Friday, December 1, 2023

টারবাইন কি?, বয়লার কি? টারবাইন কি?, হাইড্রলিক পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ। , থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ? , নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ।, ওয়াইন্ড বা বায়ু পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ। , সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ। , গ্যাস টারবাইন কি?, বয়লার কি?

 প্রশ্নঃ টারবাইন কি?

উত্তরঃ টারবাইন মূলত একটি মেশিন বা প্রাইম মুভার যেখানে প্রবাহীরা ক্রমাগত ভরবেগের পরিবর্তন দিয়ে ঘূর্ণন গতি পাওয়া যায়। অর্থাৎ টারবাইন একটি ঘূর্ণায়মান যান্ত্রিক ডিভাইস যা তরল প্রবাহ থেকে শক্তি নিষ্কাশন করে দরকারি কাজে ব্যবহার করা হয়। 

টারবাইন জেনারেটর এর সাথে যুক্ত থাকে বলে টারবাইনের সাহায্যে  জেনারেটরের মাধ্যমে ইলেকট্রিক পাওয়ার জেনারেট করা হয়। 

বিভিন্ন ধরনের টারবাইন রয়েছে। যেমনঃ স্ট্রীম টারবাইন, গ্যাস টারবাইন, ওয়াটার টারবাইন ইত্যাদি ।

স্ট্রীম টারবাইন হল আদর্শ প্রাইম মুভার, যার ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়। পাওয়ার প্ল্যান্টে জেনারেটর পরিচালনার জন্য বড় স্ট্রীম টারবাইন ব্যবহার করা হয়। 

প্রশ্নঃ হাইড্রলিক পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ। 

উত্তরঃ কাপ্তাই পাওয়ার প্ল্যান্ট হল হাইড্রলিক পাওয়ার প্ল্যান্ট। এখানে পানির বিভব শক্তিকে কাজে লাগিয়ে টারবাইন চালানো হয়। 

হাইড্রলিক শব্দের বাংলা অর্থ জলবাহী । তাহলে বুঝা যায় হাইড্রোলিক পাওয়ার প্ল্যান্টের মূল উৎস হল পানি তাই একে জল বিদ্যুৎ পাওয়ার প্ল্যান্টও বলে। 

এই প্ল্যান্টে একটি উঁচু জায়গাতে পানিকে বাঁধ দিয়ে আটকানো হয়ে থাকে। ঐ উচু স্থানের পানি যখন নিচের দিকে পরতে দেওয়া হয় তখন সেই পানি প্রচন্ড বেগ নিয়ে পরে। পানির এই প্রচন্ড বেগ দিয়েই টারবাইনের চাকাকে ঘুরানো হয়ে থাকে। টারবাইনের শ্যাফটের সাথে জেনারেটরের শ্যাফট মজবুত ভাবে সংযুক্ত থাকে। ফলে জেনারেটর ঘুরে বিদ্যুৎ বা কারেন্ট উৎপন্ন হয়। 

প্রশ্নঃ থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ? 

উত্তরঃ থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট বা তাপীয় পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে এমন এক ধরনের পাওয়ার প্ল্যান্টকে বুঝি যা তাপীয় শক্তিকে ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ারে পরিণত করা হয়। 

থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট এ পানিকে বাস্পে পরিণত করা হয়। আর এই কাজটি করে বয়লার। অর্থাৎ থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টে বয়লার থাকে যা পানিকে বাস্পে পরিণত করে। 

এই বাস্পকে উচ্চ বেগে টারবাইনের দিকে প্রবাহিত করা হয় ফলে টারবাইন প্রচন্ড বেগে ঘুরে। আবার টারবাইনের শ্যাফটের সাথে জেনারেটরের শ্যাফট মজবুত ভাবে সংযুক্ত থাকে। ফলে জেনারেটরও  ঘুরে এবং বিদ্যুৎ বা কারেন্ট উৎপন্ন হয়। 

প্রশ্নঃ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ। 

উত্তরঃ নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট বা পারমানবিক পাওয়ার প্ল্যান্ট একটি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র যেখানে তাপ উৎস একটি পারমানবিক চুল্লী। নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টকে তাপীয় পাওয়ার প্ল্যান্টও বলা হয়। 

নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট এ বয়লারের স্থানে পারমানবিক চুল্লী থাকে। এই পারমানবিক চুল্লীতে (পারমানবিক পদার্থের যেমনঃ ইউরেনিয়াম) পারমানবিক ফিউশন রিয়াকশন হয় অর্থাৎ অনেক নিউক্লিয়াস (প্রোটন ও নিউটন) অনায়াসে বিভক্ত হয়ে যায় বা একটি অংশের উপর অন্য অংশ প্রভাব ফেলে এনার্জি বা শক্তি রিলিজ করে ফলে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয় এবং এই তাপকে কাজে লাগিয়ে পানিকে বাস্পে পরিণত করা হয়। ঐ বাস্প মূলত টারবাইনকে ঘুরাতে সাহায্য করে। আবার টারবাইনের শ্যাফটের সাথে জেনারেটরের শ্যাফট মজবুত ভাবে সংযুক্ত থাকে। ফলে জেনারেটরও  ঘুরে এবং বিদ্যুৎ বা কারেন্ট উৎপন্ন হয়। 

প্রশ্নঃ ওয়াইন্ড বা বায়ু পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ। 

