি বন্ধ রেখে পরিপূর্ণ ঠান্ডা করে নিতে হবে ।এবং বিশেষ করে গ্যাস লাইন ,পানির লাইন ,এবং ব্যাটারির লাইন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে ।অথবা প্রয়োজন অনুযায়ী আলাদা করতে হবে। ইঞ্জিন থেকে পানি এবং লুবওয়েল পরিপূর্ণ ড্রেন আপ করতে হবে।

২/ইঞ্জিন থেকে সাহায্যকারী যন্ত্রাংশ আলাদা করতে হবে. ইন্টার কলার , বা আফটার কুলার ,জ্যাকেট ওয়াটার পাইপ, অয়েল কুলার, একজাস্ট ইনলেট মেনিফোল্ড, একচুয়াটর। এবং বিভিন্ন সেন্সরের লাইন সমূহ এবং ইঞ্জেক্টর বা স্পার্ক প্লাগ।

৩/তারপর সঠিক মাপের টুলস দিয়ে ইঞ্জিন হেড কভার খুলতে হবে। প্রথমে চোখে দেখে ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশের ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। তারপর প্রয়োজন হলে কম্প্রেশন টেস্ট করা যেতে পারে। কম্প্রেশন টেস্ট নিয়ে আমার এই গ্রুপে একটি পোস্ট করা আছে সেহেতু কম্প্রেশন টেস্ট কিভাবে করতে হবে সেটা আলোচনা করলাম না। ইঞ্জিন থেকে ইঞ্জিন হেট খুলে আলাদা করলাম। হেড এ পুরা গ্যাসকেট এবং কার্বন লেগে থাকবে তা চেছে ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে। লক্ষ্য করে দেখতে হবে হেডের কোথাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা। এবং বাল্ব এবং বাল্ব সিট ক্ষয় হয়েছে কিনা তা পরীক্ষার জন্য একটি সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে যথা ইনটেক এবং একজাস্ট মেনিফল্ট দিয়ে পানি দিতে হবে এবং হাতে চাপ দিতে হবে এত পর দেখতে হবে বাল্ব এর দিক দিয়ে পানি লিকেজ হয় কিনা। যেহেতু ওভারহোলিং করা হচ্ছে সেহেতু কিছু পরিমাণ পানি লিকেজ হবেই। এর থেকে বোঝা গেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।ভালব এবং সিট । তাই ইঞ্জিন হেড লেদে পাঠিয়ে দিতে হবে। যদি নিজেরাই করা যায় তাহলে ভালো ।ভালব ফেস এবং বাল্ব সিট ৪০/ ৪৫ ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে গ্রাইন্ডিং বিট এবং মেশিনের মাধ্যমে করতে হবে। করা হলে তখন আবার ব্যবহার করা যাবে। তারপর ভালভ স্প্রিং ,এবং ভালব গাইড খুলে ফেলতে হবে। দেখতে হবে ভালব গাইটে অথবা বাল্ব স্ট্যাম্পে কোন ক্ষতিগ্রস্ত আছে কিনা। বিশেষ করে ভালব গাইড বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাই এটি পরিবর্তন করতে হবে। এবং ভালব স্প্রিং টেনশন কমে গিয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে। পুশ রড বেঁকে গেছে কিনা বা ক্ষয় হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে । ভালব অ্যাসেম্বলি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।যথারীতি পরীক্ষার মাধ্যমে কিছু পার্টস পরিবর্তন এবং মেরামত যোগ্য বলে গণ্য হবে।।।।

ভুলত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন । কিছু বাদ পড়লে তা ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন।এতে আমরা ওভারহোলিং করা শিখতে না পারলাম তবে ওভারহোলিং সম্পর্কে কিছু প্রাথমিক ধারণা তো পেলাম। 

উইকিপিডিয়া ও ইন্টারনেট হতে তথ্য, ছবি সংগৃহীত

সাম্প্রতিক পোস্ট সমূহ

Recent Posts Widget