উত্তরঃ ওয়াইন্ড শব্দের বাংলা অর্থ বায়ু। অর্থাৎ বায়ু শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। 

ওয়াইন্ড বা বায়ু পাওয়ার মূলত বাতাসের প্রবাহের উপর নির্ভর করে। উচ্চ গতি সম্পন্ন বাতাসের প্রবাহের ফলে বাতস বা বায়ু টারবাইনকে ঘুরায়। আবার টারবাইনের শ্যাফটের সাথে জেনারেটরের শ্যাফট মজবুত ভাবে সংযুক্ত থাকে। ফলে জেনারেটরও  ঘুরে এবং বিদ্যুৎ বা কারেন্ট উৎপন্ন হয়। 

প্রশ্নঃ সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট বলতে কি বুঝ। 

উত্তরঃ সোলার পাওয়ার শব্দের বাংলা অর্থ সৌর শক্তি। সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট হল এমন একটি পাওয়ার প্ল্যান্ট যা সূর্যের আলো (Sunlight) শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ইলেকট্রিক্যাল শক্তিতে রূপান্তরিত করে। 

এই ইলেকট্রিক্যাল শক্তি রূপান্তরিত করে সরাসরি (Directly) ফটো ভোল্টাইক ব্যবহার করে আর পরোক্ষ ভাবে (Indirectly) কেন্দ্রীভূত সোলার শক্তির মাধ্যমে। 

কেন্দ্রীভূত সোলার শক্তিতে লেন্স অথবা আয়না (Mirror) এবং স্ট্র্যাকিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। যাতে অনেক বড় জায়গা ফোকাস করতে পারে। 

ফটো ভোল্টাইক সেল মূলত আলোক শক্তিকে ইলেকট্রিক শক্তিতে বা বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করে। 

প্রশ্নঃ গ্যাস টারবাইন কি?

উত্তরঃ  গ্যাস টারবাইন এমন একটি আবর্তনশীল ইঞ্জিন যা দাহ্য(জ্বলন) গ্যাসের প্রবাহ থেকে শক্তি গ্রহণ করে থাকে। উদাহরন হিসেবে জেট বিমান যার ইঞ্জিন অনেক বড় আকারের হয়ে থাকে। এই ইঞ্জিন মূলত টার্বোফ্যান দ্বারা চলে থাকে। এই টার্বোফ্যান গ্যাস টারবাইনের উদাহরণঃ জেট বিমান টার্বোফ্যান।

আমরা উপরের লেখাগুলোতে বিভিন্ন পাওয়ার প্ল্যান্ট নিয়ে আলোচনা করেছি। প্রতিটি পাওয়ার প্ল্যান্টে টারবাইন আছে শুধুমাত্র সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট ছাড়া। ষ্টীম টারবাইন, ওয়াইন্ড টারবাইন, ওয়াটার টারবাইন ইত্যাদি বিভিন্ন পাওয়ার প্ল্যান্টে শক্তি উৎপাদনে ব্যবহিত হয়ে থাকে। আর এসবের ফলিত প্রয়োগই মূলত গ্যাস টারবাইন।

গ্যাস টারবাইন ইঞ্জিনে ব্লেডকে ঘোরানোর জন্য উচ্চ চাপ যুক্ত গ্যাস ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

গ্যাস টারবাইনের গঠন ও কার্যপ্রণালী

গ্যাস টারবাইনের গঠনপ্রণালী খুবই সাধারণ।

কম্প্রেসরঃ

এটি অন্তর্গ্রহণ মুখ দিয়ে আসা বায়ুকে উচ্চ চাপে সংকোচিত করে।

দহন কক্ষঃ

এটা মূলত ফুয়েলকে জ্বালায় এবং উচ্চ চাপ ও উচ্চ গতি সম্পন্ন গ্যাস উৎপন্ন করে।

টারবাইনঃ

দহন কক্ষ থেকে প্রবাহিত অনেক বেশি চাপ ও অনেক উচ্চ গতি সম্পন্ন গ্যাস থেকে শক্তি গ্রহণ করে।

উপরের চিত্র আমরা অক্ষিয় প্রবাহ গ্যাস টারবাইন দেখতে পাচ্ছি যা সাধারণত হেলিকপ্টারের রোটরে ব্যবহিত হয়ে থাকে। এরা কিভাবে কাজ করে তা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা যাক।

কম্প্রেসরঃ

এখানে কম্প্রেসর কোণাকৃতি একটি সিলিন্ডার এবং এর উপরে একসাথে ছোট ছোট ফ্যান ব্লেড লাগানো আছে। এই ইঞ্জিনে কম্প্রেসর বায়ু গ্রহণ করে। বায়ু যখন কম্প্রেসরে প্রবেশ করবে তখন এর চাপ অনেক কম থাকবে আর পরবর্তীতে কম্প্রেসরের মাধ্যমে বায়ুকে সঙ্কোচিত করার পর এর চাপ প্রায় ৩০ গুণ বেড়ে যাবে।

দহন কক্ষঃ

উচ্চ চাপ যুক্ত বায়ু দহন কক্ষে প্রবেশ করে থাকে। এরপরে ফুয়েল ইঞ্জেক্টরের বেল্ট(বলয়) থেকে স্থিরভাবে ফুয়েল ইনজেক্ট করা হয়। ফুয়েল হিসেবে কেরোসিন, জেট-ফুয়েল, প্রোপেন অথবা অন্য প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার করা হয়। দহন কক্ষের ভিতরে উচ্চ চাপ যুক্ত বায়ু প্রায় ১০০ মাইল/ঘন্টা বেগে এবং এই পরিবেশে দহন সম্পন্ন করতে হয় যা করা প্রায় অসম্ভব। এই সমস্যা সমাধানের জন্য দহন কক্ষে শিখা ধারক অথবা ক্যান ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ক্যান সাধারণত ফাঁপা থাকে, ছিদ্রযুক্ত ভারী ধাতব অংশ। ইঞ্জিক্টর ক্যানের ডানপাশে থাকে এবং সংকোচিত বায়ু ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ করে থাকে।

প্রশ্নঃ বয়লার কি?

উত্তরঃ বয়লার স্টিলের তৈরি একটি বদ্ধ ভ্যাসেল। এটি প্রেসার কুকারের মতো (উচ্চ চাপে বদ্ধ অবস্থায় থাকা পানিকে উচ্চ তাপমাত্রায় বাষ্পীভূতকরণ), তবে আরও উচ্চ চাপে কাজ করে। এর কাজ হল জ্বালানি বা বিদ্যুৎ বা পারমাণবিক শক্তি থেকে প্রাপ্ত তাপকে তরলে (সাধারণত পানি) স্থানান্তর করা। নির্দিষ্ট চাপে তরলটি উত্তপ্ত হয় অথবা বাষ্পীভূত হয় অথবা বাষ্প আরও উত্তপ্ত হয় অথবা উল্লিখিত একাধিক প্রক্রিয়ার সংমিশ্রণও হতে পারে।
বয়লার বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়, যেমনঃ

  • আবাসিক বা বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের জন্য গরম পানি প্রস্তুত করতে,
  • ষ্টীম ইঞ্জিন বা টারবাইনে শক্তি উৎপাদন করতে,
  • টেক্সটাইল শিল্পে সাইজিং এবং ব্লিচিংয়ের জন্য,
  • বাণিজ্যিকভাবে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে,
  • চিনির কারখানায়, কেমিক্যাল শিল্পে, সুতার মিলে ইত্যাদি।

বয়লারের কম্পনেন্টসমূহ

  • শেল- বাঁকানো ষ্টীল প্লেট ব্যবহার করে, রিভেট বা ওয়েল্ডিং এর মাধ্যমে সিলিন্ডার তৈরি করা হয়। সিলিন্ডারের ২পাশে এন্ড প্লেট থাকে।
  • বার্নার- এখানে, বাতাসের সাথে ফুয়েল মিশ্রিত হয়। ফুয়েল হিসাবে প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল, কয়লা ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।
  • কম্বাশন চেম্বার/ফায়ার বক্স/ফার্নেস- কম্বাশনের ফলে উৎপন্ন তাপে হিট এক্সচেঞ্জার গরম হতে থাকে।
  • হিট এক্সচেঞ্জার- এর মাধ্যমে বার্নারের সাথে পানির সরাসরি সংযোগ ছাড়াই পানিতে তাপ সরবারহ করা হয়।
  • সাপ্লাই লাইন- এই পাইপগুলোর মাধ্যমে গরম পানি বা ষ্টীম ডিস্ট্রিবিউশন পয়েন্টগুলোতে সরবারহ করা হয়।
  • রিটার্ন লাইন- যখন পানি ঠাণ্ডা হয়ে যায় অথবা ষ্টীম ঠাণ্ডা হয়ে পানিতে রূপান্তরিত হয়, তখন রিটার্ন লাইন রিহিটের জন্য তাদের বয়লারে নিয়ে যায়।
  • গ্রেট- এটি ফার্নেসের প্ল্যাটফর্ম, যার উপর ফুয়েল পোড়ানো হয়। এটি কাস্ট আইরনের দণ্ড পৃথক পৃথক করে রেখে প্রস্তুত করা হয়, যেন পর্যাপ্ত বায়ু তাদের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
  • অ্যাঁশ পিট- এখানে, ছাই জমা হয়। ছাইগুলি আগুনের নিচে রাখা বাক্সে পড়ে।
  • ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর- বয়লারের ভিতরে পানির লেভেল নির্দেশ করে।
  • সেফটি ভাল্ভ- বয়লারের ভিতর ষ্টীমের অতিরিক্ত চাপের কারণে হওয়া বিস্ফোরণ প্রতিরোধ করে। সেফটি ভাল্ভ ৪ ধরনের হয়ঃ
    • লিভার সেফটি ভাল্ভ
    • ডেড ওয়েট সেফটি ভাল্ভ
    • হাই ষ্টীম অ্যান্ড লো ওয়াটার সেফটি ভাল্ভ
    • স্প্রিং লোডেড সেফটি ভাল্ভ
  • প্রেশার গজ- বয়লারের ভিতরের ষ্টীমের চাপ পরিমাপ করে। বয়লারে সাধারণত বাউন্ডারি টাইপ প্রেশার গজ ব্যবহার করা হয়।
  • ফিউসিবল প্লাগ- বয়লারের পানির স্তর যখন অনিরাপদ সীমাতে চলে যায়, তখন এটি চুল্লীতে আগুন নিভানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • ফীড চেক ভাল্ভ- এটি ১টি নন-রিটার্ন ভাল্ভ। এটি শুধুমাত্র বয়লারের দিকে ফ্লুয়িড প্রবাহিত হতে দেয়। এই ভাল্ভ দিয়ে বয়লারে উচ্চ চাপে পানি সরবারহ করা হয়।
  • ষ্টীম স্টপ ভাল্ভ- এটি বয়লারের বাইরে ষ্টীম সরবারহ নিয়ন্ত্রণ করে।

নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য এগুলো বয়লারে লাগানো হয়।
 

প্রশ্নঃ বয়লার কত প্রকার কি কি?  প্রত্যেক প্রকার বয়লারের বর্ণনা

উত্তরঃ টিউবের ভেতরের উপাদানের উপর ভিত্তি করে বয়লার ২প্রকার

১। ফায়ার টিউব বয়লারঃ কম্বাশন চেম্বারে তৈরি হওয়া ফ্লেম ও গ্যাস টিউবের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়, যা চারপাশের পানিকে গরম করে। টিউবের ওয়ালের মধ্য দিয়ে তাপ সঞ্চালিত হয়ে পানিতে আসে। উদাহরণঃ কোকরান বয়লার, লোকোমোটিভ বয়লার, ভেলকন বয়লার ইত্যাদি।

সুবিধাঃ

  • অপারেটিং খরচ কম।
  • ফিড ওয়াটার এর পরিশোধন দরকার নেই।
  • বিস্ফোরণের সম্ভাবনা কম।

অসুবিধাঃ

  • কর্মদক্ষতা কম (৭৫% পর্যন্ত)।
  • বড় প্ল্যান্ট এর জন্য উপযুক্ত না।
  • ষ্টীম তৈরির হার তুলনামূলক কম (ঘণ্টায় ৯টন পর্যন্ত)।
  • তৈরিকৃত ষ্টীমের চাপ তুলনামূলক কম (২৪.৫বার পর্যন্ত)।

fire tube boiler

২। ওয়াটার টিউব বয়লারঃ পানি টিউবের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই টিউবগুলো কম্বাশনের ফলে উৎপন্ন শিখা ও গ্যাস দ্বারা ঘেরা থাকে।উদাহরণঃ ব্যাবকক ও উইলকক্স বয়লার, লা মন্ট বয়লার, বেন্সন বয়লার ইত্যাদি

সুবিধাঃ

  • কর্মদক্ষতা বেশি (৯০% পর্যন্ত)।
  • বড় প্ল্যান্ট এর জন্য উপযুক্ত।
  • ষ্টীম তৈরির হার তুলনামূলক বেশি (ঘণ্টায় ৪৫০টন পর্যন্ত)।
  • তৈরিকৃত ষ্টীমের চাপ তুলনামূলক বেশি (১৬৫বার পর্যন্ত)।

অসুবিধাঃ

  • অপারেটিং খরচ বেশি।
  • ফিড ওয়াটার এর পরিশোধন দরকার আছে।
  • বিস্ফোরণের সম্ভাবনা বেশি।

water tube boiler

 

আবার, টিউবের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে বয়লার ২ধরনের

১। সিঙ্গেল টিউব বয়লার (১টি মাত্র ফায়ার বা ওয়াটার টিউব থাকে। উদাহরণঃ সিম্পল ভারটিক্যাল বয়লার এবং করনিশ বয়লার)
২। মাল্টিপল টিউব বয়লার (একাধিক ফায়ার বা ওয়াটার টিউব থাকে। উদাহরণঃ কোকরান বয়লার, লোকোমোটিভ বয়লার ইত্যাদি)
 

ফার্নেসের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে বয়লার ২প্রকার

১। ইন্টারনালি ফায়ার্ড বয়লার (ফার্নেস বয়লারের শেলের ভিতরে থাকে। সাধারণত ফায়ার টিউব বয়লারগুলো এই ধরনের হয়।)
২। এক্সটারনালি ফায়ার্ড বয়লার (ফার্নেস বয়লারের শেলের বাইরে থাকে। সকল ওয়াটার টিউব বয়লার এই ধরনের হয়।)
 

শেলের অক্ষের উপর ভিত্তি করে বয়লার আবার ২ধরনের হয়

১। ভারটিক্যাল বয়লারঃ (শেলের অক্ষ ভারটিক্যাল হয়। উদাহরণঃ সিম্পল ভারটিক্যাল বয়লার এবং কোকরান বয়লার)
২। হরাইযোনটাল বয়লারঃ (শেলের অক্ষ হরাইযোনটাল হয়। উদাহরণঃ লোকোমোটিভ বয়লার, ব্যাবকক ও উইলকক্স বয়লার ইত্যাদি)
 

পানি প্রবাহের ধরনের উপর ভিত্তি করে বয়লার ২প্রকার

১। ন্যাচারাল সারকুলেশন বয়লার (বাহ্যিক সহায়তা ছাড়া, প্রাকৃতিক পানির প্রবাহকেই ব্যবহার করা হয়।)
২। ফোর্সড সারকুলেশন বয়লার (পাম্পের সাহায্যে উচ্চ চাপে পানি প্রবাহ করা হয়)।
 

মুভ্যাবিলিটির উপর ভিত্তি করে বয়লার ২প্রকার হয়

১। ষ্টেশনারী বয়লার (পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং শিল্পকারখানায় ব্যবহার করা হয়।)
২। মোবাইল বয়লার (যানবাহনে ব্যবহার করা হয়, যেমনঃ মেরিন বয়লার, লোকোমোটিভ বয়লার)

প্রশ্নঃ বয়লার মাউন্টিংস বলতে কি বুঝ? পাঁচটি বয়লার মাউন্টিংস এর নাম লিখ।

উত্তরঃ বয়লার মাউন্টিংস:

বয়লার মাউন্টিংস হচ্ছে বয়লারের আবশ্যকীয় সরঞ্জাম যা ছাড়া বয়লার নিরাপদে ও সুষ্ঠভাবে কাজ করতে পারে না!

৫টি বয়লার মাউন্টিংসের নাম:-

১। সেফটি ভালবস(Safety valves)।

২। স্টপ ভালবস(stop valves)।

৩। ফিড চেক ভালবস(Feed check valves)।

৪। প্রেশার গেজ(pressure gauge)।

৫। ওয়াটার লেভেল ইন্ডিকেটর

প্রশ্নঃ বয়লার এ্যাকসোসরিজ বলতে কি বুঝ? পাঁচটি বয়লার এ্যাকসোসরিজ এর নাম লিখ।

উত্তরঃ বয়লার এক্সেসরিজ:

বয়লার এক্সেসরিজ হচ্ছে এমন কিছু ডিভাইস যা বয়লারের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বয়লারের সাথে যুক্ত করা যায়!

৫টি বয়লার এক্সেসরিজের নাম:

১। সুপার হিটার(Super Heater)।

২। এয়ার প্রি হিটার(Air pre-heater)।

৩। ড্রাফট(Draft)।

৪। ফিড পাম্প(Feed Pump)।

৫। ইকোনোমাইজার(Economizer)।

প্রশ্নঃ সেফটি ভাল্ব কাকে বলে? বয়লারে সেফটি ভাল্ব কেন ব্যবহার করা হয়? সেফটি ভাল্ব কত প্রকার ও কি কি?

উত্তরঃ সেফটি ভাল্ব:

বয়লারের মধ্যে ষ্টীমের অতিরিক্ত চাপকে যে ভাল্বের সাহায্যে বের করা হয় তাকে সেফটি ভাল্ব বলে।

এটা স্বংক্রিয়ভাবে অতিরিক্ত চাপকে বের করে দেয় এবং বয়লারকে নিরাপদ সীমার মধ্যে কার্যকর রাখে। বয়লারের নিরাপত্তার জন্য দুটি সেফটি ভাল্ব রাখা হয় যাতে একটি নষ্ট হলে অপরটি দ্বারা সাময়িক ভাবে কাজ চালানো যায়।

সেফটি ভাল্ব চার ধরনের হতে পারে। যথা –

১. লিভার সেফটি ভাল্ব

২. ডেড ওয়েট সেফটি ভাল্ব

৩. হাই ষ্টীম এন্ড লো ওয়াটার সেফটি ভাল্ব

৪. স্প্রীং লোডেড সেফটি ভাল্ব

প্রশ্নঃ ইকোনোমাইজার কি? ইকোনোমাইজার ব্যবহারের সুবিধা কি?

উত্তরঃ ইকোনোমাইজার:-

পরিত্যক্ত ফ্লু গ্যাসের তাপকে কাজে লাগানোর জন্য ইকোনোমাইজার ব্যবহার করা হয়। ইকোনোমাইজার দ্বারা পরিত্যক্ত ফ্লু গ্যাসের তাপ ব্যবহার করে ফিড ওয়াটার কে উত্তপ্ত করা হয়।

ইকোনোমাইজার ব্যবহারের সুবিধা:-

১. ১৫% থেকে ২০% জ্বালানী হ্রাস পায়।

২. বয়লারের ষ্টীম উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

৩. ইকোনোমাইজার ব্যবহারের ফলে বয়লার টিউবে স্কেল তৈরি হতে পারেনা।

প্রশ্নঃ ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট বলতে কি বুঝতে? ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট এর উদ্দেশ্য কি?

উত্তরঃ ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট:-

বয়লারে পানি প্রবেশ করানোর পূর্বে এর বিভিন্ন অপদ্রব্য দূর করে পানিকে পরিশোধন করাকে ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট বলে।

ফিড ওয়াটার ট্রিটমেন্ট এর উদ্দেশ্য:-

১. পানিকে উত্তপ্ত করার ফলে জ্বালানী সাশ্রয় হয়।

২. স্কেল উৎপন্নকারী লবণসমূহকে বয়লারে প্রবেশের পূর্বেই ওয়াটার থেকে পৃথক করা।

৩. বয়লারের ধাতব অংশ ক্ষয়কারী পানিতে দ্রবীভূত গ্যাস দূর করা।

প্রশ্নঃ এয়ার প্রি হিটার কি? এয়ার প্রি হিটার ব্যবহারের উদ্দেশ্য কি?

উত্তর: এয়ার প্রি হিটার:

বয়লারের দহন কার্যে যে বাতাস ব্যবহৃত হয় তাকে তাকে বয়লারে প্রবেশ করানোর পূর্বে যার সাহায্যে উত্তপ্ত করা হয় তাকে এয়ার প্রি হিটার বলে।

বয়লারের এ পরিত্যক্ত উত্তপ্ত ফ্লু গ্যাসকে বাতাস উত্তপ্ত করার কাজে ব্যবহার করা হয়।

এয়ার প্রি হিটার ব্যবহারের উদ্দেশ্য :

১. উত্তপ্ত বাতাস প্রবেশ করানো হলে ফার্নেসের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, এর ফলে পানিতে বেশি পরিমান তাপ সঞ্চালন করা যায় এবং প্রতি কেজিতে জ্বালানীর বাষ্পায়ন ক্ষমতা বেড়ে যায়।

২. ৩৫°-৪০° তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বয়লারের দক্ষতা ২% বৃদ্ধি পায়।

৩. এটা নিম্ন মানের জ্বালানীকে জ্বলনে সহায়তা করে।

প্রশ্নঃ সুপার হিটার কি? ইহা ব্যবহারের উদ্দেশ্য গুলি লিখ।

উত্তরঃ সুপার হিটার:

বয়লারে যে বাষ্প তৈরি হয় তা আর্দ্র অবস্থায় থাকে। আর্দ্র বাষ্পকে তাপের সাহায্যে সম্পৃক্ত বাষ্পে রুপান্তরিত করতে বয়লারের সাথে যে ডিভাইস ব্যবহার করা হয় তাকে সুপার হিটার বলে।

সুপার হিটার ব্যবহারের উদ্দেশ্য:

১. সুপার হিটেড ষ্টীমে অপেক্ষাকৃত বেশি তাপ থাকে তাই বেশি কাজ পাওয়া যায়।

২. সুপার হিটার ব্যবহারে প্লান্টের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।

৩. সুপার হিটার ব্যবহারে টারবাইন ব্লেডের ক্ষয় কম হয়।

প্রশ্নঃ বয়লার কেন বিস্ফোরিত হয়?

উত্তরঃ বয়লারে একটি সেফটি ভাল্ব থাকে, যা একটি নির্দিষ্ট চাপে বা প্রেসারে সেট করা থাকে। বয়লারের অবস্থা অনুযায়ী ওই চাপ নির্ধারণ করা হয়। প্রেসার এর চেয়ে বেশি হলে সেফটি ভাল্ব স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হওয়ার কথা। প্রেসার বেশি হওয়ার পরেও সেফটি ভাল্ব ওপেন না হলে বয়লার বিস্ফোরিত হয়।

প্রশ্নঃ কনডেন্সার কি?

উত্তরঃ স্টিম টারবাইন কে ঘুরিয়ে যখন বেড় হয় , তখন এই এগজস্ট স্টিমকে ঠান্ডা করার কাজে কনডেন্সার ব্যবহার করা হয় । এটি মাধ্যমে ঠান্ডা পানি স্টিম এর সংস্পর্শে ঘনীভূত হয়ে করে পানিতে পরিনত করা হয়।অর্থাৎ স্টিম কে পানি করে পুনরায় ফিড ওয়াটার হিসাবে বয়লারে সরবারহ করা হয় । একে আমরা হীট একচেঞ্জারও বলে থাকি।

প্রশ্নঃ পাওয়ার প্লান্টে ওভারহোলিং কত প্রকার ও কি কি ? 

উত্তরঃপাওয়ার প্লান্টে ওভারহোলিং চার প্রকারঃ  যথা ১/হেড ওভারহোলিং। ২/ব্লগ ওভারহোলিং। ৩/ইঞ্জিন সাহায্যকারী যন্ত্রাংশ ওভারহোলিং।৪/পুনরায় সংযোগ ।।

কার্যপদ্ধতি ::আমরা প্রথমে ইঞ্জিন হেড ওভারহোলিং নিয়ে আলোচনা করব। ১/প্রথমে ইঞ্জিনটি বন্ধ রেখে পরিপূর্ণ ঠান্ডা করে নিতে হবে ।এবং বিশেষ করে গ্যাস লাইন ,পানির লাইন ,এবং ব্যাটারির লাইন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে ।অথবা প্রয়োজন অনুযায়ী আলাদা করতে হবে। ইঞ্জিন থেকে পানি এবং লুবওয়েল পরিপূর্ণ ড্রেন আপ করতে হবে।

২/ইঞ্জিন থেকে সাহায্যকারী যন্ত্রাংশ আলাদা করতে হবে. ইন্টার কলার , বা আফটার কুলার ,জ্যাকেট ওয়াটার পাইপ, অয়েল কুলার, একজাস্ট ইনলেট মেনিফোল্ড, একচুয়াটর। এবং বিভিন্ন সেন্সরের লাইন সমূহ এবং ইঞ্জেক্টর বা স্পার্ক প্লাগ।

৩/তারপর সঠিক মাপের টুলস দিয়ে ইঞ্জিন হেড কভার খুলতে হবে। প্রথমে চোখে দেখে ইঞ্জিনের যন্ত্রাংশের ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। তারপর প্রয়োজন হলে কম্প্রেশন টেস্ট করা যেতে পারে। কম্প্রেশন টেস্ট নিয়ে আমার এই গ্রুপে একটি পোস্ট করা আছে সেহেতু কম্প্রেশন টেস্ট কিভাবে করতে হবে সেটা আলোচনা করলাম না। ইঞ্জিন থেকে ইঞ্জিন হেট খুলে আলাদা করলাম। হেড এ পুরা গ্যাসকেট এবং কার্বন লেগে থাকবে তা চেছে ভালো করে পরিষ্কার করতে হবে। লক্ষ্য করে দেখতে হবে হেডের কোথাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা। এবং বাল্ব এবং বাল্ব সিট ক্ষয় হয়েছে কিনা তা পরীক্ষার জন্য একটি সহজ পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে যথা ইনটেক এবং একজাস্ট মেনিফল্ট দিয়ে পানি দিতে হবে এবং হাতে চাপ দিতে হবে এত পর দেখতে হবে বাল্ব এর দিক দিয়ে পানি লিকেজ হয় কিনা। যেহেতু ওভারহোলিং করা হচ্ছে সেহেতু কিছু পরিমাণ পানি লিকেজ হবেই। এর থেকে বোঝা গেল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।ভালব এবং সিট । তাই ইঞ্জিন হেড লেদে পাঠিয়ে দিতে হবে। যদি নিজেরাই করা যায় তাহলে ভালো ।ভালব ফেস এবং বাল্ব সিট ৪০/ ৪৫ ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে গ্রাইন্ডিং বিট এবং মেশিনের মাধ্যমে করতে হবে। করা হলে তখন আবার ব্যবহার করা যাবে। তারপর ভালভ স্প্রিং ,এবং ভালব গাইড খুলে ফেলতে হবে। দেখতে হবে ভালব গাইটে অথবা বাল্ব স্ট্যাম্পে কোন ক্ষতিগ্রস্ত আছে কিনা। বিশেষ করে ভালব গাইড বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাই এটি পরিবর্তন করতে হবে। এবং ভালব স্প্রিং টেনশন কমে গিয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে। পুশ রড বেঁকে গেছে কিনা বা ক্ষয় হয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে । ভালব অ্যাসেম্বলি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।যথারীতি পরীক্ষার মাধ্যমে কিছু পার্টস পরিবর্তন এবং মেরামত যোগ্য বলে গণ্য হবে।।।।

ভুলত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন । কিছু বাদ পড়লে তা ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন।এতে আমরা ওভারহোলিং করা শিখতে না পারলাম তবে ওভারহোলিং সম্পর্কে কিছু প্রাথমিক ধারণা তো পেলাম। 

উইকিপিডিয়া ও ইন্টারনেট হতে তথ্য, ছবি সংগৃহীত

মেইন ডিস্ট্রিবিউশন(এমডিবি) বোর্ড, সাব-ডিস্ট্রিবিউশন(এসডিবি) বোর্ড ও ডিস্ট্রিবিউশন(ডিবি) বোর্ড বলতে কি বুঝ, হাউজ ওয়ারিং এর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান

 মেইন ডিস্ট্রিবিউশন(এমডিবি) বোর্ড, সাব-ডিস্ট্রিবিউশন(এসডিবি) বোর্ড ও ডিস্ট্রিবিউশন(ডিবি) বোর্ড বলতে কি বুঝ, হাউজ ওয়ারিং এর গুরুত্বপূর্ণ উপাদান

পাওয়ার প্ল্যান্ট, সাব-স্টেশন, কারখানা বা বাসাবাড়ির যে কোন ইলেকট্রিক্যাল লাইন প্রথমে MDB, SDB বা DB থেকে লোডে আসে, তাই  ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ড সম্পর্কে প্রত্যেক ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারকে জানতে হয়। 

  • মেইন ডিস্ট্রিবিউশন(এমডিবি) বোর্ডঃ পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে সাব-স্টেশনে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ক্ষেত্রে বা কারখানার বিভিন্ন সেক্টরে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ক্ষেত্রে যে ডিস্ট্রিবিউশন(ডিবি) বোর্ড ব্যবহার করা হয় তাকে মেইন ডিস্ট্রিবিউশন(এমডিবি) বোর্ড বলে। 
  • সাব-ডিস্ট্রিবিউশন(এসডিবি) বোর্ডঃ সাব-স্টেশন থেকে বাসাবাড়িতে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ক্ষেত্রে বা অনেক সময় কারখানার বিভিন্ন সেক্টরে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ক্ষেত্রে যে ডিস্ট্রিবিউশন(ডিবি) বোর্ড ব্যবহার করা হয় তাকে সাব-ডিস্ট্রিবিউশন(এসডিবি) বোর্ড বলে। 
  • ডিস্ট্রিবিউশন(ডিবি) বোর্ডঃ বাসাবাড়িতে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের ক্ষেত্রে যে বোর্ড ব্যবহার করা হয় তাকে ডিস্ট্রিবিউশন(ডিবি) বোর্ড বলে।  

একটি ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ড এর কভারে থাকেঃ 

  1. লাল(Red), হলুদ(Yeallo) ও নীল(Blue) রং এর তিনটি Indicator
  2. Digital Electronics type Energy Meter
  3. Current Selector Switch 
  4. Digital Volt Meter 
  5. Voltage Selector Switch 
  6. ON Push Switch
  7. OFF Push Switch 

  •  লাল(Red), হলুদ(Yeallo) ও নীল(Blue) রং এর তিনটি Indicator এর মাধ্যমে তিনটি ফেইজ সহজে চিনা যায়। 
  • Digital Electronics type Energy Meterঃ এর মাধ্যমে তিনটি ফেইজ এর কারেন্ট ও ভোল্টেজ দেখা যায়। এছাড়া এতে বিভিন্ন Program সেট করে দেওয়া হয় যাতে অতি সহজে নিদিষ্ট মানের বিদ্যুৎ বিতরণ করতে পারে। এছাড়া কারেন্ট ট্রান্সফরমার(CT) ও পটেনশিয়াল ট্রান্সফরমার(PT) এর কানেকশন এর মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। 
  • Current Selector Switchঃ এর মধ্যে তিনটি ফেইজ এর কারেন্ট মাপার জন্য তিনটি Option থাকে 1, 2 & 3. এবং একটি OFF Option থাকে। যে কোন একটি ফেইজ সিলেক্ট করলেই Digital Electronics type Energy Meter এর মাধ্যমে  উক্ত ফেইজ এর কারেন্টের মান দেখা যায়। 
  • Digital Volt Meter ঃ এর মাধ্যমে বিভিন্ন ফেইজ এর শুধু ভোল্টেজ দেখা যায়। 
  • Voltage Selector Switch ঃ এর মধ্যে তিনটি ফেইজ এর ভোল্টেজ মাপার জন্য ছয়টি Option থাকে RN(Red-Neutral), YN(Yeallow-Neutral), BN(Blue-Neutral), RY(Red-Yeallow), YR(Yeallow-Red), BR(Blue-Red) এবং একটি OFF Option থাকে। RN(Red-Neutral), YN(Yeallow-Neutral), BN(Blue-Neutral) এর মধ্যদিয়ে ২২০-২৩০ ভোল্ট প্রবাহিত হয় এবং RY(Red-Yeallow), YR(Yeallow-Red), BR(Blue-Red) এর মধ্যদিয়ে ৩৮০-৪০০ ভোল্ট প্রবাহিত হয়। যে কোন একটি Option সিলেক্ট করলেই Digital Volt Meter এর মাধ্যমে  উক্ত ফেইজ এর ভোল্টেজের মান দেখা যায়। 
  • ON Push Switchঃ ইহা নীল(Blue) রং এর হয়। এটি Push করার মাধ্যমে System টি ON হয়। 
  • OFF Push Switch ঃ ইহা লাল(Red) রং এর হয়। এটি Push করার মাধ্যমে System টি OFF হয়। 

একটি ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ড এর সেফটি কভারের ভিতরে থাকেঃ

  1. Cooling Fan
  2. Thermistar
  3. MCCB = Molded Case Circuit Breaker 
  4. MC = Magnetic Contractor 
  5. Tharmal Overload Relay Protection
  6. Busbar
  7. Circuit Breaker 
  8. Current Transformer(CT)
  9. Potential Transformer(PT)

  • Cooling Fan: বাসবারের মধ্যদিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ড এর ভিতর গরম হয়ে যায়। তাই ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ড এর অভ্যন্তর ঠাণ্ডা রাখার জন্য Cooling Fan ব্যবহার করা হয়। 
  • Thermistarঃ এর মাধ্যমে ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ড এর ভিতরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন ও পরিমাপ করা যায়। Thermistar এ একটি তাপমাত্রা সেট করে দিতে হয়। সেট করা তাপমাত্রা থেকে বেশী তাপমাত্রা হলেই Autometically Cooling Fan ঘুরে ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ড এর ভিতরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে। এটি একটি সেন্সরের কাজও করে। 
  • MCCBঃ এটি একটি সার্কিট ব্রেকার। এর পূর্ণ নাম Molded Case Circuit Breaker. সাব-স্টেশন বা মিটার থেকে প্রথমেই বিদ্যুৎ MCCB তে প্রবেশ করে। এর Ampere Reading 50A বা তার থেকে বেশী রাখা উচিৎ। 
  • MCঃ এটি একটি Magnetic Contractor. MCCB থেকে বিদ্যুৎ Magnetic Contractor এ প্রবেশ করাতে হয়। 
  • Tharmal Overload Relay Protectionঃ Magnetic Contractor থেকে বিদ্যুৎ Tharmal Overload Relay Protection এ প্রবেশ করাতে হয়। 
  • Current Transformer(CT): প্রত্যেকটি ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ড এ সাধারণত তিনটি ফেইজ এর জন্য তিনটি Current Transformer(CT) থাকে। Tharmal Overload Relay Protection থেকে বিদ্যুৎ Current Transformer(CT) এ বেশ করাতে হয়। 
  • Busbarঃ একটি ডিস্ট্রিবিউশন বোর্ড এ ৫(পাচ) রকমের বাসবার থাকে। লাল(Red), হলুদ(Yeallo) ও নীল(Blue) রং এর তিনটি বাসবার এর মাধ্যমে তিনটি ফেইজ সংযোগ দেওয়া হয়। কাল(Black) রং এর বাসবার এর সাথে Neutral ও সবুজ(Green) রং এর বাসবার এর সাথে আর্থিং সংযোগ দেওয়া হয়। Current Transformer(CT) থেকে বিদ্যুৎ Busbar এ প্রবেশ করাতে হয়। 
  • Circuit Breaker: কারখানা বা বাসাবাড়িতে লোডের উপর বা সংযোগের উপর ভিত্তি করে Circuit Breaker লাগানো হয়। Busbar থেকে বিদ্যুৎ Circuit Breaker এ প্রবেশ করাতে হয়। Circuit Breaker থেকে বিদ্যুৎ বিভিন্ন স্থানের লোডে চলে যায়। 
  • Potential Transformer(PT)ঃ এটি সাধারণত MDB ও SDB তে ব্যবহার করা হয় বিভব পার্থক্য বা ভোল্টেজ মাপার জন্য।  
  •  

সাম্প্রতিক পোস্ট সমূহ

Recent Posts Widget